বুধবার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে বলা হয়েছে, এখন থেকে আগামী বছরের ৩০ জুন পর্যন্ত ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে যে কোনো পরিমাণ ডাউন পেমেন্ট নিয়ে এসএমই খাতের ঋণ পুনঃতফসিল করা যাবে।
বর্তমান নীতিমালায় কোনো ঋণ খেলাপি হওয়ার পর গ্রাহক তিনটি পর্যায়ে পুনঃতফসিল করে তা নিয়মিত করতে পারে।
প্রথম দফায় ৯ মাসের জন্য মোট ঋণের ১০ শতাংশ অথবা বকেয়া ঋণের ২৫ শতাংশ-যেটি বেশি সেই পরিমাণ অর্থ ডাউনপেমেন্ট দিয়ে নিয়মিত করা যায়।
দ্বিতীয় দফায় ১২ মাসের জন্য মোট ঋণের ২০ শতাংশ অথবা বকেয়া ঋণের ৩০ শতাংশ দিতে হয়। আর তৃতীয় দফায় মোট ঋণের ৩০ শতাংশ অথবা বকেয়া ঋণের ৫০ শতাংশ যে পরিমাণ বেশি হবে তা ডাউনপেমেন্ট দিয়ে খেলাপি ঋণ পুনঃতফসিল করতে হয়।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক বলেছে, আগামী ছয় মাস এসএমই খাতের ঋণ পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না। ব্যাংক ও গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে যে কোনো পরিমাণ ডাউন পেমেন্ট দিয়ে পুনঃতফসিল করা যাবে।
এছাড়া বড় বিনিয়োগকারীদের ঋণ পুনঃতফসিলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক কেইস টু কেইস ভিত্তিতে ব্যাংক-গ্রাহক সম্পর্কের বিষয়টি বিবেচনা করবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট বিভাগের একজন উর্ধ্বতন কর্মকর্তা।
দেশে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে ব্যবসা-বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে যে বিরূপ প্রভাব পড়ছে তার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বাংলাদেশ ব্যাংক এ নির্দেশনা দিয়েছে বলে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।
এছাড়া কেন্দ্রীয় ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে এসএমই খাতের খেলাপি নয় কিন্তু নিয়মিত কিস্তি পরিশোধ করছে না এমন ঋণ(স্টান্ডার্ড, এসএমএ) পুনর্গঠনের মেয়াদকাল যৌক্তিক পর্যায়ে নির্ধারণ, প্রয়োজনে ঋণ ব্লক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর এবং সুদ হার নির্ধারণে নমনীয় হওয়ার জন্য ব্যাংকগুলোকে পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
এসব সুবিধা ২০১৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত বহাল থাকবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এসএমই নীতিমালা অনুযায়ী, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তা বলতে যেসব বিনিয়োগে ভূমি ও ভবন ছাড়া স্থায়ী সম্পদের পরিমাণ ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ দেড় কোটি টাকা আছে তাদের বোঝাবে। এসব বিনিয়োগে সর্বোচ্চ ৫০ জন লোকবলের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা থাকবে।
এই নীতিমালায় বলা হয়েছে, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তার ক্ষেত্রে ঋণের সীমা ৫০ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৫০ লাখ টাকা পর্যন্ত থাকবে।
একইভাবে মাঝারি উদ্যোক্তা বলতে ভূমি ও ভবন ছাড়া স্থায়ী সম্পদের পরিমাণ ৫০ লাখ থেকে ২০ কোটি টাকা পর্যন্ত এবং বিনিয়োগকৃত প্রকল্পে সর্বোচ্চ জনবল হবে ১৫০ জন।
তবে নীতিমালায় মাঝারি উদ্যোক্তাদের ঋণের কোনো সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়নি।
সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতায় অনেক প্রতিষ্ঠানের পণ্য উৎপাদন, বাজারজাতকরণ ও রপ্তানি ব্যাহত হচ্ছে। এ কারণে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইসহ বেশ কয়েকটি ব্যবসায়ী সংগঠনের পক্ষ থেকে আপদকালীন সময়ের জন্য ব্যাংকের ক্ষেত্রে কিছু ছাড় দাবি করা হয়েছে।
বিষয়টি নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের কাছে এফবিসিসিআই, বিজিএমইএ ও ঢাকা চেম্বার লিখিত আবেদন করেছে।
তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারকদের সংগঠন বিজিএমইএর নেতারা এই দাবি নিয়ে দেশে ক্রিয়াশীল ব্যাংকগুলোর প্রধান নির্বাহী ও পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যানদের সঙ্গে বৈঠকও করেছেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।