আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বাংলাদেশের চলচিত্র উন্নয়ন করা সম্ভব। রজণীকান্ত! সত্যজিত! হানিফ সংকেত! সাইখ সিরাজ! শফিক রেহমান! এস.ডি বর্মন! মাকুসুদ! এন্ডু কিশোর! নাসির উদ্দিন শাহ্!.......

সকল পরিবর্তনের সাথে আমি ছিলাম। আবারও এসেছি সেই পরম সত্য নিয়ে। তোমাদের মনের মাঝেই লুকিয়ে আছে সেই মহাকালের শক্তি। আজ তাকে জাগাবার দিন এসেছে।

বাংলাদেশর চলচিত্র আর বুড়িগঙ্গা নদীর দুষন নিয়ে বাংলাদেশর কথিত সচেতন সমাজ দীর্ঘদিন থেকে চিন্তিত।

মজার ব্যাপার হচ্ছে চিন্তার প্রকাশ, কি করা উচিৎ, বাস্তবায়ন আর ব্যবস্থা গ্রহনের আশা প্রকাশ করতে করতে দীর্ঘ দিবস রজনী পাড় হয়ে যাচ্ছে-তো-যাচ্ছেই কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না।

বাংলাদেশের মিডিয়ায় যে সব টকশো হয়। তাতে কারা কারা আমন্ত্রীত অতিথী হবে তা রাজনৈতিক জালেমরা আগে থেকেই লিস্ট দিয়ে নির্ধারণ করে দেয়। একটি স্বাধীন দেশের জন্য স্বাধীন গণমাধ্যম আর স্বাধীন প্রশাসনের কোনো বিকল্প নেই। তারপরও বাংলাদেশর চলচিত্র আর বুড়িগঙ্গা নদীর দুষন নিয়ে ভাবতে গিয়ে অনেক বুদ্ধিজীবীর টাক আর টাকা দুতোই বেশ স্ট্রং হয়েছে কিন্তু কোনো সমাধার হয় নি।



আজ আমি কিছু আইডিয়া বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের উদ্দ্যেশ্যে প্রেরন করছি।
বাংলাদেশের চলচিত্র আজ হুমকির মুখে তাতে কোনো প্রকার সন্দেহ নেই। কেনো এই অবস্থা হয়েছে এবং কারা কারা এই পঙ্গু ফ্লিম ইন্ডাস্ট্রির জন্য দায়ী? এই দুটো বিষয় অবশ্যই বিবেচনা যোগ্য। তবে এখন সবচেয়ে বড় কথা হল বাংলাদেশের চলচিত্রকে এই পরিস্থিতি থেকে কিভাবে একটি ভালো দিকে টেনে উঠিয়ে সয়ংসম্পুর্ণ রূপে বিকাশ লাভ করানো যায়।

আমরা আমাদের নিজের বাচ্চাদের অন্যের বাচ্চার সাথে তুলনা করতে গিয়ে মেধাবী সন্তানের মেধা ধ্বংস করে ফেলি।

ঠিক তেমনি আমাদের এক চলচিত্রকে অন্য চলচিত্রের সাথে তুলনা দিয়ে আরও নষ্ট করে ফেলেছি।

সবার আগে মনে রাখতে হবে একেকটি চলচিত্র একটি করে প্রোডাক্ট। প্রোডাক্টের গুনগত মান না থাকলে চলবে না। গুনগতমান ভালো করা তখনই সম্ভব হবে যখন ভোক্তা প্রোডাক্টের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করবে। আপনি যদি গুনগত মানের কথা শুধু মাথায় রাখেন কিন্তু ভোক্তার কথা না ভাবেন তাহলে কোনো ভাবেই ব্যাবসায় উন্নয়ন সম্ভব না।

মনে রাখবেন লস প্রজেক্টে কেউ ইনভেস্ট করে না। সবাই লাভ চায়।

এই বাস্তবতা উপলব্ধি করে কখনও বা কোনো কালেই আমাদের চলচিত্রের দিকে আলোকপাত করা হয় নি। বাংলাদেশ ফ্লিম ইন্ডাস্ট্রি আজ মোটেও টিকে থাকার কথা না। ধ্বংস হয়ে যাবার কথা কিন্তু হয় নি।

হয়তো কিছু বাংলাদেশী চেতনা বোধে বিশ্বাসী মানুষের জন্য এখনও চলচিত্র শিল্প গরীব হলেও বেঁচে আছে।

আমাদের স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছে ১৯৭১ইং সালে। তার আগে বা পরে কখনও বাংলাদেশের চলচিত্রকে স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় চলতে দেয়া হয় নি। স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পরবর্তী বাংলাদেশের চলচিত্রের একটি সুন্দর সম্ভাবনা অল্প কিছুদিনের জন্য হলেও লক্ষ্য করা গেছে। ঐ প্রগতির সময় আচমকা একটি মানুষের মৃত্যু যেনো বাংলাদেশের প্রগতিশিল এই সম্ভাবনাকে ধ্বংসের প্রথম স্তর হিসেবে স্পষ্ট রূপে প্রতিয়মান।

