১৮ দলীয় জোটের টানা অবরোধ কর্মসূচির কারণে লাগামহীন রাজধানীর নিত্যপণ্যের বাজার। গতকাল বাজারের চিত্র ছিল অন্যান্য শুক্রবারের চেয়ে ভিন্ন। রাজধানীর প্রতিটি বাজারে ছিল মানুষের উপচেপড়া ভিড়। পণ্যের সরবরাহ কম থাকায় ক্রেতারা কোনো প্রকার দামাদামি না করেই কেনাকাটা করেছেন। বিশেষ করে মাছের বাজারে ছিল রীতিমতো হুড়োহুড়ি অবস্থা।
যার সামনে যা পড়েছে তাই কিনে নিয়েছেন। এছাড়া বিক্রেতাও ইচ্ছেমতো এক দামে বিক্রি করেছেন। শীতের সবজির আমদানিও ছিল কম। গতকাল রাজধানীর প্রতিটি বাজারেই মাছ, মাংস, সবজি, চিনি ও পিয়াজের দাম ফের বেড়েছে। প্রতিটি সবজির দাম কেজিতে ৫ থেকে ১৫ টাকা বেড়েছে।
পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে লাউ বাজারে ওঠেছিল। দাম ছিল সহনীয়। পিয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ২০ টাকা পর্যন্ত। গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে প্রতি কেজি পিয়াজ বিক্রি হয়েছে ১১০ থেকে ১২২ টাকায়। স্থিতিশীল রয়েছে চাল ও ভোজ্যতেলের দাম।
বাজারে আসা ক্রেতাদের অভিযোগ এভাবে নিত্যপণ্যের দাম বাড়তে থাকলে নাগালের বাইরে চলে যাবে সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতা। রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা গেছে, টানা অবরোধের আগে প্রতিদিন প্রায় ১৫০ ট্রাক এলেও গতকাল ভোর থেকে দুপুর পর্যন্ত ৬০ থেকে ৬৫টি ট্রাক ভর্তি সবজি ও নিত্যপণ্য এসেছে। এসব ট্রাক রাজধানীর আশপাশের জেলা থেকে এসেছে। প্রতিটি ট্রাকের পাশেই ছিল পাইকারি ক্রেতাদের ভিড়। গত বৃহস্পতিবার পাইকারিতে প্রতি কেজি আলু ১৫ টাকায় বিক্রি হলেও গতকাল বিক্রি হয়েছে ১৮ টাকায়।
এছাড়া বেগুন, করলা, শিম ও ঝিঙ্গা-চিচিঙ্গার কেজি ৪০ থেকে বেড়ে হয়েছে ৫০ টাকা। তবে নতুন আলু গতকাল প্রতি কেজি ৪৫ টাকায় বিক্রি করতে দেখা গেছে। এছাড়া ইলিশ মাছের দাম নাগালের বাইরে চলে যেতে শুরু করেছে। গতকাল বাজারে প্রতি কেজি ইলিশ বিক্রি হয়েছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকায়। বাজারে আসা ক্রেতা ও ব্যবসায়ীরা জানান, কাঁচা মরিচের দাম কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ১১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
গত সপ্তাহের ১৫০ টাকার ধনেপাতা গতকাল বিক্রি হয়েছে ২০০ টাকায়। অভিজাত এলাকা বারিধারা বাজার ঘুরে দেখা গেছে শীতের সবজির সরবরাহ বেড়েছে। মটরসুটি প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায়। গতকাল ছোট আকারের ফুলকপি ২০, লাউ মাঝারি ৪০ থেকে ৫০ ও মাঝারি বাঁধাকপি বিক্রি হয়েছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। এছাড়া প্রতি কেজি বরবটি ৫০ থেকে ৫৫, মূলা ৪০, শসা ৩৫ থেকে ৪০, সিম ৫০ থেকে ৬০ টাকায়, ঢেঁড়স ৫০, কাঁকরোল ৫০, ঝিঙ্গা ও চিচিঙ্গা ৫০, টমেটো ৭০ টাকায় বিক্রি হয়।
গতকাল বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হয়েছে ১১৫ থেকে ১১৭ টাকায়, ৫ লিটার ৫৭০ থেকে ৫৮০ টাকা, খোলা সয়াবিন ১০৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্যাকেটজাত আটা-ময়দার কেজিতে ৩ থেকে ৪ টাকা বেড়েছে। ২ কেজির প্রতি প্যাকেট আটা ৭০ টাকা ও ময়দা ৯০ টাকায় বিক্রি হয়। মসুর ডাল ১০৮ থেকে ১১৫, অ্যাংকর ডাল ৬২ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হয়। গতকাল মিনিকেট চাল প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৪৮ থেকে ৫০,পাইজাম ৫২ থেকে ৫৫, নাজিরশাইল ৫৫ থেকে ৫৮, লতাশাইল ৫৮ থেকে ৬০ টাকায় বিক্রি হয়।
এছাড়া মাছের বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাছের সরবরাহ বাড়লেও দাম নাগালের বাইরে। এক কেজি সাইজের কোরাল ৪৩০,আইড় (বড়) ৩৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। বড় আকারের এক কুড়ি কৈ ৩০০, শিং ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, রুই (বড়) প্রতি কেজি ২৮০ থেকে ৩৫০, কাতল ২০০ থেকে ২২০, নলা ১৫০ থেকে ১৬০, ফাইসা ২৭০, বাইলা (বড়) ৩৫০, ছোট ২৫০, পুটি (বড়) ৩৫০ টাকায় বিক্রি হয়। টেংরা ৩২০, টাকায় বিক্রি করা হয়। গরুর মাংস কেজিতে ১০ টাকা বেড়ে ২৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
এছাড়া ব্রয়লার প্রতি কেজি ১৩০, লেয়ার ১৬০ টাকায় বিক্রি হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।