আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যারা নৈরাজ্যের নেতৃত্ব দিচ্ছে তাদেরও ফল ভোগ করতে হবে

মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সাবেক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম বলেছেন, রাজনৈতিক কর্মসূচির নামে আজ যারা নৈরাজ্যের নেতৃত্ব দিচ্ছেন একদিন তাদেরও এর ফল ভোগ করতে হবে। তিনি বলেন, বেগম খালেদা জিয়াকে নির্বাচনে আনতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চেষ্টার কোনো কার্পণ্য ছিল না। কিন্তু আগে থেকেই খালেদা জিয়া সিদ্ধান্ত নিয়ে নেন তিনি নির্বাচনে যাবেন না। কারণ, নির্বাচনে জিতে সরকারে গেলে তাকে যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হবে। পিলখানা হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ১৫২ জনের ফাঁসির রায় বাস্তবায়ন করতে হবে।

গতকাল সকালে তার গুলশানের বাসায় এক সাক্ষাৎকারে তিনি বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব কথা বলেন। ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম বলেন, আন্দোলনের নামে বিএনপি-জামায়াতের চলমান নৈরাজ্যে নির্বাচন বিঘি্নত হতে পারে। তবে এদেশে নির্বাচন হচ্ছে ঈদের মতো একটি উৎসবের বিষয়। মানুষ ভোটের সময় উৎসবের আবহে তাদের নেতা নির্বাচন করতে চায়। বিএনপি-জামায়াত যে কাজগুলো করছে সেটা জাতির জন্য কতটা ক্ষতিকর সেটা জনগণকে বুঝাতে পারলে তারা সরকারের পদক্ষেপের পক্ষে থাকবে।

প্রধান বিরোধী দল নির্বাচনের বাইরে থাকলে নির্বাচন কতটা গ্রহণযোগ্য হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সব দল অংশ নিলে নির্বাচন পরিচ্ছন্ন হতো। তবে ভোট কেন্দ্রে বিপুল সংখ্যক মানুষ ভোট দিতে গেলে নির্বাচন সফল হবে। বাঞ্ছারামপুর উপজেলা এবং নবীনগর উপজেলার দুটি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৬ আসনের এমপি ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম বলেন, আমার এলাকায় বিএনপি নেতা-কর্মীরা যখন একসঙ্গে বসে তখন তারাই বলে, আমরা যদি তাজ ভাইকে নেতা পাইতাম তাহলে আর কোনো নেতা লাগত না। তিনি বলেন, আমি শুধু আওয়ামী লীগের নেতাই নই। আমি দলমত নির্বিশেষে এলাকার সবার নেতা।

আমি বাঞ্ছারামপুরে স্মরণকালের সবচেয়ে বেশি উন্নয়ন করেছি। গত পাঁচ বছরে আমার এলাকার সবকটি গ্রামে পাকা সড়ক করে দিয়েছি। বাঞ্ছারামপুরে কোনো মাটির রাস্তা নেই। এক সময় সরকারি কর্মকর্তাদের পানিশমেন্ট পোস্টিং (শাস্তিমূলক বদলি) দেওয়া হতো দেশের সবচেয়ে দুর্গম এলাকা বাঞ্ছারামপুরে। সেই বাঞ্ছারামপুরকে নজিরবিহীন উন্নয়নে বদলে দিয়েছেন এলাকার দুই বারের এমপি ক্যাপ্টেন তাজ।

সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে এলাকায় তার নেতৃত্বে উন্নয়ন কাজ সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাঞ্ছারামপুরে এখন প্রাইজ পোস্টিং হয়। আমার এলাকায় আগের এমপি খালেক সাহেবের বাড়ির পাশের রাস্তাটিও আমি করে দিয়েছি। ১৯৬৬-৬৭ সালে ছাত্রজীবনে কর্দমাক্ত খাল নদী পেরিয়ে যাতায়াতের স্মৃতি রোমন্থন করে এ বি তাজুল ইসলাম বলেন, আমি তখনই প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, যদি কোনো দিন সুযোগ পাই তাহলে মানুষের কষ্ট লাঘব করব। খাল ও নদীতে মানুষ পারাপারের ঘাট বানিয়ে দেব। আমি বাঞ্ছারামপুরের খাল নদীতে ৩০০ ঘাটলা করে দিয়েছি।

পরে এলাকার মানুষ তাদের বাড়ির পাশেও ঘাটলা চায়। সেগুলোতে ঘাটলা করার পাশাপাশি একটি রুম করে দিয়েছি যাতে মহিলারা গোছল শেষে কাপড় বদলাতে পারে। প্রতিটি গ্রামকে সড়ক নেটওয়ার্কের আওতায় আনতে পেরেছি। ফায়ার ব্রিগেড স্টেশন বসিয়েছি। সলিমাবাদ, মানিকপুর, সোনারামপুর ও আইয়ুবপুর-এই চারটি ইউনিয়নে আগে কোনো হাইস্কুল ছিল না।

আমার সময়ে চারটি ইউনিয়নে হাইস্কুল করে দিয়েছি। আমি ছাড়া বাঞ্ছারামপুরের এক ইঞ্চি রাস্তা কেউ করতে পারেনি। তিনি বলেন, এলাকায় দলমত নির্বিশেষে সব মানুষ আমাকে পছন্দ করে। কারণ, আমি গত পাঁচ বছরে কোন রাজনৈতিক মামলা হতে দেইনি। চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ-বিএনপি দেখিনি।

শুধু দেখেছি আমার এলাকার মানুষ। বাঞ্ছারামপুরের মানুষ হলেই চাকরি দিয়েছি। তিনি বলেন, আমার সেই দুর্গম এলাকাকে আমি এখন অনেক সুগম করে দিয়েছি। সোবলাকান্দি ইউনিয়নে একটি অডিটরিয়াম করেছি যেখানে একসঙ্গে ৬০০ মানুষ অনুষ্ঠান দেখতে পারে। এটি চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বড় ও ব্যয়বহুল এসি অডিটরিয়াম।

এটা আমার বড় ভাই আশরাফ চেয়ারম্যানের নামে হয়েছে। থানা সদরে আরও একটি অডিটরিয়াম হচ্ছে। ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে তিন জায়গায় নদী রক্ষা বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে মেঘনার ভাঙন রোধের ব্যবস্থা করেছি। আগে ভাঙনের কারণে যেখানে কোনো জমি বিক্রি হতো না সেখানে এখন প্রতি কাঠা জমির দাম লাখ টাকা। তিতাস নদীর ওপর পাঁচটি ব্রিজ করে দিয়েছি।

বাঞ্ছারামপুর, হোমনা ও মুরাদনগরকে সম্পৃক্ত করতে ১১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে 'ওয়াই' শেপের একটি ব্রিজ হচ্ছে। এটা হবে এশিয়ার মধ্যে এই আকারের সবচেয়ে বড় ব্রিজ। জানা গেছে, বাঞ্ছারামপুরে গত পাঁচ বছরে পৌনে দুই হাজার কোটি টাকার উন্নয়ন কাজ হয়েছে। এটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার এলাকা টুঙ্গিপাড়ার উন্নয়নের চেয়েও বেশি।

 

 



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.