আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শেষবারের মতো ‘ঘরে’ ফিরলেন ম্যান্ডেলা

নেচে, গেয়ে নিজ ভূমিতে তার ‘শেষ ফেরাকে’ উদযাপন করেছে স্থানীয়রা।
শনিবার কুনুর সবচেয়ে কাছের বিমানবন্দর এমথাথায় অবতরণ করে ম্যান্ডেলার মরদেহ বহনকারী বিমান। এরপর তার কফিন নিয়ে যাত্রা করা হয় কুনুর উদ্দেশ্যে।
বিমানবন্দর থেকে বেরিয়ে শবযাত্রার বহর রাস্তায় নামার সঙ্গে সঙ্গে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সঙ্গীত গেয়ে ওঠেন হাজারো মানুষ।
এমথাথা থেকে কুনুর যাত্রায় রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে প্রয়াত নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে দেখা যায় ওই এলাকার অধিবাসীদের।


গত ৫ ডিসেম্বর ৯৫ বছর বয়সে মারা যাওয়া ম্যান্ডেলাকে রোববার এই কুনুতেই সমাহিত করা হবে, যেখানে শৈশব কেটেছে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্টের।
সমাহিত করার আগে এখানেই হবে তার শেষকৃত্য অনুষ্ঠান। রাষ্ট্রীয় সম্মান জানানোর পাশাপাশি নিজ গোত্র খোসা আবা টেম্বুর রীতি অনুযায়ী তাকে শেষ বিদায় জানানো হবে।
এ সময় পরিবারের সদস্যদের পাশাপাশি জাতীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।   যুক্তরাজ্যের প্রিন্স চার্লস ও যুক্তরাষ্ট্রের মানবাধিকার কর্মী রেভারেন্ড জেসি জ্যাকসনের মতো বিদেশি অতিথিরাও থাকবেন শেষকৃত্য অনুষ্ঠানে।


দেশের দক্ষিণপূর্বাঞ্চলের এই গ্রামের বাড়িতেই সবচেয়ে বেশি শান্তি লাগতো বলে সব সময় বলতেন ম্যান্ডেলা।
“দেখ,এই পাহাড়গুলোকে তিনি ভালোবাসতেন। তিনি বিশ্বাস করতেন, এটাই তার জায়গা,” এক সাক্ষাৎকারে সিএনএনকে বলেন ম্যান্ডেলার মেয়ে মাকি ম্যান্ডেলা।
বর্ণবৈষম্য বিরোধী লড়াইয়ের অবিসংবাদিত এই নেতার মৃত্যুর পর গত সপ্তাহ ধরে তাকে শ্রদ্ধা জানায় দেশ-বিদেশের লাখো মানু।


সর্বশেষ শনিবার কুনুর উদ্দেশ্যে যাত্রা করার আগে প্রিটোরিয়ার একটি বিমান ঘাঁটিতে তাকে শ্রদ্ধা জানায় ক্ষমতাসীন দল আফ্রিকান ন্যাশনাল কংগ্রেসের নেতারা।


রাষ্ট্রীয় পতাকায় মোড়ানো কফিন ঘিরে দাঁড়িয়ে প্রার্থনা করেন তারা।
‘আমাদের সংগ্রামের দৃষ্টান্ত। আমাদের জাতির জনক’ লেখা ম্যান্ডেলার হাস্যোজ্জ্বল ছবি সংবলিত একটি বিশাল পোস্টার দেখা যায় সেখানে।
অনুষ্ঠানে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্ট জ্যাকব জুমা বলেন, “পিতা, তোমার পরযাত্রা শুভ হোক, তুমি তোমার দায়িত্ব পালন করেছ। ”
সাদা-কালোর বৈষম্য ঘোচাতে ম্যান্ডেলার সংগ্রামী জীবন এবং তার ২৭ বছর কারাবাসের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি।


অনুষ্ঠানে ম্যান্ডেলার স্ত্রী গ্রাসা ম্যাচেল ও সাবেক স্ত্রী উইনি মাদিকেজেলাও উপস্থিত ছিলেন।


এর আগে প্রিটোরিয়ার ইউনিয়ন ভবনে ম্যান্ডেলাকে চিরবিদায় তৃতীয় দিন শুক্রবারও দেখা যায় মানুষের ঢল। সময় শেষ হয়ে আসতে থাকায় অনেকেই প্রাণপ্রিয় নেতাকে শেষ শ্রদ্ধা জানাতে বাঁধ ভাঙা জোয়ারের মতো পুলিশের বেষ্টনী ভেঙে এগিয়ে যান কফিনের কাছে।
ইউনিয়ন ভবনের ফটক শিগগিরই বন্ধ করার ঘোষণা দেয়ার পরপরই লাইনে দাঁড়ানো মানুষ তড়িঘড়ি ম্যান্ডেলার কাছে যাওয়ার চেষ্টা করেন।
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় ফুরিয়ে আসায় নতুন করে আর কাউকে লাইনে না দাঁড়ানোর আহ্বান জানায় কর্তৃপক্ষ।


সরকারি এক বিবৃতিতে বলা হয়,যারা ম্যান্ডেলাকে দেখার অপেক্ষায় নতুন করে লাইনে দাঁড়াতে চাইছেন তাদের সবাই শেষ পর্যন্ত দেখতে পাবেন এমন নিশ্চয়তা নেই।


সময়ের অভাবে প্রিয় নেতাকে শ্রদ্ধা জানাতে না পারার আক্ষেপ নিয়ে এরইমধ্যে ফিরতে হয় অনেককে। দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিদের পুলিশ সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে দেখা দেয় উত্তেজনা।
প্রিটোরিয়ার শোগ্রাউন্ডসে পুলিশ মানুষের ঢল ঠেকাতে গেলে জনতা লোহার ফটক ভেঙে ভেতরে ঢুকে পড়ে। এ সময় ধাক্কাধাক্কিতে কেউ কেউ মাটিতেও পড়ে যায়।

এই পরিস্থিতি সামলানোর চেষ্টার মধ্যেই ম্যান্ডেলাকে শেষ শ্রদ্ধা জানিয়ে একের পর এক পার হয়ে যেতে থাকে শত শত মানুষ।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.