মোঃ জাহিদ হোসেন
[img|http://cms.somewhereinblog.net/ciu/image/161268/small/?token_id=d7264542677ef5098eead838916e3ed4
মোঃ জাহিদ হোসেন, চবিঃ
শহর থেকে সামান্য দূরে। রেল লাইন পেড়িয়ে বাঁধের ধার পর্যন্ত পশ্চিম দিকে চলে গিয়েছে বেশ কিছু সরু পাঁকা রাস্তা। এর পরেই সমুদ্র উপকূল। স্থানীয় লোকেরা একে বলে সাগর পাড়। প্রথমে চারপাশে নিস্তব্দতার অনুভূতি।
একটু পর হঠাৎ যেন এক দমকা হাওয়া এসে আপনাকে ছুঁয়ে গেল। আর কিছুক্ষণ আগের দৃশ্যটাও কেমন যেন বদলে গেল মনে হল। এমনি পরিবেশ পাবেন হালিশহর সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে বেড়াতে এলে।
আসতে পারেন এখানে বছরের যে কোনো সময়। তবে সাধারণত শীত আর গ্রীষ্মে বেড়াতে এলে এই সমুদ্র উপকূলটা অনেক উপভোগ করতে পারবেন।
গ্রীষ্মে এখানকার প্রাকৃতিক দৃশ্যটা যেমন সুন্দর শীতেও তেমন সুন্দর। তবে এই সমুদ্র উপকূলকে শীতে পাবেন গ্রীষ্মের চেয়ে একটু আলাদা রূপে।
এখানে সমুদ্রের আগে বন্যা প্রতিরোধক একটা বাঁধ রয়েছে। আর এর আগে বাঁধের সাথে লাগানো রয়েছে একটি হাইওয়ে রোড যা চট্রগ্রাম সমুদ্র বন্দর থেকে এসে সোজা উত্তর দিকে গিয়ে মিশেছে ফৌজদার হাট পর্যন্ত। চোখে পড়বে বাঁধের দুই পাশে দাঁড়িয়ে থাকা বিশাল বড় বড় ঝাও গাছের সারি।
তার সাথে আবার রয়েছে হাইওয়ে রোডের পাশে দাঁড়িয়ে থাকা আরও ছোট বড় বিভিন্ন গাছের সারি। হঠাৎ করে দেখলে মনে হতে পারে অস্ট্রেলিয়া বা নিউজিল্যান্ডের ছবির মত চওড়া রাস্তাগুলোর মতই কোন রাস্তা। হাইওয়ে রোডটি বাঁধের সাথে লাগানো থাকলেও রাস্তা আর রোডের মাঝে নিরাপত্তা রেলিং রয়েছে। রোডের পূর্ব পাশ জুড়ে দেখা যাবে বিস্তৃত সবুজ ধান ক্ষেত। কিছুক্ষণ পর পর রোডের উপর দিয়ে ছুটে চলছে দুই একটা বড় বড় মালবাহী গাড়ী।
বাঁধ থেকে সমুদ্রের দিকে যেতে যেতে অনেকগুলো ছোট-বড় মাছের ঘের দেখতে পাবেন। সেই সাথে দেখতে পাবেন ছোট ছোট নারকেল গাছের সারিও। এর কোথাও বা সারির মাঝখানে ছোট ছোট বাঁশ-ছনের তৈরী পাহারা ঘর রয়েছে।
সৈকতের দিকে যতই যেতে থাকবেন ততই বালি আর কোথাও কোথাও জমে থাকা জোয়ারের পানির সন্ধান পাবেন। তবে তখন ভাটা থাকতে হবে।
হঠাৎ করে সৈকতের ছোট ছোট গর্তেও পড়ে যেতে পারেন। তাই একটু দেখে হাঁটবেন। হাঁটতে হাঁটতে অনেক ছোট বড় ঝিনুকের সন্ধান পাবেন। সকাল বেলা বাঁধের ধারে পাখির কলকাকলিতে মুখর থাকে চারদিক। দুপুরে অল্পক্ষণের জন্য তীব্র গরম।
তবে তা ভয় পাবার মত তেমন দাবাদহ নয়।
বিকেলটা খুবই স্নিগ্ধ ও পবিত্রতায় ভরা মনে হবে চারপাশ। যতই সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসবে ততই মেঘ মুক্ত আকাশে টক টকে লাল সূর্যটা হেলিয়ে যেতে দেখা যাবে সমুদ্রের বুকে। মনে হতে পারে একবারে আস্ত একটা ডিমের কুসুম। আর সেই কুসুমের আলোতে সাগরটাও যেন লাল-হলুদ রঙে রূপ ধারণ করবে।
হঠাৎ আকাশে দেখা পেতে পারেন ঘরে ফিরতি ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ন্ত পাখির দল। এছাড়াও সাগর থেকে ভেসে আসা সোঁ সোঁ শব্দ তো মাতিয়ে রাখবেই আপনাকে। তাই আর দেরী কেন আজই একবার ঘুরে আসুন না এমন অপরূপ সৌন্দর্যের আধার হালিশহর সমুদ্র উপকূল থেকে।
যাতায়ত ব্যবস্থা
চট্রগ্রামে এসে দেওয়ানহাট এ আসবেন। সেখান থেকে সোজা পশ্চিম দিকের রোড ধরে হালিশহর নয়াবাজার হয়ে যে কোন যানবাহন দিয়ে চলে আসতে পারেন এই উপকূলে।
অথবা অলংকার থেকে রিক্সা বা অন্য কোন গাড়ী দিয়ে সাগরিকা হয়ে উপকূলটির জেলেপাড়ার দিকে চলে আসতে পারেন খুব সহজেই। হালিশহর সমুদ্র উপকূলের কাছাকাছি উত্তর দিকেই জেলে পাড়া অবস্থিত। প্রায় এক থেকে দেড় মাইলের পথ হবে। হেঁটে ও সেখানে যেতে পারেন হালিশহর থেকে।
খাবারের ব্যবস্থা
খাবারের কথা বলতে গেলে তেমন কোন উন্নত মানের খাবার এখানে পাবেন না।
কারন এখনো পর্যন্ত এখানে তেমন কোন রেস্টুরেন্ট বা ভাল হোটেল গড়ে উঠেনি। তবে বাঁধের পাশে থাকা ছোট ছোট দোকানগুলোতে হালকা ও শুকনা জাতীয় বিভিন্ন ফাস্ট ফুড পাবেন।
বিনোদনের ব্যবস্থা
অবসর সময় কাটানোর জন্য শুক্রবারে প্রচুর দর্শনার্থী আসে। আর ওই সময় অনেকটা ছোটখাটো একটা মেলার মত পরিবেশ পেতে পারেন এখানে। উত্তর দিকে কিছু দূরে রয়েছে রয়েছে কেওড়া বন।
কেওড়া গাছগুলোর শ্বাসমূল মাটির উপরের দিকে উঠে থাকে। দেখতে দারুন লাগবে আপনার থেকে।
হোটেল বা থাকার ব্যবস্থা
এখানে রাতে থাকার ব্যবস্থা নেই বললেই চলে। দিনে এসে আপনাকে দিনেই চলে যেতে হবে। তবে সন্ধ্যার পরও পর্যন্ত আপনি সেখানে থেকে সমুদ্র উপকূলের ডুবন্ত সূর্য আর উড়ন্ত ফিরতি পাখির অপরূপ দৃশ্য উপভোগ করতে পারেন।
সাম্প্রতি লিখাটি অন্য একজন চুরি করার কারণে আমি নিজে াবার পোস্ট করার জন্য আবার বাধ্য হলাম
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।