আর সেই মানুষটি হলে আমাদের পরম শ্রদ্ধেয় জহির রায়হান। আজ যারা সিনিয়ার রাজনৈতিক, মিডিয়াকর্মি, বুদ্ধিজীবী বা কবি সাহিত্যিক! তাদের কাছে স্পষ্ট ভাবে জানতে চাই দেশ স্বাধীন হবার পরেও জহির রায়হান কে কারা গুম করেছিলো? জহির রায়হান কে যারা গুম করেছিলো তারা কারা? আজ সেই মানুষ গুলো কোথায়? বাংলাদেশী জাতি জানতে চায় তাদের একজন সম্ভাবনাময় চলচিত্র বোদ্ধাকে কেনো, কোথায়, কোন কারণে, কার স্বার্থে গুম করে হত্যা করা হয়েছিলো?

যাই হোক, পরবর্তীতে ১৯৯৩ইং থেকে ১৯৯৬ইং এর ৬ইং সেম্পেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশের চলচিত্র শিল্প আর একবার টার্ণ করার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছিলো। কিন্তু ১৯৯৬ইং সালের ৬ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের চলচিত্র ইতিহাসে আর এক কালো অধ্যায় রচিত হয় আর তা হলো “নায়ক সালমান শাহ্” (পারিবারিক নাম ইমন) এর মৃত্যু। সালমান শাহ্ একজন আটিস্ট হয়েও বাংলাদেশের চলচিত্রকে লাভজনক পর্যায়ে নিয়ে গিয়েছিলেন। একজন আর্টিস্ট যখন একটি পুরো শিল্পকেই এগিয়ে নেয়ার জন্য আইকন হিসেবে পরিনত হয় তখন তার সিকুউরিটি ব্যাবস্থা রাস্ট্রের নিতে হয়।



সালমান শাহ্ আত্নহত্যা করার মতো মানুষিকতার ছেলে না। ব্যাক্তি জীবনে তার তেমন বড় কোনো অভাব ছিলো না। তার সাথে পেষাগত জীবনেও তিনি সাফল্যের চুরায় থাকা অবস্থায় আত্নহত্যা করেছেন। সালমান শাহ্ মৃত্যুর বিষয়টি পর্যবেক্ষন করলে দেখা যায় সালমান শাহ্ এর স্ত্রী এই বিষয়টি স্পষ্ট করতে পারতেন। কিন্তু সময়ের বাঁকে সালমান শাহ্ এর স্ত্রী আবার বিয়ে শাদী করে দিব্যি সুখে সংসার করছেন।

আর বাংরাদেশের চলচিত্র শিল্পে কাজ করে যাদের আজ আরও প্রতিষ্ঠিত হবার কথা তাদের বাজার করার পয়সা পর্যন্ত নেই। আমি আবারও স্পষ্ট রূপে জানতে চাই সালমান শাহ্ কে মার্ডার করেছিলো কারা? সালমান শাহ্ কে মার্ডার করার কারণ কি ছিলো?

চলচিত্রের সকল কলাকুশলী, আর্টিস্ট, ডিরেক্টর, ইনভেস্টর, সিনেমা হল কর্তৃপক্ষ, ট্যাকনিক্যাল টিমিলে ঐক্যবন্ধ থেকে সামনে অগ্রসর হয়ে কাজ করতে পারলে আজ চলচিত্রের এই দশা হতো না।

আমাদের বুঝতে হবে চলচিত্র শিল্প একটি জাতির সব কালচারকে ফুটিয়ে তোলার সবচেয়ে বড় মাধ্যম। চলচিত্রের মাধ্যমে জনগনকে সচেতন করা সহজ। সাধারণ জনগন চলচিত্র দ্বারা প্রভাবিত হয়।

বাঙালী চেতনা বিকাশে বাংলাদেশ ফ্লিম ইন্ডাস্ট্রি অনেক ভূমিকা এখনও রাখতে পারে। বালাদেশের সাংস্কৃতির মূল মর্মকথা সাধারণ মানুষকে পৌছানোর জন্য এখনও চলচিত্রকে সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা সম্ভব। যেহেতু ফ্লিম ইন্ডাস্ট্রি পুরোপুরি শেষ হয় যায় নি সুতারং এখান থেকে আবার শুরু করতে হবে। এবারের এই শুভ উদ্দ্যোগ নেয়া হবে শুধু মাত্র ফ্লিম ইন্ডাসট্রিকে নিজ পায়ে দাঁড়া করানোর জন্য। শুধু একবার যদি বাংলাদেশের চলচিত্রকে জাগানো যায় তাহলে পৃথিবীর সব চেয়ে সুন্দর চলচিত্র হবে বাংলাদেশের চলচিত্র।

বিশ্বের সবচেয়ে বড় সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি হবে বাংলাদেশের সিনেমা ইন্ডাস্ট্রি। বাংলাদেশের চলচিত্র সারা বিশ্বে রাজত্ব করে বেড়াবে। কিভাবে এই উন্নয়ন প্রক্রিয়া করা যায় তা একটু পরে বলছি তবে এই প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য অপেক্ষা না করে এখনই শুরু করে দেয়া ভালো। এমনিতেই বাংলাদেশের বেশীর ভাগ জিনিসই হবে হবে বলে হয়নি। “হবে হবে” তে কাজ হবে না শুরু করার পর “হবে হবে” করতে হবে।


