বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, চলতি নভেম্বর মাসে পাঁচটি রাষ্ট্রায়ত্ত, ১৪টি বেসরকারি এবং চারটি বিদেশি ব্যাংক তাদের বিভিন্ন আমানত স্কিমের সুদ হার কমিয়েছে।
ব্যাংক কর্মকর্তারা বলছেন, ঋণের চাহিদা কম হওয়ায় ব্যাংকগুলোতে বিনিয়োগযোগ্য তহবিল জমে থাকছে। বর্তমানে ব্যাংকগুলোতে প্রায় ৩০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগযোগ্য তহবিল অলস পড়ে আছে।
বিনিয়োগ করতে না পারলেও আমানত হিসাবে সংগ্রহ করা টাকার জন্য ঠিকই সুদ দিয়ে যেতে হচ্ছে ব্যাংকগুলোকে। আর ভর্তুকি দিয়ে কাজটি করতে হচ্ছে বলে ঋণের সুদ হার কমানো যাচ্ছে না।
বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, অক্টোবর মাস শেষে বেসরকারি খাতে ঋণের প্রবৃদ্ধি ১০ শতাংশের কাছাকাছি। অথচ মুদ্রানীতিতে এর পরিমাণ ১৫ শতাংশ হবে বলে ধরা হয়েছিল।
এজন্য ব্যাংকগুলো এই মুহূর্তে নতুন আমানত সংগ্রহে খুব বেশি আগ্রহী নয় বলে ব্যাংক কর্মকর্তারা জানান।
ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহীদের সংগঠন এবিবির ভাইস চেয়ারম্যান ও পূবালী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হেলাল আহমদ চৌধুরী বলেন, “ব্যাংকগুলোতে জমে থাকা তহবিল আমানতের সুদ হার কমার অন্যতম কারণ। এছাড়া কম সুদে ঋণ বিতরণের জন্য ব্যাংকগুলোর ওপর চাপ আছে।
আমরা সে চেষ্টাও করছি। এজন্য আমানতের সুদ হার কমছে। ”
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ তথ্য অনুযায়ী, সোনালী, জনতা, অগ্রণী, বিডিবিএল, কৃষি ব্যাংক, এবি ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ডাচ-বাংলা ব্যাংক, এক্সিম ব্যাংক, মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট, ন্যাশনাল ব্যাংক, এনসিসি ব্যাংক, এনআরবি ব্যাংক লিমিটেড, প্রিমিয়ার ব্যাংক, শাহজালাল ব্যাংক, ইবিএল, এসআইবিএল, সাউথ ইস্ট, দ্যা সিটি ব্যাংক, সিটি এনএ, কমার্শিয়াল ব্যাংক অব সিলন, স্টেট ব্যাংক অব ইন্ডিয়া ও স্ট্যান্টার্ড চার্টার্ড ব্যাংক নভেম্বর মাসে বিভিন্ন আমানত স্কিমের সুদ হার কমিয়েছে।
এসব ব্যাংক আমানতে দশমিক ২৫ শতাংশ থেকে ১ শতাংশ পর্যন্ত সুদ কমিয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বিবরণীতে।
বর্তমানে দেশি-বিদেশি ব্যাংকগুলো আমানতের বিভিন্ন স্কিমে ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দেয়।
সোনালী ব্যাংক মেয়াদী আমানতে দশমিক ৫০ শতাংশ পর্যন্ত সুদ কমিয়েছে। নতুন এই সুদ হার ২০ নভেম্বর থেকে কার্যকর করেছে ব্যাংকটি।
জনতা ব্যাংক ও অগ্রণী ব্যাংকও মেয়াদী আমানতে একই হারে সুদ কমিয়েছে, যা আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে কার্যকর হবে। ।
বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকগুলো ইতিমধ্যে নতুন সুদ হার কার্যকর করেছে।
ইস্টার্ন ব্যাংক লিমিটেডের (ইবিল) ইবিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলী রেজা ইফতেখার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমানতের সুদ হার কমার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। ব্যাংকগুলোতে অতিরিক্ত তারল্য এর অন্যতম কারণ। এছাড়া ব্যাংকগুলো চাইছে কস্ট অব ফান্ড কমাতে, যাতে ঋণের সুদ হারও কমানো যায়। ”
ইবিএল তাদের নতুন সুদ হার ২২ নভেম্বর থেকে কার্যকর করেছে বলেও আলী রেজা ইফতেখার জানান।
বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রধান অর্থনীতিবিদ হাসান জামানও একই ধরনের মতামত দেন।
এর পাশাপাশি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “সম্প্রতি মূল্যস্ফীতি কমেছে। ব্যাংকগুলো মূল্যস্ফীতির সঙ্গে সমন্বয় করে নতুন হার নির্ধারণের সুযোগ নিচ্ছে। ”
বর্তমানে দেশি বিদেশি মিলিয়ে মোট ৫৬টি ব্যাংক দেশে কাজ করছে। এর আগে অক্টোবর মাসেও ২০টির বেশি ব্যাংক আমানতের সুদ হার কমায়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।