গত ফেব্রুয়ারিতে যুদ্ধাপরাধী দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মৃত্যুদণ্ডের পর থেকে সাতক্ষীরায় জামায়াতের হামলায় আওয়ামী লীগের ১৬ জন নিহত হওয়ার পাশাপাশি ব্যাপক হামলা-ভাংচুর হলে এই মাসে জেলাটিতে র্যাব-পুলিশ-বিজিবি একসঙ্গে অভিযানে নামে।
জামায়াতে ইসলামী ওই অভিযান নিয়ে তীব্র আপত্তি জানানোর পর সোমবার এক সংবাদ সম্মেলনে একই ভাষায় সমালোচনা করেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান।
তিনি বলেন, “গত তিন দিনে যৌথ অভিযানে সাতক্ষীরা এক ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। দেখে মনে হবে, এ যেন ভূমিকম্পে ভয়াবহ ধ্বংস্তূপের এক জনপদ। ”
“সাতক্ষীরায় এখন এখানে-ওখানে জ্বলছে আগুন, বাতাসে বইছে কান্নার শব্দ।
চারদিকে চিৎকার আর হাহাকার। সহায় সম্বল হারিয়ে মানুষ পাগলপ্রায়। যৌথবাহিনীকে দেখলেই সেখানকার মানুষ পালাচ্ছে। রাত শুরু হলে আতঙ্কে বিভিন্ন স্থানে চলে যাচ্ছে বাড়ির পুরুষ ও যুবক ছেলেরা। ”
নজরুল দাবি করেন, ১৬ থেকে ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত যৌথ অভিযানে সাতক্ষীরায় বিরোধী জোটের ৭ জন নেতা-কর্মী নিহত হয়েছে।
সাতক্ষীরায় হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপরও হামলা হচ্ছে দাবি করে এতে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সংশ্লিষ্ট বলে অভিযোগ করেন তিনি।
বিএনপি নেতা দাবি করেন, গত ৫ বছরে সাতক্ষীরায় ১৮ দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে ২১৬টি মামলায় সাড়ে ৪ হাজার জনকে আসামি করা হয়েছে। এসব মামলায় বিভিন্ন সময়ে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ১৮৪৯ জন নেতা-কর্মীকে।
সাতক্ষীরার পাশাপাশি সারাদেশে বিরোধী দলের নেতা-কর্মীদের ওপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ চলছে বলে অভিযোগ করেন বিএনপি নেতা।
“জোর করে ক্ষমতা আঁকড়ে রাখা ও আবার ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার জন্য সরকার সংবিধানের দোহাই দিয়ে রাষ্ট্রের মালিক জনগণের ওপর যে নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছে, এটা সর্বকালের রেকর্ড অতিক্রম করেছে বলে আমরা মনে করি।
”
নির্বাচন স্থগিত এবং নির্দলীয় সরকারের দাবিতে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলের পঞ্চম দফা অবরোধের তৃতীয় দিন সন্ধ্যায় গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন নজরুল।
গত শনিবার ভোর ৬টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি শেষ হবে মঙ্গলবার বিকাল ৫টায়।
নজরুল জানান, অবরোধের তৃতীয় দিনে সারাদেশে এক জন নিহত, ৫২৭ জন আহত হয়েছে। এছাড়া তিনজন নিখোঁজ এবং ৩৭৫ জন গ্রেপ্তার হয়েছে।
বিএনপিবিহীন চলমান নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের হলফনামায় দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সম্পদের যে হিসাব সংবাদপত্রে প্রকাশিত হচ্ছে, তা নিয়েও কথা বলেন নজরুল।
“পত্রিকার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি, গতকাল (রোববার) মহীউদ্দীন খান আলমগীরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগের একটি প্রতিনিধি নির্বাচন কমিশনে গিয়ে তাদের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রার্থীদের হলফনামা সরিয়ে ফেলতে বলেছে। আমরা এখন দেখব, ক্ষমতাসীন দলের এই অন্যায় আবদার নির্বাচন কমিশন গ্রহণ করে কি না। ”
আওয়ামী লীগ প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের পর সিইসি কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ বলেছেন, হলফনামা সরানোর কোনো প্রস্তাব তাদের দেয়া হয়নি।
চলমান সঙ্কটের অবসানে সমঝোতার জন্য সরকারকে আহ্বান জানিয়ে নজরুল বলেন, “জনগণ চায় নির্দলীয় সরকারের অধীনে সব দলের অংশগ্রহণে একটি অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচন। সরকারকে বলব, জনগণের ইচ্ছা পূরণে সমঝোতায় আসুন।
”
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।