যাই হোক, আমরা যদি হলিউড বা বোম্বের চলচিত্রের সাথে আমাদের চলচিত্রকে তুলনা দেই তাহলে সেটা হবে দারুন রকমের ভুল। কারন হলিউড, ইরান, পোলিশ, হলিউড মুভি ওয়াল্ডওয়াইড প্রিমিয়ার হয়। ওদে ইন্ডাস্ট্রি রান করা। প্রচুর ভিউয়ার আছে। প্রচুর স্পন্সর আছে।

প্রচুর ডিমান্ড আছে।

যদি বোম্বের শুরুর দিকে তাকান তাহলে আমরা একটি ভালো শিক্ষা পেতে পারি। যেমন ধরুন মোহাম্মদ রফি যখন প্লে ব্যাক সিঙ্গার হিসেবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন তখন কিন্তু রফিকে বড় রকমের চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হয়েছিলো। মোহাম্মদ রফি যখন তার সংগীত জীবন শুরু করেন তখন কিন্তু তার টার্গেট প্লে-ব্যাক সিঙ্গার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবার জন্য ছিলো না। মোহাম্মদ রফি যখন প্লে-ব্যাক সিঙ্গার হিসেবে আসে তখন মোহাম্মদ রফি অসাধারণ সংগীত প্রতিভা দেখে তৎকালীন বিখ্যাত সংগীত প্রতিভারা আফসুস করেছিলেন।

এমনকি মোহাম্মদ রফি কে টিটকারী পর্যন্ত করা হয়েছিলো। তৎকালীন সংগীত বোদ্ধাদের ধারনা ও অনুভুতি ছিলো এমন “হায় হায় শিল্পীদের জাত গেলো। ছেলেটা চলচিত্রে গান গেয়ে মেধা নষ্ট করে ফেলছে। আহারে এমন সুন্দর কন্ঠ আর ও গজল ভজন রেখে চলচিত্রে গান গায়। ছিঃ ছিঃ।

মোহাম্মদ রফি ছিলেন পাকিস্তানী। পাকিস্তানী সাংস্কৃতিতে গৌরব করা মতো যদি কিছু থেকে থাকে তাহলে তা হল গজল।
যাই হোক, মোহাম্মদ রফিকে অনেকে প্রস্তাব করেছিলো চলচিত্রের প্লেব্যাক না করে শাস্ত্রীয় সংগীতে প্রত্যাবর্তণ করতে। কিন্তু তিনি জীবনে বড় চ্যালঞ্জ হিসেবে প্লে-ব্যাক সিংগার হিসাবেই প্রতিষ্ঠিত করতে চেয়েছিলেন। মোহাম্মদ রফিকে আজকের মোহাম্মদ রফি উঠতে যারা সাহায্য করেছেন তাদের মধ্যে অন্যতম প্রধান হলেন বাংলাদেশের সন্তান শচীন দেব বর্মন (কৃকেটার শচীন টেন্ডুলকারের “শচীন” নামটি রেখেছিলেন শচীনের বাবা আর তা শচীন দেব বর্মনকে শচীনের বাবা অনেক পছন্দ করতেন বলে)।


মোহাম্মদ রফির সাথে যুক্ত হয়েছেন আর এক বাংঙালী কিশোর কুমার, লতা মুঙ্গেশকর (যার মাতৃভাষা ছিলো মারাঠী)। শুধু মোহাম্মদ রফির গান গেয়েই আজও ভারতের হাজার হাজার শিল্পী তাদের জিবিকা নির্বাহ করে! মোহাম্মদ রফি আর শচীন দেব বর্মন যদি ঐ সময় স্রোতের বিপরীতে সাঁতার না দিতেন তাহলে আমরা আজ বোম্বে ইন্ডাস্টির আজকের প্রতিষ্ঠিত রূপ দেখতাম না। এরই ধারাবাহিকতায় এলেন উদিত নারায়ন (নেপাল), কুমার শানু, অলকা, কবিতা, অনুরাধা সহ আরও অনেক কে আমরা পেয়েছি। আর এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই আজকে এআর রহমান, আনু মালিক, আনন্দমিলিন্দ প্রমুখ এর প্রতিভার মূল্যায়ন করা সম্ভব হচ্ছে।

পৃথ্বীরাজ কাপুর ছিলেন থিয়েটার কর্মী।

তিনি চলচিত্র শিল্পে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেন। পৃথ্বীরাজ কুপুরের একটি বিখ্যাত ক্যারেকটার হলো মোঘল-এ-আজম ছবিতে আকবরের ক্যারেকটার। পৃথ্বীরাজ কাপুর এর বড় ছেলে রাজ কাপুর (শাম্মী কাপুর এর বড় ভাই। শশী কাপুর, রণধীর কাপুর, ঋষী কাপুর এর বাবা, কারিশমা, কারিনা, রণবীর কাপুরের দাদা) বোম্বে ফ্লিম ইন্ডস্ট্রিতে আর একটি বিপ্লব ঘটান।

