জালিমের ফাঁসি হোক, যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি হোক, রাজাকারদের ফাঁসি হোক
শরীয়ত অনুযায়ী মাযহাব পালন করা ফরয কিনা তা এক লাইনে লেখা সম্ভব নয়। দলীল সহ বিস্তারিত লিখা হলে সহজে বুঝা যাবে। তাই অনেকগুলো পর্ব হবে। সবগুলো পর্ব পড়ে মন্তব্য করবেন আশা করি।
১ম পর্বের পর....................
স্মরণীয় যে, আল্লাহ পাক-এর বিধান পালন করাই মূলতঃ মু’মিন ও মুসলমানের কাজ।
আল্লাহ পাক-এর বিধানকে পাওয়া রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মাধ্যম ছাড়া সম্ভব নয়। এই কারণে আল্লাহ পাক নিজেই রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দেয়া বিধানকে গ্রহণ করার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
আবার রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর দেয়া বিধান ছাহাবা ও মুজতাহিদ ইমামগণের মাধ্যম ছাড়া পাওয়া এবং সঠিকভাবে আমল করা সম্ভব নয়। কারণ এমনও কিছু বিষয় আছে যা ইসলামের প্রথম দিকে নিষিদ্ধ না থাকলেও তা পরবর্তীকালে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিষিদ্ধ করেছেন। যেমন- শরাব পান করা।
এমনি করে বহু বিষয় আছে যা প্রথমে করা নিষিদ্ধ না থাকলেও পরবর্তীকালে নিষিদ্ধ হয়ে যায়। সুতরাং প্রথম ও পরে কোন সময় কোন হুকুম হয়েছে এটা ছাহাবাগণের বর্ণনা ও তাঁদের আমলের মধ্যে পাওয়া যায়।
এ জন্য ইসলামের সঠিক বিধান হিসেবে উত্তমভাবে ছাহাবীগণের অনুসরণকারীদেরকে আল্লাহ পাক জান্নাতী মানুষ বলে ঘোষণা দিয়েছেন। ছাহাবীগণের থেকে সঠিক ইসলাম পাবার জন্য মুজতাহিদ ইমামগণের অনুসরণ করাটাই বিশেষ গুরুত্বের বিষয়। এর বহু কারণ রয়েছে।
তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য দু’টি বিষয় হচ্ছে-
১। ইসলামের পূর্বপর বিধান সঠিকভাবে নির্ধারণ ইমামগণই করেছেন।
২। ইসলামী বিধানের মান নির্ধারিত নিয়মে তথা ফরয, ওয়াজিব ও সুন্নত হিসেবে ইমামগণের মাধ্যমেই পাওয়া যায়। যা কুরআন শরীফের আয়াত ও রসূল পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাদীছ শরীফে স্পষ্টভাবে পাওয়া যায় না।
উদাহরণ স্বরূপ- নামাযের কোন কাজটা ফরয, কোনটা ওয়াজিব এবং কোনটি সুন্নাত এর বর্ণনা হাদীছ শরীফে সরাসরি বলা হয়নি। অথচ সকলেই জানে এবং মানে যে, সব কাজগুলো ফরয নয় অথবা সব কাজগুলো ওয়াজিব বা সুন্নত নয়।
সুতরাং ইসলামের পূর্বপর বিধানকে যেমন ছাহাবীগণের মাধ্যমে পাবার জন্য তাবিয়ীন এবং তাবি তাবিয়ীন তথা মুজতাহিদ ইমামগণের বর্ণনা থেকেই গ্রহণ করতে হবে। তদ্রুপভাবে ইসলামী বিধানের মান নির্ধারণ করে আমল করার জন্য মুজতাহিদ ইমামগণের অনুসরণ ব্যতীত দ্বিতীয় কোন পথ নেই।
ইমামে আ’যম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি তাবিয়ী ছিলেন।
ছাহাবাগণের দর্শন লাভ করে ইসলামের সর্ববিধ বিষয় শিক্ষা গ্রহণ করেন। ছাহাবা ছাড়া বিশিষ্ট তাবিয়ীনদের থেকেও ইসলামী বিধানের শিক্ষা লাভ করেন। মাযহাবের ইমামগণের মধ্যে একমাত্র তিনিই তাবিয়ী হওয়ার সৌভাগ্য অর্জন করেছিলেন।
পৃথিবীতে যদি অনুসন্ধান করা হয়, তবে দেখা যাবে যে, বর্তমানে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতই একমাত্র সঠিক মু’মিন ও মুসলমান। আল্লাহ পাক ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সঠিক ইসলামের উপর চলার যে নীতি নির্ধারণ করে দিয়েছেন সেটা আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের লোকেরা অনুসরণ করে চলেন।
ইসলামের নামে অন্য যারা পরিচয় দিচ্ছেন তারা আল্লাহ পাক ও উনার রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিধান গ্রহণ করছেনা। যেমন- কাদিয়ানী, বাহাই, খারিজী, রাফিজী, মুতাজিলা, লা-মাযহাবী, সালাফী ইত্যাদি বাহাত্তর ফিরক্বা।
উল্লেখ্য, ইসলামের শত্রুপক্ষ সর্বদাই মানুষকে পথভ্রষ্ট করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। কুরআন শরীফ ও নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার অস্তিত্বকে মিটিয়ে দেয়ার জন্য যেমন কাদিয়ানী সম্প্রদায় আপ্রাণ চেষ্টা চালাচ্ছে তদ্রুপভাবে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অস্তিত্ব মিটিয়ে দেয়ার জন্য এক শ্রেণীর লোক যথাসাধ্য চেষ্টা করে চলছে। কারণ, আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত সম্পর্কে যদি লোক সমাজে কু-ধারণা সৃষ্টি করা যায়, তবেই মানুষকে পথভ্রষ্ট করা সহজ।
বর্তমান বিশ্বে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের অনুসারীগণ চার মাযহাবেরই অন্তর্ভূক্ত। হানাফী, মালিকী, শাফিয়ী, হাম্বলী। পৃথিবীতে হানাফী মাযহাবের লোক বেশী। বিশেষ করে এশিয়া মহাদেশে হানাফী মাযহাব ব্যতীত অন্য মাযহাবের অনুসারী নাই বললেই চলে। এই কারণে ইসলামের শক্রপক্ষ সর্বদাই হানাফী মাযহাবের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে।
কাগজপত্রে কখনও লিখছে যে, মাযহাবে বিশ্বাসী হলে কাফির হবে, ইমাম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি কাফির ছিলেন। নাউযুবিল্লাহ। হানাফীদের কোন আমল ঠিক নয় ইত্যাদি। ঈমানের পর যেহেতু নামাযের গুরুত্ব- এই কারণে হানাফীদের নামায সম্পর্কে বহু ভুল লিখা ছাপিয়ে অপপ্রচার করা হচ্ছে।
তবে সর্বসম্মত কথা এই যে, কেউ যদি সঠিকভাবে পূর্ণাঙ্গ ইসলামী আইন বা জীবনব্যবস্থা খোঁজ করে তবে তার হানাফী মাযহাবের ফিক্বাহ শাস্ত্রের সাহায্য নিতেই হবে।
কারণ হানাফী মাযহাব ব্যতীত অন্য কোন মাযহাবে খিলাফত ব্যবস্থার মাসয়ালাগুলো নেই।
---------------------------(ইনশাআল্লাহ চলবে। )
১ম পর্ব।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।