আবারও বিক্রি হচ্ছে আইসিবি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেড। ব্যাংকটির ব্যবস্থাপনা কর্তৃত্বসহ সিংহভাগ শেয়ার যা- যেখানে যে অবস্থায় আছে (এজ-ইজ হোয়ার-ইজ) সেভাবেই বিক্রি হবে। সরকারি প্রতিষ্ঠান ইনভেস্টমেন্ট করপোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি) এটি কেনার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
বর্তমানে ব্যাংকটির সিংহভাগ শেয়ারের মালিক (৫২ দশমিক ৭৬ শতাংশ) সুইজারল্যান্ডভিত্তিক মালয়েশিয়ান কোম্পানি আইসিবি ফাইনান্সিয়াল গ্রপ হোল্ডিং এজি। ওই শেয়ারগুলোই বিক্রি করে দিচ্ছে প্রতিষ্ঠানটি।
কয়েক দফা আলোচনার পর প্রতিটি শেয়ার আট টাকা মূল্যে বিক্রির ব্যাপারে রাজি হয়েছে বিক্রেতা কোম্পানি। বৃহস্পতিবার ঢাকা স্টক এঙ্চেঞ্জে ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের এই ব্যাংকটির প্রতিটি শেয়ারের দাম ছিল ৬ টাকা ৩০ পয়সা।
ব্যাংকটি ক্রয়ে আগ্রহী প্রতিষ্ঠান আইসিবি-এর চেয়ারম্যান ড. এস এম মাহফুজুর রহমান বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, কেনার ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের আগে অর্থ মন্ত্রণালয়, বাংলাদেশ ব্যাংক এবং পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির মতামত নেওয়া হবে। এ ছাড়া একটি স্বতন্ত্র অডিট কোম্পানি নিয়োগ করে ব্যাংকটির দায়-দেনা, আমানত-ঋণ পরিস্থিতিসহ এর পূর্ণাঙ্গ আর্থিক যোগ্যতা (ডিউ-ডেলিজেন্স) যাচাই করা হবে।
আর্থিক বিবরণী সন্তোষজনক মনে হলেই ব্যাংকটি কেনার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান মাহফুজুর রহমান।
জানা গেছে, গত ২২ আগস্ট আইসিবি-এর পরিচালনা পর্ষদের ৪৩০তম সভায় ব্যাংকটি কেনার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এরপর ১৯ সেপ্টেম্বর ব্যাংকটির বর্তমান মালিক আইসিবি ফাইনান্সিয়াল গ্রপ হোল্ডিং এজি বরাবর চিঠি লিখে কেনার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়। পরদিন ২০ সেপ্টেম্বর ব্যাংকটি বিক্রয়ে কিছু শর্ত দিয়ে আইসিবির কাছে ফিরতি চিঠি পাঠায় মালিক প্রতিষ্ঠান। শর্তগুলো ছিল : প্রতিটি শেয়ারের মূল্য আট টাকা নির্ধারিত থাকবে, যা ব্যাংকটির আর্থিক যোগ্যতা নিরূপণের পর হ্রাস করা যাবে না।
এ ছাড়া ব্যাংকটির আর্থিক যোগ্যতা স্বতন্ত্র অডিট কোম্পানির মাধ্যমে পর্যালোচনার আগেই ১০ শতাংশ অর্থ জামানত হিসেবে জমার শর্ত দেয় মালিক পক্ষ। তবে ওই শর্তে রাজি হয়নি সরকারি প্রতিষ্ঠান আইসিবি। আরও জানা গেছে, আইসিবি ইসলামী ব্যাংকের ৩টি সাবসিডিয়ারি প্রতিষ্ঠান এবং কৌশলগত অংশীদার ওরিয়ন ক্যাপিটাল লিমিটেডও ব্যাংকটি বিক্রির ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। এই প্রতিষ্ঠানগুলোর সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ক্রেতা প্রতিষ্ঠান আইসিবির এমডি ফায়েকুজ্জামানকে।
প্রসঙ্গত, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক লিমিটেডের আগের নাম ছিল ওরিয়েন্টাল ব্যাংক লিমিটেড।
ব্যাংকটি ব্যবসায়িক সংকটে পড়লে ২০০৭ সালে এটি পুনর্গঠনের দায়িত্ব নেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার পর ওরিয়েন্টাল ব্যাংক বিক্রির জন্য আন্তর্জাতিক প্রস্তাব আহ্বান করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। মালয়েশিয়াভিত্তিক কোম্পানি আইসিবি ফাইনান্সিয়াল গ্রপ হোল্ডিং এজি সর্বোচ্চ দাম হাঁকিয়ে ব্যাংকটির প্রায় ৫২ শতাংশ শেয়ার কিনে নেয়। ব্যাংকটির বেশিরভাগ শেয়ার কিনে নেওয়ায় এর ব্যবস্থাপনাগত দায়িত্বও তাদের অধিকারে চলে যায়। পরে ওরিয়েন্টাল ব্যাংকের নাম পরিবর্তন করে ক্রেতা প্রতিষ্ঠান নিজেদের নামের সঙ্গে মিলিয়ে ব্যাংকটির নতুন নাম রাখে আইসিবি ইসলামী ব্যাংক।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।