অভিনেতা রাজ কাপুর কে যারা দেখেন তারা বোঝেন না যে রাজ কাপুর বোম্বে ফ্লিম ইন্ডাস্ট্রিকে ট্রেড এ পরিনত করার জন্য অন্যতম প্রধান।

একজন রাজ কাপুরের উদ্দোগ ও ব্যবসার প্রতি মনোযোগ তার পরিবার ও বংশ পরিক্রমায় সবাইকে স্টার বানিয়ে একটি চলচিত্র শিল্পকে বিশ্বের বুকে অন্যতম করে প্রতিষ্ঠিত হতে সাহায্য করেছেন। যার ধারাবাহিকতা আজও আছে। একটি ইন্ডাস্ট্রি ভালোভাবে দাঁরা করানোর জন্য অনেক ত্যাগের প্রয়োজন হয়।

যেহেতু বোম্বে ইন্ডাস্ট্রি সফলতা পেয়েছে। আমাদের কিছু নীতি ও ভাবনার স্টাইল পরিবর্তন করতে পারলে বাংলা চলচিত্র বিশ্বের সেরা ফ্লিম ইন্ডাস্ট্রিতে রুপান্তরিত হতে পারে।

কারণ আমাদের মেধা আছে। আমাদের একটি বড় তরুন সমাজ আছে। আজও আমাদের মধ্য অনেক গুণী ও সারাজীবন ধরে শুধু মিডিয়া লাইনে ত্যাগই করে এসেছেন এমন মানুষ আছেন।

আমাদের চলচিত্র উন্নয়নে যা যা পদক্ষেপ জরুরী তা আপনাদের উদ্দ্যেশে পেশ করছি।

১।

বাংলাদেশের চলচিত্রের প্রধান সমস্যা হলো। চলচিত্র শিল্প অলাভজনক। এর থেকে উত্তোরনের জন্য বাংলাদেশ সর্বপ্রথমে কিছু বেসরকারী লিমিটেড কোম্পানীকে চলচিত্র প্রদশণ ও মার্কেটিং এর দায়িত্ব দিতে হবে। তবে এর প্রধান শর্ত থাকবে যে কোম্পানীকে এই দায়িত্ব দেয়া হবে তাদের অন্ততপক্ষে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় ৩০টি সিনেপ্লেক্স বা সিনেমা হল থাকতে হবে। যাতে করে একটি কোম্পানী তাদের ব্যবসা প্রসারের জন্য বিভিন্ন অফার ও বিজনেস প্রমোশনে অর্থব্যায় করেও লাভ করতে পারবে।



২। চলচিত্রের উপর থেকে কমপক্ষে ১০ বছরের জন্য সকল প্রকার ট্যাক্স ও ভ্যাট উঠিয়ে দিতে হবে। ব্লাক মানি সাদা করার নামে যদি শেয়ার বাজারে ও মৎস খাতে ইনভেস্টের সুযোগ দেয়া যায় তাহলে ব্লাক মানি সাদা করার জন্য ফ্লিম ইন্ডাস্ট্রিতে সুযোগ দিলে অসুবিধা কোথায়? বাংলাদেশে যে ব্লাক মানির ছড়াছড়ি তা আজ কেউ অস্বীকার করতে পারবেন না। একটা সময় ছিলো যখন ব্লাক মানির নাম উচ্চারণও করা যেতো না। তারচেয়ে এখন ভালো সময়।



৩। বাংলাদেশের আলাদা একটি নিজস্ব সাংস্কৃতি আছে। যা বিশ্বের সেরা সাস্কৃতি। এই সাহিত্য ও সাংস্কৃতির ভিতরে অনেক মুক্তো আছে যা থেকে আমরা যদি হাজার বছর ধরে মালা গাথি তাতেও শেষ হবে না। আমরা অন্যদেশের সিনেমাকে কেনো নকল করতে যাবো? বাংলাদেশের মানুষের কি একটি ভালো গল্পের অভাব? বাংলাদেশের তরুনরা কি একদম মেধা বুদ্ধিহীন?

৪।

চলচিত্র প্রযোজনা সংস্থা বা কোনো ব্যাক্তি উদ্দ্যোগে চলচিত্র বানিয়ে তা ঐ দ্বায়িত্ব নেয়া চলচিত্র প্রদর্শন ও মার্কেটিং কোম্পানীর কাছে ন্যায্য জয়েন্ট ভেঞ্জারে ব্যবসার সুযোগ থাকতে হবে। যাতে করে অনেকেই একটি ভালো চলচিত্রর জন্য ইনভেস্টমেন্ট করতে আগ্রহী হবে আবার লাভও হবে।

৫। একজন চরিত্র অভিনেতা বা আর্টিষ্ট এর প্রধান কাজ হল নিজের সর্বোচ্চ মেধা খাটিয়ে অভিনয় করা। রাজণীতি বা নির্বাচন করা না।

