১৮-দলীয় জোটের অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন গতকাল রোববার গাজীপুরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশের সঙ্গে অবরোধকারীদের বিক্ষিপ্ত সংঘর্ষ হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ও শটগানের গুলি ছোড়ে। সংঘর্ষে কমপক্ষে ৪০ জন আহত হন।
নারায়ণগঞ্জে পিকেটাররা বাসে অগ্নিসংযোগ ও গাড়ি ভাঙচুর করেছে। পুলিশের সঙ্গে পিকেটারদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে।
আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:
গাজীপুর: গতকাল সকাল ১০টার দিকে অবরোধের সমর্থনে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলায় বিএনপি ও এর অঙ্গ-সংগঠনের নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয় থেকে মিছিল বের করেন। উপজেলার সাহেববাজার বাইপাস রোডে পৌঁছালে পুলিশ মিছিলে বাধা দেয়। এ সময় নেতা-কর্মীরা বাধা উপেক্ষা করতে চাইলে পুলিশ তাঁদের লাঠিপেটা করে। নেতা-কর্মীরাও পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। একপর্যায়ে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল, রাবার বুলেট ও শটগানের গুলি ছোড়ে।
এতে কমপক্ষে ৪০ নেতা-কর্মী হন। তাঁদের সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কালিয়াকৈর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, সফিপুর জেনারেল হাসাতালসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়।
কোনাবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) হামিদ জানান, অবরোধকারীরা ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুর মহানগরের বাইমাইল ব্রিজের ওপর শনিবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে ঝুটে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে পুলিশ গিয়ে আগুন নেভায় এবং রাত ১০টার দিকে গাড়ি চলাচল শুরু হয়।
জয়দেবপুর থানার উপপরিদর্শক মো. মিজান জানান, শনিবার রাতে অবরোধ-সমর্থকেরা জেলা শহরের শিববাড়ি, কেন্দ্রীয় মসজিদ রোড, জোড়পুকুর, চান্দনা চৌরাস্তা এলাকায় বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যায়।
সকালে টঙ্গীতে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীরা মিছিল বের করেন। পরে মিছিলকারীরা টঙ্গীবাজার ও টঙ্গী-কালীগঞ্জ সড়কে ড্রাম ফেলে অবরোধের চেষ্টা করেন। এ সময় কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পরে পুলিশ ধাওয়া করলে মিছিলকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়। ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ চারটি ককটেল উদ্ধার করেছে।
রাতে পুলিশ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ৪৮ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ও টঙ্গী থানা ছাত্রদলের সভাপতি মো. শফিউদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে।
কালীগঞ্জ উপজেলার মুলগাঁও এলাকায় শনিবার রাত সোয়া ১১টার দিকে দুর্বৃত্তরা নরসিংদীগামী একটি ট্রাকে পেট্রলবোমা নিক্ষেপ করে। এতে ট্রাকের চালক মো. মিনু মিয়া ও তাঁর সহযোগী মো. রুবেল দগ্ধ হন। পরে এলাকাবাসীর সহায়তায় আগুন নেভানো হয় এবং দগ্ধ দুজনকে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পাঠানো হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য রাতেই তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নারায়ণগঞ্জ: সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ওসি আবদুল মতিন জানান, সকাল সাতটার দিকে সদর উপজেলার সাইলো এলাকায় আদমজী ইপিজেডের ডিএনভি ক্লথ লিমিটেডের শ্রমিক বহনকারী একটি বাসে পিকেটাররা পেট্রল ঢেলে আগুন দেয়। এতে বাসের সাতজন যাত্রী আহত হন। পরে এলাকার লোকজন ও পুলিশ গিয়ে আগুন নেভায়। একই সময় হাজীগঞ্জ এলাকায় মহানগর ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সড়কে পেট্রল ঢেলে আগুন দেন। এ সময় বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাঙচুর করা হয়।
নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল থানার ওসি মঞ্জুর কাদের জানান, সকাল ছয়টার দিকে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের রূপগঞ্জের যাত্রামুড়া এলাকায় কাগজভর্তি তিনটি ট্রাকে আগুন দেওয়া হয়। তবে এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।
সকাল ১০টার দিকে আড়াইহাজার উপজেলার তিলচন্দ্রী বাজার এলাকায় পিকেটাররা সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে। পরে পুলিশের ধাওয়ার মুখে তারা পালিয়ে যায়। বেলা দুইটার দিকে শহরের চাঁদমারী এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাসে আগুন দেওয়া হয়।
এ সময় পিকেটারদের সঙ্গে পুলিশের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। পুলিশ ফাঁকা গুলি ছুড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে কমপক্ষে তিনজন আহত হন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।