আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সন্ত্রস্ত বাংলাদেশে ভোট শুরু

নির্বাচন ঠেকাতে বিরোধী দলের হরতাল-অবরোধের মধ্যেই রোববার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত একটানা ভোটগ্রহণ চলবে। আর এজন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে, নেমেছে সেনাবাহিনীও।
এই নির্বাচনকে ‘প্রহসন’ আখ্যায়িত করে তা প্রতিহত করার হুমকি দিয়েছে বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দল। ভোট ঠেকাতে হরতালের মধ্যে শতাধিক কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ হয়েছে;  পোড়ানো হয়েছে ব্যালট পেপারসহ নির্বাচনী সরঞ্জামও।
অন্যদিকে গণতন্ত্র ‘সমুন্নত’ রাখতে ভোট দেয়ার দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতারা।

ভোট ঠেকানোর যে কোনো চেষ্টা রুখে দেয়ার ঘোষণা রয়েছে তাদের।
বিরোধী দলের অনুপস্থিতির পাশাপাশি ভাংচুর, অগ্নিসংযোগের কারণে কেন্দ্রে ভোটারের উপস্থিতি নিয়ে সংশয় রয়েছে খোদ নির্বাচন কমিশনের।
সংসদের ৩০০ আসনের মধ্যে ১৫৩টিতে প্রার্থীদের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ার রেকর্ডে এবার ভোট দিতে পারছেন না ১৪৭ আসনের ভোটাররা। পাঁচটি জেলায় ভোটই হচ্ছে না।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় দলের ১২৭ জন ইতোমধ্যে জয়ী হওয়ায় সরকার গঠন নিয়ে আওয়ামী লীগের কোনো সংশয় না থাকলেও ভোটারদের কেন্দ্রে নিতে কর্মীদের সক্রিয় হতে বলে আসছেন দলটির নেতারা।

  
আগাম কোনো কথা না বলে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দীন আহমদ শনিবার সাংবাদিকদের শুধু বলেছেন, “ভোটের আগে ব্যক্তিগত অনুভূতি দেব না। সবাই ভোট প্রত্যক্ষ করবে, দেশবাসী তা দেখবে। খুব স্বচ্ছ নির্বাচন হবে এবার। ”
তবে সরঞ্জাম পাঠানোর আগেই বৃহস্পতিবার রাত থেকে শনিবার সন্ধ্যা পর্যন্ত বিভিন্ন জেলায় শতাধিক ভোটকেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ হয়েছে। নির্বাচনী সরঞ্জাম নিয়ে যাওয়ার পথে হামলা হয়েছে গাইবান্ধা ও চট্টগ্রামে।


দেশে মোট ভোটারের সংখ্যা ৯ কোটি ১৯ লাখ হলেও ১৫৩ আসনে ভোট না হওয়ায় ৪ কোটি ৮০ লাখের ভোট দিতে হচ্ছে না। এর মধ্যে প্রায় ৫০ লাখ নতুন ভোটার, যারা প্রথম নির্বাচনে ভোট দেয়ার অভিজ্ঞতা নিতে পারছেন না।
নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনরত বিরোধী জোটের অনুপস্থিতিতে ১২টি দল দশম সংসদ নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রার্থী হয়েছেন ৫৪৩ জন।
তবে এর মধ্যে ১৫৩ জন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় ভোটের লড়াইয়ে রয়েছেন ৩৯০ জন, এর মধ্যে ১০৪ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী।


১৪৭ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ১২০ জন, জাতীয় পার্টির ৬৬ জন, জেপির ২৭ জন, বিএনএফের ২২ জন, জাসদের ২১ জন, ওয়ার্কার্স পার্টির ১৬ জন।
বিভিন্ন আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে আবির্ভূত হয়েছেন এ দলেরই কোনো কোনো নেতা, তারা লড়ছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া ১২৭ জনই আওয়ামী লীগের, ২০ জন জাতীয় পার্টির,৩ জন জাসদের, ২ জন ওয়ার্কার্স পার্টির এবং ১ জন জেপির।     
আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক মিত্র জাতীয় পার্টির এই নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা রয়েছে। পক্ষকাল ধরে দলের চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের হাসপাতালে থাকা নিয়েও রয়েছে গুঞ্জন।


এরশাদ ভোট দেবেন কি না-তা এখনো জানা যায়নি। প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার আসনে ভোট হচ্ছে না। আর নির্বাচন বর্জনের ডাক দেয়া বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া গত কয়েকদিন ধরেই কার্যত অবরুদ্ধ।
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ গতবার কিশোরগঞ্জে ভোট দিয়েছিলেন। ওই আসনে এবার তার ছেলে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন বলে ভোটগ্রহণ হচ্ছে না সেখানেও।


সিইসি কাজী রকিবের নির্বাচনী এলাকা ঢাকা-১১ আসনেও আওয়ামী লীগের এ কে এম রহমতুল্লাহ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়ায় সেখানে ভোটগ্রহণ হচ্ছে না।
বিএনপির দাবি ছিল, নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে হবে। তবে তা উপেক্ষা করে পঞ্চদশ সংশোধনের পর সাংবিধানিক ধারা অনুসরণের পক্ষেই এগিয়ে গেছে আওয়ামী লীগ।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অবশ্য বলেছেন, রাজনৈতিক সমঝোতা হলে এই নির্বাচন হয়ে যাওয়ার পর সংসদ ভেঙে মধ্যবর্তী নির্বাচন দেয়া হবে।
ফলে রোববারের নির্বাচনের মাধ্যমে গঠিত সংসদের মেয়াদ নির্ধারিত পাঁচ বছর থাকাটা অনিশ্চিত।