পেশা থেকে রিটার্ডের আগে কোনো প্রকার সক্রিয় রাজনীতিতে অংশগ্রহন করা যাবে না। শিল্পী সমিতি, প্রযোজক সমিতি, পরিচালক সমিতির নামে রাজনৈতিক দলের মদদে নিজেরা লুটে পুটে খাবার কৌশল বন্ধ করতে হবে। এই সমিতির নাম করে নতুন মেধারা তাদের মেধা কাজে লাগানোর সুযোগ পায় না। আমাদের বুঝতে হবে আগে মেধা তারপর যন্ত্রপাতি। আর যন্ত্রপাতি কেনার নাম করে টাকা পয়সা চুরি করলে হবে না।

যন্ত্রপাতি কেনার আগে যন্ত্রপাতি চালাবার মতো লোকবল তৈরী করতে হবে।

৬। এফডিসি নামক সরকারী প্রতিষ্ঠানটি চালাবে সরকারী ভাবে নিয়োগ পাওয়া একজন ভালো বিশ্বমানের সিইও। (বর্তমান সময়ে এই বিষয়ে সবচেয়ে যোগ্য বলে হচ্ছে শফিক রেহমান সাহেব কে)। সিইও এর ম্যানেজম্যান্টে ডিরেক্টর প্যানেলে থাকবে ব্যবসায়ী সমাজ এর প্রতিনিধী, আগের ও নিউ জেনারেশন এর সংগীত বোদ্ধা, ড্যান্স স্পেশালিস্ট, সাউন্ড ইঞ্জিনিয়ার, ক্যামেরা চালানে পারদর্শী ক্যামেরাম্যান ও ক্যামেরার ট্যাকনিক্যাল বিষয় জানা বিশেষজ্ঞ, লাইটিং এক্সপার্ট, বিশ্ব মানের সেট সাজাতে সক্ষম এমন প্রতিভা, কৃষি বিশেষজ্ঞ, আইটি বিশেষজ্ঞ, থ্রিডী এনিমেটর, চিত্রশিল্পী, কন্ঠশিল্পী, কার্টুনিস্ট, কবি-সাহিত্যিক, নাট্যকার, স্কৃপ্ট রাইটার, মেক্যাপ স্পেশালিস্ট, ভিডিও এডিটর প্রমুখ।


এরাই চলচিত্র সেন্সর করবেন। তবে একটি বিষয় মনে রাখতে হবে এই সব এক্সিকিউশনের দায়িত্বে যারা থাকবে তারা শুধু মান নিয়ন্ত্রন করবেন। কোনো প্রকার দূর্ণীতির আশ্রয় নেয়া যাবে না। নিজের পছন্দ মতো কলা কৌশলী বা আটিস্ট নির্ধারণে কোনো প্রযোজনা সংস্থা বা ব্যাক্তিকে বাধ্য করা যাবে না।

সেন্সরের কিছু নিয়ম কানুন পাল্টাতে হবে।

যেমন ধরুন ধুমপান। ক্যারেকটার ফুটিয়ে তোলার স্বার্থ অনেক সময় ধুমপান নামক তুচ্ছ ব্যাপারটিও ইম্পোর্টেন্ট হয়ে ওঠে। শিশু বা মানুষকে ধুমপান থেকে বিরত রাখতে ধুমপান করার দৃশ্য মানুষকে দেখানো যাবে না এটা কোনো অযুহাত হতে পারে না। ধুমপান বন্ধ করার অনেক উপায় আছে। কিন্তু একটি ক্যারেকটারকে স্পষ্টরূপে ফুটিয়ে তুলতে ধুমপানের দৃশ্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ হতে পারে।

সেক্ষেত্রে সাবটাইটেলে “ধুমপান স্বাস্থের জন্য ক্ষতিকর” কথাটি তুলে ধরা যায়।

৭। আর একজন সত্যজিতকে খুঁজতে গিয়ে আমরা অনেক প্রতিভাবান তরুন সত্যজিৎদের প্রতিনিয়ত জানে মেরে ফেলেছি। ভালো মেধাদের মেধা বিকাশে সুযোগ দিতে হবে। এই সুযোগ দেয়ার প্রক্রিয়া যত সহজ হয় ততো ভালো।

যেমন ধরুন মফস্বলের ছেলেপানদের মধ্যে অনেকের মেধা আছে। গল্প আছে। সেই গল্পগুলোকে নিজের নাম দিয়ে চালিয়ে দিলে হবে না। আমাদের চলচিত্র হবে একদম আমাদের মতো তামিল বা বোম্বে থেকে কাহিনী ধার করতে হবে এমন কোনো কথা নেই।

৮।

নাটক ও সিনেমার সহকারী পরিচালকদের মধ্যে যাদের মেধা আছে তাদের সুযোগ দিতে হবে। তাতে করে এই সময়ে তারা অনেক ব্যাপারে পরিচালকের চেয়েও দক্ষ। কারণ বাংলাদেশে একজন পরিচালকের নাম পরিচিত হলেই সে অলস হয়ে যায়। সহকারী পরিচালক দিয়ে কাজ করিয়ে তারপর নিজের নাম বসাতে এদের একটুও বিবেকে বাধে না। হায়রে সমাজ ব্যবস্থা! হায়রে অধপতন!

