এখনও লেখার সময় হয়নি ।
আহ
জানি এর পরের কথাই হবে -চোখ নেই আপনার । এইটা কি বাসার বেডরুম পাইসেন। অসভ্য কোথাকার ..... মেয়ে দেখলেই ......
কিন্তু না, এমন কঠিন ঘুষি খাবার পর ও মেয়েটি কিছু বললো না । আমার দিকে তাকিয়ে আছে অবাক দৃষ্টিতে আর চোখের কোণে পানি ।
বুঝতে পারলাম চোখের কোণে পানি আমার ঘুষিই ইফেক্ট।
ব্যথা লেগেছে?
-মেয়েটির মুখে কোন কথা নেই । তাকিয়ে আছে আর চোখের কোণে পানি ।
সরি আমি আসলে আপনাকে দেখিনি । মানে ইচ্ছা করে মারিনি ।
মানে আড়মোড়া ভাঙতে গিয়ে আপনার গালের সাথে একটু লেগেছে...... সরি
-এবার একফোঁটা পানি চোখ দিয়ে বের হলো । হাতের উল্টা পিঠ দিয়ে পানি মুছে বলল" অনেক ব্যথা লাগছে "বলেই উল্টো ঘুরে সমুদ্রর ঢেউ এর দিকে হাটা আরম্ভ করলো ।
মন খুব খারাপ । আমার প্রিয় বন্ধু সজল থাকে বিদেশে। প্রায় ৫ বছর আগে ওরা ক্যানাডা চলে যায়।
কথা ছিল এবার প্রায় ৫ বছর পর এই ডিসেম্বরে ও দেশে আসবে । আমরা এক সাথে কক্সবাজার বেড়াতে আসবো। হোটেল,গাড়ি সব ফুল পেমেন্ট করে দেওয়া। শেষ সময়ে বন্ধু বলল সে আসবেনা । মেজাজ কঠিন হট হয়েছিল।
রাগ করে ডিসিশন নিলাম একাই যাবো । সারা রাত বাসে কাটিয়ে সকাল বেলা হোটেলে চেক ইন করেই এসেছি বীচে । সব রাগ নিমিষেই পানি হয়ে গেল এতো সুন্দর সমুদ্রর ঢেউ দেখে । খুব এক্সসাইটেট ভাবে আড়মোড়া ভাঙতে এক সুন্দরি মেয়ের চাঁপা ভেঙ্গে দিচ্ছিলাম প্রায়। মেয়েটার দিকে আবার তাকালাম ।
ভাবলাম সরি ঠিক করে বলা হয়নি ।
আমি ইতস্তর করে মেয়েটির দিকে তাকালাম
-মেয়েটি আমার দিকে তাকালো ।
আমার বিশ্ব বিখ্যাত অপরাধী অপরাধী হাসি হাসলাম । মা আর ভাবিরা বলে কোন অঘটন ঘটানোর পর এই হাসি দিলে নাকি আমাকে আর বকতে মন চায় না।
-মেয়েটি তাকালো আমার চোখের দিকে !২ সেকেন্ড তারপরই চোখ ফিরিয়ে নিল ।
ভাবলাম যা করেছি যথেষ্ট । এখন পর্যন্ত কিছু বলেনি তাই আল্লাহর কাছে লাখো শূকরীয়া।
কিছুক্ষণ থাকার পর হোটেলের দিকে রওনা দিলাম । আমি একা একা আপন মনে হাটতে থাকি চিন্তা করি ইস দুই বন্ধু এলে কত মজা না করতাম। হটাৎ মনে হল পিঠে উপর কি যেন পড়লো ।
ঘুরে দেখি সেই সুন্দরি মেয়ে সাথে একটা বিচ্ছু পিচ্চি বালু দিয়ে বল বানিয়ে বানিয়ে মারছে । দুইটা বুকে লাগলো একটা মাথায় লাগার সাথে সাথে আমি আহ বলে আমার চোখে হাত দিলাম। ভাবটা এমন নিলাম যেন আমার চোখ শেষ । মনে মনে ভাবছি " অহন কেমন লাগে। "
