আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

পাঞ্জেরি! আম্লীগ-ভারতের ঋণ আর কত বাকী? হেফাজতকে একটি বিশেষ বার্তা

মুসাফির। হাঁটছি পৃথিবীর পথে পথে, অনিশ্চিত গন্তব্যে। কাগজের নৌকা দিয়ে সাগর পাড়ি দেবার দুরন্ত প্রয়াস।

বাংলাদেশ কি তাহলে শেষ পর্যন্ত আম্লীক-ভারতের সব ঋণ নিজের রক্ত দিয়ে সুদে-আসলে পরিশোধ করে দিচ্ছে? এমনই তো মনে হয়। মা যেমন বাপের বাড়ির সব পাওনা কড়ায়-গণ্ডায় বুঝে নেয়ার পর আর কোনো দাবি খাটাতে পারে না, আম্লীগের সেই অবস্থাই হতে যাচ্ছে।

আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই না বাংলাদেশ সে ঋণ পরিশোধ করে দিক। আম্লীগও চাওয়ার কথা নয়। কিন্তু কোন্ হঠকারী সিদ্ধান্তে এই প্রাচীন দলটি আজ ১৬ কোটি মানুষের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে তা বুঝে আসছে না। দ্রুতই শেষ হয়ে আসছে ৭১'র সেই ঋণ।

তবে বাংলাদেশ আর কখনোই বিম্পি-জামাতেও ফিরে যেতে চায় না।

তাই এবার সময় এসেছে তৃতীয় শক্তির। "হঠকারী হেফাজতকে" বলব, হয় পিঠে কম্বল বাঁধুন, নইলে সবরকম মত-পার্থক্য ভুলে দ্রুত রাজনৈতিক ও জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলুন। সাথে থাকবে সারা বাংলাদেশ। নইলে কিন্তু আম্লিগ-জামাত যেই যাক, মাইর একটাও মাটিতে পড়বে না। হেফাজত একটি অরাজনৈতিক সংগঠন এ বুলি আর কতদিন।

রাজনীতিরই আজ যেখানে ভাত নেই, সেখানে আবার অরাজনীতি? কেন? ইসলাম রাজনীতি করতে নিষেধ করে? আবু তাহের মেসবাহর বক্তব্য কই, আব্দুল মালেক সাহেবের বক্তব্য কই? বুজুর্গ-ওলীদের বক্তব্য কই? নাকি তারা মসজিদ-খানকার ভেতরেই লুকিয়ে থাকবে?

হেফাজত কোনো রাজনৈতিক দল নয়। আর বাংলাদেশের "বর্তমান সমস্যা" রাজনৈতিক। তাই হেফাজতের সমাবেশ করার ঘোষণাটা ঠিক হয়নি। এ মুহূর্তে সমাবেশ করলেও মার খাওয়া ছাড়া তাদের কপালে কিছুই জুটবে না এবং বিএনপি-জামাতের সাথে সংশ্লিষ্টতার টাইটেলটা হবে অতিরিক্ত পাওনা। অবশ্য হেফাজতে ইসলাম আলাদা রাজনৈতিক প্লাটফরম গড়ে যেকোনো কর্মসূচি পালন করতে পারে।

আমি নিশ্চিত, সারা বাংলা সাথে থাকবে। শেষ খবরে জানা গেছে,'অনুমতি' না পাওয়ায় হেফাজতের সমাবেশ স্থগিত করা হয়েছে। ভালো কথা। তবে বারবার কর্মসূচি ঘোষণা করে 'স্থগিত' করলেই কিন্তু সমাধান মিলবে না, আরো বাড়বে। আগেই উপলব্ধি করা উচিত যে, 'বাধা' অতিক্রম করার সামর্থ তাদের আছে কি না।

এভাবে জাতির নিকট হাসির পাত্র হয়ে কি লাভ?

আমার পরামর্শ হল, বিএনপি-জামাতের সঙ্গে সম্পর্কহীনতার প্রকাশ্য প্রমাণ ও ঘোষণা দিয়ে এবং তাদের সবরকম সহযোগিতা বর্জন করে "জাতীয় ঐক্যের প্রতীক"- একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আবির্ভূত হয়ে যেকোনো কর্মসূচি দিক, আমরা সাথে আছি। আশা করি জনগণ সাথে থাকবে। একবার মাঠে নামলে আর পিছিয়ে যাবার সুযোগ নেই। হেফাজতে এমন কেউ আছে? থাকলে দেখিয়ে দিন। হেফাজতের অনেকে সমাবেশ স্থগিতের এই সিদ্ধান্ত মেনে নিতে পারছেন না।

কিন্তু আমি বলব, যেখানে এই 'রাজনৈতিক' পরিস্থিতিতে 'অরাজনৈতিক' সিদ্ধান্তটিই হয়তো সময়োপযোগী বা সর্বাধিক প্রস্তুতিসম্পন্ন ছিল না, সেখানে 'সাময়িক' পরাজয় মেনে নেয়াই ভালো। কারণ সিদ্ধান্তে অটল থাকলে ক্ষতির পরিমাণ বাড়তেও পারত। আর হুদায়বিয়ার সন্ধিকে দেখুন, সাময়িক ও বাহ্যিক পরাজয় মেনে নেয়াটাও মূলত বিজয়। যদি সেটা প্রজ্ঞাপূর্ণ হয়।

আজ যেখানে মানবতাই বিপন্ন, সেখানে ইসলাম গেল ইসলাম গেল নয়, নাগরিক অধিকার ও কর্তব্য নিয়েই রাজনীতিতে ঝাপিয়ে পড়া উচিত।

যেমনভাবে আমাদের পূর্বসুরিরা ৭১-এ ঝাপিয়ে পড়েছিলেন। রাজনীতিতে নতুন মেরুকরণ সৃষ্টি করে জাতীয় ঐক্য গড়ে তোলা উচিত। রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত না হলে এবং বিএনপি-জামাত থেকে পৃথক না হলে সরকারে অগণতান্ত্রিক সিদ্ধান্ত হয় মানতে হবে, নয়তো মানানো হবে। এছাড়া হেফাজতের আপাতত ঘুরে দাঁড়ানোর শক্তি নেই। চট্টগ্রাম থেকে বলা হয়েছে মহাসমাবেশ করা হবে।

কিন্তু হেফাজতের বুঝা উচিত, বড় ধরণের আঘাত দ্রুত সামলে উঠার বা উপস্থিত সমস্যা মোকাবেলার শক্তি ও চেইন অব কমাণ্ড এবং কয়েক স্তরের পরিকল্পনা তাদের নেই। সুতরাং অযথা সাধারণ কর্মীদের বিপদের মুখে ঠেলে দেয়ার মানে হয় না। তবে শাহবাগিদের বাড়াবাড়ির কারণে হেফাজতও হালে পানি পাবে তা নিশ্চিত। তাই সরকারও বিষয়টি চিন্তা করা উচিত।



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।