৯।

নাকট ও সিনেমায় নতুন নতুন মুখদের নিয়ে আসতে হবে। যাতে করে নতুনরা ভালোমানের কাজ উপহার দিতে পারে। একজন সত্যিকারের স্টার হতে হলে অনেক সাধনা করা লাগে কিন্তু বাংলাদেশের ছেলেমেয়েদের প্রথম স্তর অর্থাৎ মিডিয়ায় চানস পাওয়া লেভেল পাড়ি দিতে গিয়েই ডুবে বেশীরভাগ মেধা ডুবে মারা যায়। মেধা দেখানোর সুযোগ না পেলে কিভাবে মেধার বিকাশ হবে?

দেখুন একজন রজনীকান্ত, কমল হাসান, নাসির উদ্দীন শাহ্, শাহরুখ খান, আমীর খান, সালমান খান, নাগ-অর্জুনা, কতো যাচাই বাচাই করে ক্যারেক্টার করেন। কিংবা একজন মাধুরী বা শ্রদেবী আজও গ্রহনযোগ্য।



একজন ভালো অভিনেতা হলে চেহারা কোনো ফ্যাক্টর না। যেমন দেখুন নানা পাটেগার, অমিতাভ বচ্চন, বিপাশা বসু বা আমাদের উত্তম কুমার কে। যে তার সহজাত কিছু অভ্যাসকে সুন্দর করে ফুটিয়ে তুলতে পারেন সেই পারেন ভালোমানের অভিনেতা হতে।
একজন অভিনেতা তার অভিনয়ের মাধ্যমে তার ব্যাক্তিত্বকে ফুটিয়ে তোলেন চেহারা নয়।

১০।

প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় বড় একটি পরিবর্তন আসা জরুরী যা নিয়ে আগের পোস্টে আলোচনা করেছিলাম। ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে আমরা দেখি শুধু আর্টিস্টদের নিয়েই বেশী বেশী নিউজ করে। এখন থেকে ক্যামেরাম্যান, মেকাপম্যান, সাউন্ড স্পেশালিস্ট, ভিডিও এডিটর, লাইটম্যান, ড্যান্সগ্রুপ, ডামি, স্টান ম্যান সহ সবাইকে সমান ভাবে গুরুত্ব দিয়ে নিউজ করুন দেখবেন তাতে করে আমাদের ছেলেরা প্রেরনা পাবে। বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যাবস্থা অত্যান্ত খারাপ। এই পাঠ্য বইয়ের পড়া নিয়ে যদি সংবাদপত্র গুলোর পাতা ভরে যেতে পারে তাহলে ক্যামেরা, লাইট, ফাইট, নিয়ে বা মিডিয়ার বিভিন্ন শাখার ট্যাকনিক্যাল জ্ঞান বৃদ্ধিতে পত্রিকার একটি পেইজ কভারেজ দেওয়া কি অসম্ভব।



বাংলাদেশের ছেলেপানদের মেধা বাংলাদেশের মাটির মতো উর্বর। কোনো কিছু একবার দেখলেই হয়ে যায়। বাচ্চাদের কারিগরি জ্ঞানকে প্রসমিত করার জন্য গনমাধ্যমকে এগিয়ে আসতে হবে।

১১। বাংলাদেশ এর চলচিত্রে একই লোকেশন অর্থাৎ এফডিসির ইনডোর বেশী ব্যবহার করা হয়।

এরচেয়ে বরং নাটকের স্পট গুলোও ভালো। সবচেয়ে ভালো হলো একজন গল্পকার যখন গল্পটি তৈরি করেন তার মনের মতো পরিবেশকে লোকেশন হিসেবে বেছে নেয়া।

১২। বাংলাদেশের চলচিত্রের কারিগরি প্রশিক্ষণ সেন্টার গুলো খুব দূর্বল মানের। বেশীর ভাগ টিচারই একাডেমিক ভাবে শিক্ষিত না।

তাই আমাদের বুঝতে হবে যে একজন ভালোমানের স্টারের থেকে একজন নির্দেশক অনেক বেশী অভিনয় শেখাতে সক্ষম।

১৩। বাংলাদেশের দর্শকদের বিশ্লেষন করলে দেখা যায় যে, যারা বড়লোক বা ধণী শ্রেণীর দর্শক তারা গরীব বা মধ্যবিত্ত চরিত্রের চলচিত্র দেখতে বেশী পছন্দ করে। আবার যারা গরীব শ্রেণী তারা বড় লোক ক্যারেকটারের সিনেমা দেখতে বেশী পছন্দ করেন। তাই আমাদের এমন কিছু সিনেমা তৈরী করতে হবে যার প্রতিটি সিকুয়েন্স হবে বুদ্ধিদিপ্ত ও আকর্ষনীয়।

