মানুষ আর প্রাণীর মধ্যে পার্থক্য হলো-চেতনাগত ও সংস্কৃতিগত।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেছেন, বোমা হামলার সাথে জড়িত ঘাতকদের শাস্তি না দিয়ে দেশে সামপ্রদায়িক জঙ্গিগোষ্ঠীর উত্থানের পথ প্রশস্ত করা হয়েছে। বোমাবাজ, সন্ত্রাসী, জঙ্গিগোষ্ঠী ও তাদের দেশি-বিদেশি মদদদাতাদের গ্রেফতার ও শাস্তিবিধান করে বাংলাদেশ বিরোধী গভীর ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে হবে।
সিপিবি সাধারণ সম্পাদক বলেন, অসামপ্রদায়িকতা ও প্রগতিশীল চেতনা ধ্বংস করে দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিতেই সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠী একের পর এক বোমা ও গ্রেনেড হামলা চালিয়েছে।
আর সামপ্রদায়িক অপশক্তি, লুটেরা পুঁজিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ প্রথম টার্গেট হিসেবে বেছে নিয়েছে মুক্তচিন্তা, দেশপ্রেম, গণমুক্তি, প্রগতিশীল রাজনীতির ধারক এবং সামপ্রদায়িক ও সাম্রাজ্যবাদের বিরোধী আপোষহীন সিপিবিসহ প্রগতিশীল দল ও সংগঠনকে।
তিনি বলেন, সেই লক্ষ্য থেকেই ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি পল্টন ময়দানে সিপিবি’র মহাসমাবেশে বোমা হামলা চালানো হয়।
পল্টন ময়দানে সিপিবির মহাসমাবেশে বোমা হামলা ও হত্যাকাণ্ডের নবম বার্ষিকী উপলক্ষে ২০ জানুয়ারি সকাল পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবন চত্বরে অস্থায়ী বেদিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সকাল সাড়ে ১১টায় বক্তৃতাকালে তিনি এ কথা বলেন।
তিনি আরো বলেন, সরকার আসে, সরকার যায় কিন্তু বোমাবাজ, রাজাকাররা যায় না। তারা আরো শক্তিশালী হয়। তিনি সামপ্রদায়িক অপশক্তি, সাম্রাজ্যবাদ, লুটেরা পুঁজিবাদ রুখতে বাম-গণতান্ত্রিক শক্তির ঐক্য গড়ে তোলার আহ্বান জানান।
সকাল ১১টায় বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র পক্ষ থেকে পুষপমাল্য অর্পণের মধ্য দিয়ে কর্মসূচি শুরু হয়। পার্টির সাধারণ সম্পাদক মুজাহিদুল ইসলাম সেলিমের নেতৃত্বে নেতৃবৃন্দ পল্টন শহীদদের স্মরণে নির্মিত বেদীতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করা হয়। এ সময় পার্টির কেন্দ্রীয় নেতা জসিমউদ্দীন মণ্ডল, এমএম আকাশ, ডা. ফজলুর রহমান, রুহিন হোসেন প্রিন্স, মাহাবুব আলম, আহসান হাবিব লাবলু, লক্ষ্মী চক্রবর্তী, আব্দুল কাদেরসহ নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
পরে সিপিবি ঢাকা কমিটি ও বিভিন্ন থানা কমিটি ও শাখাসমূহ, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (পুনগর্ঠিত), বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টি, বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ), জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ), বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি, ন্যাশনাল আওয়ামী পাটি (ন্যাপ), বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল (এম-এল), গণতন্ত্রী পার্টি, গণআজাদী লীগ, গণতান্ত্রিক বাম মোর্চা, জাতীয় গণফ্রন্ট, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টি, গণফোরাম, গণসংহতি আন্দোলন, উদীচী শিল্পী গোষ্ঠী, কেন্দ্রীয় খেলাঘর আসর, বাংলাদেশ ক্ষেতমজুর সমিতি, বাংলাদেশ কৃষক সমিতি, বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল, লতিফ বাওয়ানী জুট মিলস শ্রমিক ইউনিয়ন, বাংলাদেশ গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র, গার্মেন্টস শ্রমিক ঐক্য পরিষদ, স্বাধীন বাংলা গার্মেন্টস শ্রমিক কর্মচারী ফেডারেশন, মহিলা পরিষদ, বাংলাদেশ বস্তিবাসী ইউনিয়ন, বাংলাদেশ যুব ইউনিয়ন, বাংলাদেশ যুব আন্দোলন, বাংলাদেশ যুব মৈত্রী, বাংলাদেশ ছাত্র ইউনিয়ন, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ (জাসদ), বাংলাদেশ ছাত্র মৈত্রী, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্ট, প্রগতিশীল ছাত্রজোট, মণি সিংহ-ফরহাদ স্মৃতি ট্রাস্ট, রণেশ দাশগুপ্ত চলচ্চিত্র সংসদ, সাপ্তাহিক একতাসহ বিভিন্ন সগঠনের পক্ষ থেকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করা হয়।
উল্লেখ্য, ২০০১ সালের ২০ জানুয়ারি ঐতিহাসিক পল্টন ময়দানে অনুষ্ঠিত সিপিবি’র মহাসমাবেশে বোমা হামলায় কমরেড হিমাংশু, কমরেড হাসেম, কমরেড মজিদ, কমরেড মোক্তার ঘটনাস্থলে মৃত্যুবরণ করেন।
ছাত্রনেতা কমরেড বিপ্রদাস গুরুতর আহত হয়ে ঢাকা বক্ষব্যাধি হাসপাতালে ওই বছরের ২ ফেব্রুয়ারি মৃত্যুবরণ করেন। বোমা হামলায় শতাধিক কমরেড আহত হন। এদের মধ্যে অমর মণ্ডল, লক্ষণ মণ্ডল, মো. জাহাঙ্গীর, আব্দুস সাত্তার, মিজানুর রহমান, এম.এ করিমসহ অনেকেই পঙ্গু অবস্থায় বেঁচে আছেন। এই বোমা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত ও এর নেপথ্যের হোতাদের এখনো পর্যন্ত চিহ্নিত, গ্রেপ্তার ও বিচার করা হয় নি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।