আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি প্রক্রিয়া: শেষ হবে কবে?

পরীক্ষার্থীদের প্রশ্ন: পরীক্ষা কবে শেষ হবে, কবে নাগাদ তারা ভর্তি হতে পারবেন।
অবরোধের ফাঁকে ১২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা হলেও তারা শিক্ষার্থী ভর্তি প্রক্রিয়া শুরু করতে পারেনি।
ফলে সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো দীর্ঘমেয়াদি সেশনজটের মুখে পড়তে যাচ্ছেন।
সাধারণত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো নভেম্বর-ডিসেম্বর মাসে প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষা নিয়ে জানুয়ারিতে ক্লাস শুরু করে।
কিন্তু অবরোধের কারণে এবছর দফায় দফায় ভর্তি পরীক্ষা স্থগিতের ফলে জানুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর ভর্তি পরীক্ষা শেষ হবে কি-না তা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।


বিশ্ববিদ্যালয়গুলো সেশনজটের আশঙ্কার মধ্যে শিক্ষামন্ত্রী বলছেন, “যেভাবেই হোক এটা পুষিয়ে নিতে হবে। এক্ষেত্রে বিভিন্ন কৌশল নেয়া হবে। ”
বারবার ভর্তি পরীক্ষা স্থগিতের ফলে শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরাও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণার পরে ‘অনিবার্য’ কারণ দেখিয়ে কোন কোন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় দুই থেকে পাঁচ দফা ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করেছে।
গত ১০ থেকে ১৪ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও অবরোধ কারণে পঞ্চমবারের মতো পিছিয়ে তা ১০ থেকে ১৪ জানুয়ারি নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হয়।


দুইবার স্থগিতের পরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা ১৭-২৯ ডিসেম্বর হওয়ার কথা থাকলেও তৃতীয় দফা তা স্থগিত করা হয়েছে।
৭-৯ ডিসেম্বর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত রয়েছে।
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৪-১৯ নভেম্বর পরীক্ষা হওয়ার কথা থাকলেও আরো দুই দফা পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করেও তা স্থগিত করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘এইচ’ ও ‘জি’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা চারবার পিছিয়েছে। শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা পিছিয়েছে দুইবার।


এছাড়া রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়, যশোর এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত রয়েছে।
অবরোধের কারণে পাবনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, হাজী মোহাম্মদ দানেশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, মাওলানা ভাসানী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, নোয়াখালী সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি এবং চিটাগং ভেটেরিনারি অ্যান্ড এনিমেল সায়েন্স ইউনিভার্সিটির ভর্তি পরীক্ষাও নিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
এদিকে ঢাকা এবং জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা শেষ হলেও ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। বুয়েটের ভর্তি কার্যক্রম ৩০ নভেম্বর শুরু হওয়ার কথা থাকলেও তা স্থগিত রয়েছে।
রাজশাহী প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি কার্যক্রম শুরু হওয়ার কথা ছিল ১৪ ডিসেম্বর, কিন্তু গত ১০ ডিসেম্বর তা স্থগিত করা হয়।


এছাড়া হাজি মোহাম্মদ দানেশ সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি, চট্টগ্রাম প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বি’ ইউনিটের ছাড়া অন্য ইউনিটে শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য মৌখিক পরীক্ষা স্থগিত রয়েছে।
অন্যদিকে ভর্তি পরীক্ষা শেষ হলেও খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ টেক্সটাইল ইউনিভার্সিটি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি ইউনিভার্সিটি এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে অবরোধের কারণে ভর্তি কার্ক্রম স্থগিত রয়েছে।
পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শুধু ময়মনসিংহের বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি প্রক্রিয়া পুরোপুরি শেষ হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের সদস্য (পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়) অধ্যাপক আতফুল হাই শিবলী মনে করছেন একের পর এক পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় ক্লাস শুরু হতে দেরি হবে, বাড়বে সেশনজট।
যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে সেশনজট ছিল না সেখানেও সেশনজট শুরু হবে জানিয়ে বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “আমাদের কিছুই করার নেই।


আগামীতে পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়া হবে কি না জানতে চাইলে যশোর এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, “এ ধরনের চিন্তাভাবনা এখন আর কেউ করছেন না। ”
অবরোধের কারণে বারবার ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন সিরাজগঞ্জের শিক্ষার্থী আনোয়ার হোসেন।
বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি দিতে ঢাকায় এসেও পরীক্ষা দিতে পারেননি।
“আমি যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিতে আবেদন করেছি সেখানে কবে পরীক্ষা হবে কেউ বলতে পারছে না। ”
অবরোধের কারণে ভর্তি পরীক্ষা না হওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে সেশনজটের সৃষ্টি হবে বলে মনে করছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদও।


বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে তিনি বলেন, “বিরোধী দল ক্ষমতা ছাড়া অন্যকিছু দেখছে না। তবে শিক্ষার্থীদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে নানা কৌশল চালাতে হবে। ”
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালেয়ের সেশনজটও কমে আসছিল জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, “এভাবে চালাতে পারলে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সেশনজট কমিয়ে আনা যেত। তবে ভবিষ্যতে তা কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা হবে। ”
বিরোধী দলের ধারাবাহিক অবরোধের কর্মসূচিতে ক্ষোভ জানিয়ে এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক রেজাউল করিম বলেন, “আমরা এমন রাজনৈতিক কর্মসূচি চাই না।

আমাদের সন্তানদের অনেক ক্ষতি হয়ে যাচ্ছে। ”
যেভাবেই হোক বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে ভর্তি পরীক্ষা নেয়ার দাবি জানান তিনি।

সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.