অনেক বেশী ব্যায় করলেই যে অনেক ভালো সিনেমা হবে এমন কোনো কথা নেই।

মফস্বলের থিয়েটার কর্মীরাও ভালো কিছু করে দেখাতে পারে।

১৪। গ্রাম বাংলার সংগৃহীত গান, মরমী গান, দেশের গান কিংবা রবিন্দ্র সংগীত ও নজরুল গীতি গান গুলোকে চলচিত্রের মাধ্যমে নিয়মিত প্রকাশ করতে হবে। তাতে করে বাংলাদেশের মানুষের শিল্প-সাহিত্য ও সুন্দরকে অনুভব করার শক্তি আরও বাড়বে।


নতুন প্রজন্ম যদি নিজেদের মতো করে আগের গান গুলোকে প্রকাশ করে তাহলে বড় বড় শিল্পী বলে যারা নিজেদের দাবি করেন তাদের আপত্তি বা বিরক্তি না হয়ে স্বাগতম জানাতে হবে। মনে রাখবেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, নজরুল ইসলাম বা বংলার মেধাবীরা কারও ব্যাক্তিগত বা গোষ্ঠীগত সম্পদ না বরং এরা বাংলাদেশের সব মানুষের সম্পদ। তাদের গান সব মানুষ নিজের মতো করে গাওয়ার অধীকার রাখেন।

হেমন্ত মুখপাধ্যায়ের গাওয়া যে রবীন্দ্রসংগীত এ্যালবামটি সুর বিকৃত করার দ্বায়ে নিষিদ্ধ করে দেয়া হয়েছিলো সেই হেমন্ত কিন্তু নিজ গুনে প্রতিষ্ঠিত। কিন্তু তারা যখন এ্যালবামটি নিষিদ্ধ করেছিলো তাদের নাম আমরা ভুলে গেছি।



মাকসুদ ভাই একটা গান গেয়েছিলেন বিটিভির “শুভেচ্ছা” নামক ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে “নিজেরই দেশ, হতে পারে অবহেলিতের দেশ, তবুও আমার বাংলাদেশ”। এই গানটি তখনকার স্কুলপড়ুয়া তরুনের হৃদয়কে নাড়া দিতে সক্ষম হয়েছিরো। মনে রাখবেন যুগে যুগে নতুন মেধা আসে হয়তো আপনার সাথে তার সামঞ্জসতা করতে কষ্ট হবে তবুও নতুন মেধাকে মেনে নিতে শিখুন।


১৫। বাংলা চলচিত্রের ড্যান্স এ একটি বড় ধরনের পরিবর্তন নিয়ে আসা দরকার।

বাংলাদেশে অনেক মেধা আছে তাদের মিডিয়ায় আসতে দেয়া হয় না। ড্যান্স একটি ন্যাচারাল ও স্ট্রং করে নিজেকে প্রকাশ করার ভাষা। যা অনেক মানুষকে আবেগতারিত করে দিতে পারে। মর্ডান আর ক্লাসিকের নামে ড্যান্সকে ভাগ না করে বরং ফিউশন ধর্মী নতুন আইডিয়া গ্রো করুন। দেখবেন আমাদের বাংলাদেশের কোনো গ্রামে আছে বিশ্বের সেরা ড্যান্সার শুধু তাকে বিকাশিত হবার সুযোগটুকু দিয়ে দেখুন।



ড্যান্সের জন্য করিওগ্রাফি অনেক বড় একটি ব্যাপার। বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত ভালো একজন করিওগ্রাফার দেখলাম না। আপনারা শুনে অবাক হবেন মফস্বল শহরে এমন কিছু মেধা দেখা যায় যারা ভালোমানের করিওগ্রাফী করতে সক্ষম।

তারা হয়তো গবিন্দ, প্রভুদেবা, জ্যকশনদের দেখে শিখেছে তারপরও সতন্ত্র কিছু প্রকাশ করার মেধা বাংলাদেশের বচ্চা ও তরুনদের আছে। আজ তাদের জাতির সামনে সুযোগ দিতে হবে।



১৬। চলচিত্রের গানকে একদম নতুন আঙ্গীকে সাজাতে হবে। সব মানুষের রূচিবোধ সমান না। তাই প্লে-ব্যাক করার ক্ষেত্রে নতুন ও পুরাতনদের সমান সুযোগ দিন। বাংলাদেশে একটা সময় সিনেমার গান মানেই ছিলেন “এন্ড্রু কিশোর”।

এন্ড্রু কিশোর অবশ্যই ভালো একজন সিংঙ্গার। কিন্তু ঐ সময়ে আরো অনেক শিল্পীকে যদি চলচিত্রে গাওয়ার সুযোগ দেয়া হতো তাহলে আমাদের চলচিত্র অবশ্যই ভালো হতো। আগের ভুল থেকে শেখার আছে। সেই শিক্ষাকে কাজে লাগিয়ে নতুন ও পুরাতনদের সমান সুযোগ দিন।

১৭।

ইদানিং বাংলাদেশের বুদ্ধিজীবী নামক পরজীবীরা ভারতীয় চলচিত্র আমদানী রফতানী নিয়ে মেতে থাকেন। আরে বন্ধু যেখানে চলচিত্রই সংকটে তখন আর আমদানী রফতানীর কথা ভেবে শুধু শুধু সময় পার করলে হবে না। ভারতের সিনেমা বা অন্য যে কোনো দেশের সিনেমা দেখা খারাপ না। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের আবেগকে গুরুত্ব দিয়ে সিনেমা বানাতে হবে। সরকারী পেশাজীবী ও আমলাদের বাধ্যতামুলক সপ্তাহে অন্তত একটি সিনেমা দেখতে বাধ্য করতে হবে।