মেয়েটা দৌড়ে আমার কাছে আসলো বলল
ঃ-আপনার কি চোখে বালু গেছে ।
আমি বললাম না চোখে বাংলাদেশ বিমান ফ্ল্যাইট নং বি জি ১০৬২ গেছে।
ঃ-ভাল হইছে । আমি ইচ্ছা করেই মেরেছি । হুম ।
বলেই গট গট করে মহারানীর ভঙ্গিমায় হেঁটে চলে গেল আর বিচ্ছুটা মহারানীর পিছে পিছে ।
বলছিল
ঃ-মারিআপু ঠিকই আছে । ইশ সমুদ্রর পাড়ে আড়মোড়া ভাঙতে আসছে ।
নাহ হোটেলে যেতে আর ভাল লাগছিল না। এমন কঠিন -চোখ আন্ধা ভাব নিলাম কোন কাজ হল না । মাড়ি আপু কি অদ্ভুত নাম ।
দাতের মাড়ি । হা হা হা ।
ঘণ্টা খানেক পর হোটেলে আসলাম । অদ্ভুত ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করার পর কেন যেন শুধু সেই ২ সেকেন্ড এর দৃষ্টি মনে পরছে বার বার ।
দুই দিন ছিলাম কক্সবাজারে ঘুরে ফিরে ওই ২ সেকেন্ড এর দৃষ্টি মনে পরছে ।
তাকে খুজেছি খুব করে মন থেকে চেয়েছি তার সাথে দেখা হোক । কিন্তু হয়নি । এই দুই দিন সকালে বীচে বসে থাকলাম যে সময় তার সাথে দেখা হয়েছিল, বেলা বাড়ার সাথে সাথে বার্মিজ মার্কেটে বসে থাকতাম রাত পর্যন্ত । যদি দেখা হয়ে যায়। কিছু চাওয়া অপূর্ণ থেকে যায় ।
হয়ত অপূর্ণতা পূরণ করতেই আমরা আশা নিয়ে বাঁচি ।
প্রায় ১ মাস পরের ঘটনা । নীলক্ষেতে বই কিনে দাড়িয়ে আছি বাসায় যাবো বলে ,দেখি দুইটা মেয়ে আমার দিকে তাকিয়ে মিটিমিটি হাসছে । এক সেকেন্ডের মধ্য ওই দুই চোখের কথা মনে পড়ল । মেয়েটি তার স্বভাব সুলভ মহারানীর ভঙ্গিমায় হেঁটে আসলো আমার কাছে
সাথে সাথে আমি চোখে হাত দিয়ে বললাম
ভাল আছেন মাড়ি আপু ।
ঃ-আমার নাম মাড়িয়া ।
কক্সবাজারে থেকে ঘুরে আসবার পর আমার এই চোখে কিছু দেখি না ।
ঃ-দেখবেন কিভাবে চোখে তো বাংলাদেশ বিমানের ফ্ল্যাইট নিয়ে ঘুরে বেড়ান ।
লজ্জা শরমের মাথা খেয়ে বলেই দিলাম "অনেক খুজেছি তোমাকে । "মনে মনে একটা গান বাজছিল "এতদিন কোথায় ছিলেন "............মনকে বললাম তাকে তো পাইসো আর চিন্তা কি ।
ঃ- সেদিনই আমরা কক্সবাজার থেকে চলে আসি ।
হাতে কোন কাজ আছে ।
হ্যা একজনের চোখে বিমান আটকেছে তা বের করতে হবে। কিন্তু একটা কন্ডিশন আছে প্লিজ আর আড়মোড়া ভাঙবেন না ।
হাঁসতে থাকি আমরা ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।