হকিতে সবকিছুই এলোমেলা। প্রিমিয়ার লিগের দলবদল হলেও মাত্র ছয় ক্লাবকে নিয়ে মৌসুম শুরু করার আগ্রহ দেখাচ্ছে না স্বয়ং ফেডারেশনই। এমনিতেই দুই গ্রুপের দ্বন্দ্বে সংকট থেকে বের হতে পারছে না। তারপর আবার দেশে সহিংস রাজনীতিতে হকি আরও অনিশ্চয়তার বন্দি হয়ে গেছে। সাধারণ সম্পাদক খাজা রহমতউল্লাহ বলেছেন, আসলে আমরা কারো হুমকিকে গুরুত্ব দিচ্ছি না।
আমাদের লক্ষ্য ছিল হকিকে মাঠে রাখা। আশা ছিল ডিসেম্বর থেকেই প্রিমিয়ার লিগ শুরু করব। কিন্তু দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে তা সম্ভব হবে বলে হয় না। এদিকে আবার বিরোধী পক্ষরা সুযোগটা কাজে লাগাতে চাচ্ছে। তারা চাচ্ছে কোনো অবস্থায় যে নির্বাচিত কমিটি না থাকে।
বিশেষ করে মোহামেডানের ডাইরেক্টর ইনচার্জ লোকমান হোসেন ভূঞাকে বেশ সোচ্চার মনে হচ্ছে। নির্বাচনকালীন সরকারের ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর দায়িত্ব নেওয়ার পরই মজিবুল হক চুন্নুর সঙ্গে দেখা করে নির্বাচিত কমিটি ভেঙে অ্যাডহক কমিটি গড়ার আহ্বান জানিয়েছিলেন লোকমানের নেতৃত্ব দেওয়া প্রতিনিধিদল। সত্যি বলতে কি বিরোধী পক্ষের কিছু যুক্তি সমর্থনযোগ্য হলেও লোকমানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। গঠনতন্ত্র মেনে বর্তমান কমিটি নির্বাচনের মাধ্যমে দায়িত্ব নিলেও অভিজ্ঞ এ সংগঠক প্রতিদিনই প্রায় ফেডারেশনের সমালোচনা করে বলছেন এই কমিটি থাকলে হকির উন্নয়ন সম্ভব নয়। তা ছাড়া নির্বাচনী প্রক্রিয়া নিয়েও তিনি কঠোর সমালোচনা করছেন।
সমালোচনা হতেই পারে, কিন্তু লোকমান তো এবার বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতার বিসিবির পরিচালক নির্বাচিত হয়েছেন। ক্রিকেটের নির্বাচনকে পুরোপুরি স্বচ্ছ বলা যাবে! কাউন্সিলর মনোনয়ন নিয়ে বিতর্কের ঝড় কী বয়ে যায়নি। বিসিবির সাবেক সভাপতি সাবের হোসেন চৌধুরী টকশোতে লোকমানের অনেক সমালোচনা করেছেন। অথচ বিরোধী পক্ষ থেকে ক্রিকেটে কর্মসূচি বর্জনের কোনো ঘোষণা আসেনি। তাই হকিকে ঘিরে লোকমানের ভূমিকায় অনেকে বিরক্ত।
ছয় ক্লাব ফেডারেশন কর্মসূচি বর্জনের পেছনে লোকমানই নাকি মূল ভূমিকা রেখেছেন। কেন এ অবস্থান তা আবার অনেকেরই জানা। অভিজ্ঞ বা দক্ষ নয়, অথচ এমন এক লোককেই হকির গুরুত্বপূর্ণ চেয়ারে বসাতে চেয়েছিলেন। এর পেছনে আবার অনেক কিন্তু লুকিয়ে আছে। কিছুদিন আগে স্যাটেলাইট এক চ্যানেলে লোকমান হকি ফেডারেশন সভাপতির কঠোর সমালোচনা করেন।
তিনি বলেন, সভাপতি উদ্যোগ নিলে হকির সংকট এমন ভয়াবহতা হতো না। আসলে সভাপতি নির্বাচিত কমিটি বিলুপ্তি করেনি বলেই যত ক্ষোভ।
যাক লোকমানরা ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার পর হকিতে একটা সমঝোতার আভাস পাওয়া যাচ্ছিল। কেননা মজিবুল চুন্নু এরপরই ফেডারেশনের সঙ্গে বসে বিরোধী পক্ষের সঙ্গে দ্বন্দ্ব মেটানোর আহ্বান জানান। যদিও দুই পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কোনো বক্তব্য আসেনি।
কিন্তু খবর নিয়ে জানা গেছে, প্রতিমন্ত্রীর আহ্বানে দুই পক্ষের ভেতর আলোচনা শুরু হয়েছিল। এখন সেই কিঞ্চিৎ সম্ভাবনা ভেস্তে যেতে চলেছে। কারণ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের নির্দেশে মুজিবুল হক পদত্যাগপত্র জমা দিয়েছেন। যদিও তা এখনো গ্রহণ করা হয়নি, কিন্তু ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ে যাওয়া চুন্নু বন্ধ করে দিয়েছেন। অর্থাৎ দেশের ক্রীড়াঙ্গন আপাতত অভিভাবকহীন।
এই অবস্থায় হকির দুই পক্ষ নিজে থেকে কোনো সমঝোতা করবে সেই সম্ভাবনা নেই। বরং অভিভাবকহীন ক্রীড়াঙ্গনের সুযোগটা কাজে লাগিয়ে হকির কর্মসূচি বর্জন করা গ্রুপ আরও তৎপর হয়ে উঠেছে। প্রতিদিনই বিশেষ এক ক্লাব বৈঠক চলছে সেখানে নাকি ফেডারেশনকে অস্থির করে তুলতে নানা কর্মসূচি ঠিক করা হচ্ছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।