সচিবালয়ের দফতরে অফিস না করলেও প্রয়োজনীয় নথিপত্রে নিয়মিতই স্বাক্ষর করছেন জাতীয় পার্টি থেকে মন্ত্রিসভায় স্থান পাওয়া ছয় মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীর চারজন। আর গতকাল সচিবালয়ের নিজ দফতরে অফিসও করেছেন পানিসম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ। তবে জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও বাণিজ্যমন্ত্রী জি এম কাদের এবং দলের মহাসচিব, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রী এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার অফিসও করছেন না, ফাইলেও স্বাক্ষর করছেন না।
গতকাল সচিবালয়ে নির্বাচনকালীন সরকারে স্থান পাওয়া জাতীয় পার্টির ছয় মন্ত্রী ও প্রতিমন্ত্রী দফতর ঘুরে ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, জি এম কাদের ও রুহুল আমিন হাওলাদার ছাড়া বাকি দুই মন্ত্রী ও দুই প্রতিমন্ত্রী নিয়মিত দাফতরিক কাজ করছেন। সচিবালয়ে না গেলেও তারা মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনীয় নথিতে স্বাক্ষর করছেন। যার ফলে মন্ত্রণালয়গুলোর কাজকর্মে তেমন ব্যাঘাত ঘটছে না। গতকালসকালে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ে গিয়ে দেখা যায়, মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ নিজের দফতরে অফিস করছেন। গত ৩ ডিসেম্বর থেকে জাতীয় পার্টির মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীদের পদত্যাগ নাটক শুরুর পর থেকে সরকারে থাকা দলটির মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা অফিস করছিলেন না। জাতীয় পার্টি থেকে বলা হয়েছিল সরকার থেকে তাদের দলের মন্ত্রী-প্রতিমন্ত্রীরা পদত্যাগ করেছেন। কিন্তু মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে তাদের পদত্যাগের বিষয়ে কোনো গেজেট প্রকাশ করা হয়নি। কিন্তু কেউই সচিবালয়ে অফিস না করায় নানারকম বিভ্রান্তি দেখা দেয়। এরই মধ্যে গত ১৫ ডিসেম্বর পানিসম্পদমন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুষ্ঠিত আইনশৃঙ্খলা সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকে উপস্থিত হলে সাংবাদিকরা তার কাছে জানতে চান পদত্যাগের বিষয়ে। ওই সময় তিনি বলেন, বৈঠকে যেহেতু উপস্থিত হয়েছি তাহলে এখন পর্যন্ত পদত্যাগ করিনি। তারপর তিনিও আর সচিবালয়ের দফতরে আসেননি। গতকালই তিনি মন্ত্রণালয়ে অফিস করেছেন। তিনি বিকাল ৪টা পর্যন্ত দফতরে ছিলেন এবং গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি নথিতে স্বাক্ষরও করেন বলে মন্ত্রীর দফতর সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বেগম রওশন এরশাদ সচিবালয়ে না গেলে মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ কাজে নিয়মিতই পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছেন তার একান্ত সচিব কাজী এ কে এম মহিউল ইসলাম। মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনীয় নথিতে মন্ত্রী স্বাক্ষর করছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা বলতে পারব না, তবে যে কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে ও পরামর্শ নিয়েই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং নারী ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট সালমা ইসলাম গত সপ্তাহ থেকেই মন্ত্রণালয়ের প্রয়োজনীয় নথিপত্রে স্বাক্ষর করছেন। কোনো নথিই আটকে নেই জানিয়ে মন্ত্রণালয়ের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, প্রতিমন্ত্রী মহোদয় মন্ত্রণালয়ে না এলেও নথি তার কাছে নিয়ে গিয়ে স্বাক্ষর নেওয়া হয়।
যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নু গতকাল পর্যন্ত মন্ত্রণালয়ে অনুপস্থিত। তবে মন্ত্রণালয়ের সচিব নূর মোহাম্মদ গতকাল বাংলাদেশ প্রতিদিনকে জানান, মন্ত্রী দফতরে না এলেও মন্ত্রণালয়ের ফাইলপত্রে স্বাক্ষর করছেন নিয়মিত।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।