২৯ ডিসেম্বর গণতন্ত্র রক্ষায় দেশের আমজনতাকে ঢাকা অভিমুখে যাত্রার জন্য অনুরোধ করেছে বিরোধী দল। আগামী রবিবার কী হবে, এ নিয়ে শঙ্কিত দেশের মানুষ। আসন্ন নির্বাচন ও জনগণের নিরাপত্তার জন্য অবশ্য সেনাবাহিনী নামিয়েছে সরকার। দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে জনগণ যেমন শঙ্কিত, তেমনি চিন্তিত ক্রিকেটপ্রেমীরাও। ক্রিকেটপ্রেমীদের চিন্তা দেশের ক্রিকেটকে ঘিরে।
আগামী জানুয়ারিতে শ্রীলঙ্কা সিরিজ, ফেব্রুয়ারি-মার্চে এশিয়া কাপ এবং মার্চ-এপ্রিলে টি-২০ বিশ্বকাপ। আসর তিনটি আয়োজনে যাতে কোনো সমস্যার সৃষ্টি না হয় তা মনেপ্রাণে চাইছেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। অবশ্য এ দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরা রাজনৈতিক জটিল অবস্থার চেয়েও বেশি চিন্তিত ভারতীয় মিডিয়ার আগাম সংবাদ প্রকাশে। ভারতীয় মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে টি-২০ বিশ্বকাপের দুই ভেন্যুর নাম এবং নিরাপত্তাহীনতার জন্য এশিয়া কাপ ও টি-২০ বিশ্বকাপে খেলবে না পাকিস্তান। এ ছাড়া নিরাপত্তাহীনতার জন্য টুর্নামেন্ট দুটি স্থানান্তরিত হতে পারে।
বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন ও এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলের (এসিসি) সিইও সৈয়দ আশরাফুল হক এশিয়া কাপের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেছেন গতকাল। আলোচনা শেষে বিসিবি সভাপতি স্পষ্টভাবে জানিয়েছেন, তারা শঙ্কিত নন এবং আস্থাবান টুর্নামেন্ট দুটি আয়োজনে।
ব্যক্তিগত কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন এসিসির সিইও। গত পরশু স্থানীয় মিডিয়ায় জানিয়েছিলেন, যদি এশিয়া কাপ ঢাকায় না হয়, তাহলে সরে যেতে পারে টি-২০ বিশ্বকাপ। তার সেই মন্তব্যের পর আরও শঙ্কা বেড়েছে ক্রিকেটপ্রেমীদের।
গতকাল বিকালে আশরাফুল হক দেখা করেছেন বিসিবি সভাপতির সঙ্গে। দুই ক্রিকেট ব্যক্তিত্বের আলোচনার পর বিসিবি সভাপতি মিডিয়াকে বলেছেন, '৪ জানুয়ারি এসিসির সভায় এশিয়া কাপ নিয়ে আলোচনা হবে। বাংলাদেশের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে আলোচনা হতে পারে সেখানে। আমরা আলোচনা করেছি কোন কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা হওয়া উচিত। টুর্নামেন্টের বিষয়ে আমাদের প্রস্তুতি নিয়ে রাখা উচিত।
' ভারতীয় মিডিয়ায় ভেন্যুর নাম প্রকাশিত হয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, 'মিডিয়ায় দেখেছি বিকল্প কয়েকটি ভেন্যুর উল্লেখ করা হয়েছে। এ নিয়ে আমার সঙ্গে কারও কোনো ধরনের কথা হয়নি। এ রকম ঘটনা ঘটার কোনো কারণও দেখি না আমি। তবে বিকল্প ভেন্যু তো থাকবেই।
আমি একটা কথা পরিষ্কার করে বলতে চাই- এখন ও গত কিছু দিনের মধ্যে এমন কোনো ঘটনা ঘটেনি যে এখানে খেলা না হওয়ার পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। '
রাজনৈতিক পরিস্থিতি জটিল। এমন অবস্থায়ও কোনো দলের সঙ্গে এখন পর্যন্ত কথা বলেনি। এটাকে এখন জরুরিও মনে করছেন বিসিবি সভাপতি, 'ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করা হয়নি। রাজনৈতিক পরিস্থিতি যদি এমন থাকে, তাহলে অগ্রাধিকার পাবে নিরাপত্তা।
আমরা আইসিসির গাইডলাইন অনুসরণ করেই নিরাপত্তাব্যবস্থার আয়োজন করেছি। তবে আমাদের নিজস্ব পরিকল্পনা আছে। আমরা একদম ফুলপ্রুফ নিরাপত্তাব্যবস্থার পরিকল্পনা করেছি। এসিসির সভায় যাওয়ার আগে ৩০ ডিসেম্বরের মধ্যে নিরাপত্তার পরিকল্পনাটা সম্পন্ন করব আমার। এ পরিকল্পনা অংশগ্রহণকারী দেশগুলোকেও পাঠাব।
'
১৯৮৮ সালে দ্বিতীয় এশিয়া কাপের সময় এরশাদবিরোধী আন্দোলনে বিসিবির কর্মকর্তারা দেখা করেছিলেন শেখ হাসিনা ও বেগম খালেদা জিয়ার সঙ্গে। দুজনই খেলার সময় কোনো আন্দোলন থাকবে না বলে অঙ্গীকার করেছিলেন। এবারও এসিসির সিইও চাইছেন টুর্নামেন্টগুলো সঠিকভাবে সম্পন্নে সরকার ও বিরোধী দলের সঙ্গে যোগাযোগ করতে।
বিসিবি সভাপতিও চাইছেন খেলাগুলো চলাকালে কোনো আন্দোলন যেন না থাকে, 'বিরোধী দলকে আমরা একটি চিঠি দিচ্ছি, যাতে ক্রিকেটকে যেন তারা আন্দোলন কর্মসূচির বাইরে রাখেন। ' চিঠি আজকালের মধ্যেই দেওয়া হবে এবং তিনি না পারলেও বিসিবির একটি ডেলিগেট দেখা করবে বলে জানান তিনি।
বিসিবি সভাপতি আত্দবিশ্বাসী টুর্নামেন্ট দুটির বিষয়ে। এসিসির সিইও বলেন, 'বাঙালি হিসেবে আমি চাই এখানেই খেলা হোক। আমি অনেক আশাবাদী এখানে খেলা হওয়ার বিষয়ে। এখানে খেলা না হওয়ার কোনো কারণ নেই। তবে দেশগুলোকে বোঝানোর দায়িত্ব বিসিবির।
আমি আমার পক্ষ থেকে সর্বোচ্চটাই করব। '
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।