অনেকেরই বয়স অনুযায়ী বুকের গড়ন সরু থাকে। পুষ্টিহীনতার কারণেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এমনটি হয়ে থাকে। তবে অনেক সময় অলস জীবন যাপনের ফলেও বুকের গড়ন সরু হয়ে যায়। এক্ষেত্রে ব্যায়ামই বুকের প্রশস্ততা ফিরিয়ে দিতে পারে। যোগশাস্ত্রে বুকের গড়ন প্রশস্ত করার জন্য অনেক ব্যায়ামের উল্লেখ আছে।
এর মধ্যে অন্যতম হলো উষ্ট্রাসন। আসন অবস্থায় দেহের মধ্যভাগ উঁচু হয়ে অনেকটা উটের মতো দেখায় বলে এ আসনটিকে উষ্ট্রাসন বলা হয়।
এ আসন করার জন্য প্রথমে হাঁটু ভেঙে পায়ের পাতা মুড়ে হাঁটুর উপর ভর রেখে শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়ান। পায়ের পাতা থেকে হাঁটু পর্যন্ত পায়ের নিম্নাংশ মাটির সঙ্গে লেগে থাকবে। এবার দুই হাত দিয়ে দুই পায়ের গোড়ালি অথবা গোড়ালির ঠিক উপরে ধরুন।
এখন বুক ও পেট যতটা সম্ভব উপরদিকে এবং মাথা পেছনদিকে বাঁকিয়ে ধনুকের মতো করতে হবে। শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে। এ অবস্থায় ২০ সেকেন্ড থেকে ৩০ সেকেন্ড থাকুন। তারপর হাত ও শরীর আলগা করে আস্তে আস্তে পূর্বাবস্থায় হাঁটুর উপর দাঁড়ান। এভাবে আসনটি ২-৩ বার করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন।
এই আসন ভিন্ন পদ্ধতিতেও করা যায়।
প্রথমে উষ্ট্রাসনের ভঙ্গিমায় বসুন। এবার হাত দুটি গোড়ালি থেকে সরিয়ে পায়ের পাতায় ধরুন। কনুই দুটি ভেঙে মাটিতে রাখুন এবং মাথা নিচু করে দুই হাতের মাঝে মাটিতে রাখুন। মাথার ব্রহ্মতালু পায়ের পাতার উপর রাখুন।
শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক থাকবে এবং ২০ সেকেন্ড থেকে ৩০ সেকেন্ড এ অবস্থায় থাকুন। এরপর হাতের তালুর উপর ভর দিয়ে আস্তে আস্তে উঠে হাঁটুর উপর সোজা হয়ে বসে বিশ্রাম নিন। আসনটি ২-৩ বার করুন এবং প্রয়োজনমতো শবাসনে বিশ্রাম নিন। এ আসনটিকে পূর্ণ-উষ্ট্রাসন বলা হয়।
এ আসন নিয়মিত অনুশীলন করলে যাদের মেরুদণ্ড সামনের দিকে বাঁকা এবং যাদের বয়স অনুযায়ী বুকের গড়ন সরু বা অপরিণত, তাদের মেরুদণ্ড সোজা হয় এবং বুকের গড়নও প্রশ্বস্ত হয়।
এ আসন বিশেষভাবে মেরুদণ্ডের হাড়ের জোড় নমনীয় ও মজবুত করে। বুকের পেশি ও পাঁজরের হাড় বৃদ্ধিতে সাহায্য করে। মেরুদণ্ড-সংলগ্ন স্নায়ুমণ্ডলী ও মেরুদণ্ডের দুই পাশের পেশি সতেজ ও সক্রিয় রাখে। হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করে। থাইরয়েড, প্যারাথাইরয়েড ও টনসিল গ্রন্থিও সুস্থ ও সক্রিয় থাকে।
পেট, কোমর এবং নিতম্বেরও খুব ভালো ব্যায়াম হয়। আসনটি অভ্যাস রাখলে সহজে কোনো পেটের রোগ বা স্ত্রী-রোগ হতে পারে না। দেহে শীত-তাপ সহ্যশক্তি বৃদ্ধি করে ও দেহের মধ্যভাগের অপ্রয়োজনীয় মেদ কমিয়ে দেহকে সুগঠিত করে। আসনটিতে বুকে প্রচণ্ড চাপ পড়ে বিধায় যাদের হৃৎপিণ্ড বা ফুসফুস দুর্বল, রোগ নিরাময় না হওয়া পর্যন্ত তাদের জন্য আসনটি করা উচিত নয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।