টেলিভিশনে সিনেমা দেখানো হয়। বাংলাদেশে শুধু চলচিত্র প্রদর্শনের জন্য কয়েকটি টিভি চ্যানেল দরকার। যারা একটি সিনেমাকে বড় অংঙ্কের টাকা দিয়ে প্রদর্শনের অনুমতি নিবে। প্রয়োজনে মোবাইল অপারেটর কোম্পানী যারা জনগণের টাকাকে তেজপাতার মতো করে নিয়ে যাচ্ছে তাদের বিশেষ অফারের মধ্যে চলচিত্র দেখা ও স্পন্সর করার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।

যেমন ধরুন ইমপ্রেস টেলিফিল্ম এর কর্ণধার ফরিদুর রেজা সাগর ও শাইখ সিরাজ সাহেব ব্যবসা বেশ ভালো বোঝেন।



শাইখ সিরাজ সাহেব ইচ্ছে করলে আমাদের আরও অনেক কিছু দিতে পারতেন। কিন্তু তিনি নিজে একাই শুধু বাংলাদেশের কৃষির প্রচারক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। অন্যকেউ তার চেয়ে প্রভাব নিয়ে বাংলাদেশের কৃষিকে সত্যিকারের উন্নয়নের পথে নিয়ে যাক তা চাননি। অন্যের আইডিয়া চুরে করে মানুষ অনেক কিছু করে। সিরাজ ভাইকে আমি অনুরোধ করবো আপনি যে উদ্দম নিয়ে বিটিভিতে “মাটি ও মানুষ” করতেন।

সেই উদ্দম নিয়ে আবারও কাজ করুন। চ্যানেলের মালিক হিসেবে নয়। মনে রাখবেন মানুষের ক্ষমতা তার মনে থাকে অর্থবিত্তের মধ্যে নয়। কিছু মানুষ একটা পর্যায়ে গিয়ে বিখ্যাত হয়ে যাবার পর স্বার্থপর হয়ে যায়। শাইখ সিরাজ সাহেব চাইলে উন্নত কৃষি ব্যবস্থার উপর একটি সিনেমা নির্মান করতে পারতেন।

কিন্তু তিনি তা করার প্রয়োজন বোধ করেন নি।
এক্ষেত্রে হানিফ সংকেত সাহেব সিমীত পরিসরে হলেও অনেক দ্বায়িত্ব বোধের পরিচয় দিয়েছেন। হানিফ সংকেত জাহিদ হাসানকে দিয়ে একটি শিক্ষিত ছেলের কৃষিতে সাফল্য নাটকের মাধ্যমে ফুটিয়েছেন। হানিফ সংকেত সাহেব বাংলাদেশের কিছু কিছু বিবেকহীন মানুষ তাদের মিডিয়ায় তুলে দিয়েছিলেন ভালো উদ্দেশ্যে। কিন্তু বাস্তবতা যে বড় নির্মম।

আজ যে মমতাজ এত এত টাকার মালিক, এই টাকার উৎস শুধু কি গান? কোন যোগ্যতায় মমতাজ বাংলাদেশের সংসদ সদস্য নির্বাচিত হতে পারেন?

বাংলাদেশ ফ্লিম আর্কাইভ আর বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্র একসাথে কাজ করলে বাংলাদেশের একটি প্রজন্মকে চলচিত্রের প্রতি আরও আগ্রহী করা সম্ভব। বাংলাদেশের প্রতিটি পাবলিক লাইব্রেরীতে চলচিত্র বিষয়ক বই থাকা দরকার।

সৈয়দ শামসুল হক সাহেব ইদানিং শুধু বক্তৃতা দিয়ে বেড়ান। সৈয়দ শামসুল হককে সবার আগে নিজের অহংকারকে ত্যাগ করতে হবে। সৈয়দ শামসুল হক আমাদের সম্পদ।

তার থেকে আমরা অনেক অজানা অধ্যায় পেতে পারি। তিনি একসময় বিবিসিতে কাজ করেছিলেন। কিন্তু পরে তিনি বৃটিশ দালালে পরিনত হয়েছেন।

বন্ধুগন! যতো চিৎকারই করি না কেনো ঐ সব বাজে ভন্ড রাজনীতিক নামের কলঙ্কদের সমাজ থেকে চিরতরে বিতাড়িত করতে না পারলে আমাদের যে বাঙালী চেতনার বিকাশ লাভ করা সম্ভব হবে না। সবার আগে দূর্নীতি মুক্ত স্বাধীন বাংলাদেশ গড়তে হবে।

আপনি আমি সত্যের আলোয় নিজেকে উজ্জ্বল করে মেলে ধরতে পারলে বাংলাদেশকে বিশ্বের সেরা শক্তিরূপে রূপান্তর করা সম্ভব।



অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.