বঙ্গোপসাগরে ট্রলারে লুটপাট ও নিরীহ জেলেদের হত্যার মিশনে নেমেছে রোহিঙ্গা জঙ্গীরা। রামুর বৌদ্ধবিহার ও বড়ুয়াপল্লীতে নারকীয় হামলার পর গ্রেফতার এড়াতে সন্ত্রাসী রোহিঙ্গাদের অনেকে নিরাপদ আশ্রয় হিসেবে বেছে নিয়েছে বঙ্গোপসাগরকে। ছিনতাইকৃত ট্রলার নিয়ে তারা সাগরে ডাকাতিসহ ফিশিং ট্রলার, জাল-সর্বস্ব ছিনিয়ে নেয়ার কাজে জড়িয়ে পড়েছে। আর তাদের সহযোগিতাসহ মুঠোফোনে দিকনির্দেশনা দিয়ে চলছে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার ও নাইক্ষ্যংছড়িতে বসবাসকারী কিছুসংখ্যক পুরনো রোহিঙ্গা অর্থাৎ আরাকান বিদ্রোহী আরএসও এবং তাদের আশ্রয়-প্রশ্রয়দানকারী রাজনৈতিক মৌলবাদী নেতা। সশস্ত্র রোহিঙ্গা জঙ্গীরা জলদস্যু সেজে সাগরে ডাকাতি এবং জেলেদের পাখির মতো হত্যা করে চলছে।
বাংলাদেশী ১১ মাঝিমাল্লাকে খুন করে সাগরে ভাসিয়ে দিয়ে ট্রলারসহ পালানোর সময় কক্সবাজারের উখিয়া পুলিশ এক রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে গ্রেফতার ও জালসহ ট্রলারটি জব্দ করেছে। রবিবার রাতে উখিয়ার ইনানী সৈকত থেকে পুলিশ স্থানীয় জনগণের সহযোগিতায় ট্রলারটি জব্দ করে। আটক রোহিঙ্গা হামিদ হোসেন ১১ মাঝিমাল্লাকে খুন করার কথা অকপটে স্বীকার করেছে পুলিশের কাছে। উখিয়া সর্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে সোমবার জানান, গ্রেফতারকৃত আসামি রোহিঙ্গা হামিদকে বরগুনার সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠিয়ে দেয়া হবে।
উখিয়া পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, জেলার মহেশখালীর জসিম উদ্দিনসহ ১১ বাংলাদেশী মাঝিমাল্লাকে নৃশংসভাবে খুন করে ট্রলার নিয়ে মিয়ানমারে পালিয়ে যাচ্ছিল ৫ রোহিঙ্গা সন্ত্রাসী।
রবিবার রাতে উখিয়ার পাটুয়ারটেকে পাথরে ধাক্কা লেগে ট্রলারটি আটকা পড়ে বিকল হয়ে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় জেলেদের সহযোগিতায় ফিশিং ট্রলারটি উদ্ধার ও মিয়ানমারের বুচিদং এলাকার মৃত ছৈয়দ আকবরের পুত্র রোহিঙ্গা হামিদ হোসেনকে (৪৫) গ্রেফতার করা হয়েছে। সে কক্সবাজার শহরের রোমালিয়ারছড়ায় বসবাস করে বলে জানিয়েছে। ইনানী পুলিশ ফাঁড়িতে আটক রোহিঙ্গা হামিদ জানায়, বরগুনা পাথরঘাটা এলাকার বাবুল ও সেন্টু মিয়ার মালিকানাধীন ফিশিং ট্রলার নিয়ে মঙ্গলবার ১৬ মাঝিমাল্লাসহ মাছ ধরতে সাগরে বের হয়। এর মধ্যে মহেশখালীর গোরকঘাটার জসিম, বরগুনার পাথরঘাটার জাফর, আব্বাস মিয়া, রফিক, সোহাগ, বেলাল, ছৈয়দ আলম ও বাবুল মিস্ত্রিসহ ১১ বাংলাদেশী ছিল।
বুধবার রাতে গভীর সাগরে পৌঁছানোর পর রোহিঙ্গারা তাদের সিদ্ধান্ত মতে ধারালো কিরিচ দিয়ে ট্রলারে ঘুমিয়েপড়া ১১ বাংলাদেশী মাঝিমাল্লাকে নৃশংসভাবে খুন করে ৫ রোহিঙ্গা পালিয়ে যাচ্ছিল। ইনানী সমুদ্রে এসে ট্রলারটি বিকল হয়ে পড়লে বেকায়দায় পড়ে তারা। এর মধ্যে ৪ রোহিঙ্গা পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও সে ধরা পড়ে। তবে নৃশংস ১১ তাজা প্রাণ হত্যাযজ্ঞে পালিয়ে যাওয়া ৪ রোহিঙ্গা জড়িত এবং সে নির্দোষ বলে দাবি করেছে পুলিশের কাছে। উখিয়া সর্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার জানান, ঘটনাস্থল যখন বরগুনা থেকে সৃষ্টি, সে হিসেবে মামলা রুজু হবে বরগুনার সংশ্লিষ্ট থানায়।
তাই গ্রেফতারকৃত আসামি রোহিঙ্গা হামিদকে সংশ্লিষ্ট থানায় পাঠিয়ে দেয়া হবে। রোহিঙ্গা সন্ত্রাসীকে আটক ও ট্রলার উদ্ধারে নেতৃত্বদানকারী ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সাঈদ মিয়া জানান, বরগুনা জেলার সোনাচরদ্বীপ এলাকায় ৭৪ অর্শ্বশক্তি ইঞ্জিনচালিত ফিশিং ট্রলার ও মাছ ধরার উপকরণ নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় গ্রেফতারকৃত রোহিঙ্গা হামিদ ১১ বাংলাদেশী মাঝিমাল্লাকে খুন করার কথা অকপটে স্বীকার করেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।