রাজনৈতিক সমঝোতা না থাকায় এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসেনি যুক্তরাষ্ট্র, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও কমনওয়েলথ।
শুধু ভারত ও ভুটান থেকে আসা পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে দেশিদের মিলিয়ে এই নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে প্রায় সাড়ে ১৩ হাজার জন।
বরাবরের মতো এবারের নির্বাচনেও মোতায়েন থাকছে সেনাবাহিনী। সশস্ত্র বাহিনীর অর্ধ লক্ষ সদস্যের সঙ্গে থাকছে ৮০ হাজার পুলিশ, ৮ হাজার র‌্যাব, ১৬ হাজার বিজিবি ও প্রায় সোয়া ২ লাখ আনসার সদস্য।
প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ১৪ থেকে ১৬ জন নিরাপত্তারক্ষী দায়িত্ব পালন করবেন।

র‌্যাব, বিজিবি ও সেনা সদস্যরা থাকবেন টহলে।
১৪৭ আসনের ১৮ হাজার ১৮ হাজার ২০৮টি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ চলবে। তবে কয়েকটি কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ হওয়ায় কেন্দ্রের ক্ষেত্রে কিছুটা পরিবর্তন হতে পারে বলে সিইসি শনিবার জানিয়েছেন।
অর্ধেকের বেশি আসনে ভোটগ্রহণ না হওয়ায় এবার নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলার ব্যয় অর্ধেকে নেমে এসেছে।
শুক্রবার সকাল ৮টায় নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হয়েছে।

ভোট শেষ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা সময়ের মধ্যে নির্বাচনী এলাকায় কোনো সভা, সমাবেশ, শোভাযাত্রা করা যাবে না।
৪ জানুয়ারি রাত ১২টা থেকে ভোটের দিন ৫ জানুয়ারি মধ্যরাত পর্যন্ত অননুমোদিত যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকবে। মোটর সাইকেল চলাচলে মানা ৩ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি। লাইসেন্সধারী অস্ত্র নিয়ে চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে ২২ ডিসেম্বর থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন
জয়পুরহাট, রাজবাড়ী, মাদারীপুর, শরীয়তপুর ও চাঁদপুর জেলা ছাড়া অন্য সব নির্বাচনী এলাকায় সেনাবাহিনী ৯ জানুয়ারি পর্যন্ত স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকছে।


র‌্যাব ও আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়ন ১ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর্যন্ত এবং বিজিবি ও কোস্টগার্ড ৩ জানুয়ারি থেকে ৭ জানুয়ারি পর‌্যন্ত মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসে নিয়োজিত থাকবে।
ব্যাটালিয়ন আনসার সহযোগী ফোর্স হিসেবে পুলিশের সঙ্গে মোবাইল টিমে দায়িত্ব পালন করবে।
এছাড়া ভোটকেন্দ্রে নিয়োজিত পুলিশ থাকবে ভোটের দুই দিন আগে থেকে ভোটের পরদিন পর্যন্ত এবং অঙ্গীভূত আনসার থাকবে ভোটের তিনদিন আগে থেকে ভোটের পরদিন পর্যন্ত। গ্রাম পুলিশও মোতায়েন থাকবে ভোটকেন্দ্রে।
আইন শৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণের প্রয়োজনে র‌্যাব হেলিকপ্টার ব্যবহার করতে পারবে।

এই সহায়তা দেবে বিমানবাহিনী। তিন পার্বত্য জেলার দুর্গম ৩৩টি কেন্দ্রে হেলিকপ্টারে পৌঁছাচ্ছে নির্বাচনী সরঞ্জাম।
ভোটে দায়িত্ব পালন করবে ব্যাটালিয়ান আনসার ১৬০০, অঙ্গীভূত আনসার ২,১৮,৫০০। মোট- ২ লাখ ২০ হাজার ১০৮।
এছাড়া বিজিবির ১৬,১৮১, র‌্যাবের ৮,৪০৪, কোস্টগার্ডের ২০০, পুলিশের ৮০,০০০, সশস্ত্র বাহিনীর ৫২,১০০ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে।


ঝুঁকিপূর্ণ ১৩ হাজার কেন্দ্র
ইসি কর্মকর্তারা জানান, ১৮ হাজার ২০৮ ভোটকেন্দ্রের মধ্যে ১৩ হাজার ঝুঁকিপূর্ণ।
মেট্রোপলিটন এলাকায় সাধারণ ভোটকেন্দ্রে ১৬ জন ও গুরুত্বপূর্ণ বা ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন, মেট্রোপলিটন এলাকার বাইরে ভোটকেন্দ্রগুলোয় ১৪ জন করে এবং বিশেষ এলাকায় (পার্বত্য ও দীপাঞ্চল, হাওড়) সাধারণ কেন্দ্রে ১৫ জন ও গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৬ জন করে পুলিশ, আনসার, ভিডিপি, গ্রাম পুলিশ মোতায়েন থাকবে।
ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় প্রয়োজনে মেটাল ডিটেক্টরের মাধ্যমে তল্লাশি করা হবে। রিটার্নিং অফিসারের সঙ্গে পরামর্শ করে পুলিশ কমিশনার বা পুলিশ সুপার স্থানীয় গুরুত্ব বিবেচনা করে প্রয়োজন অনুসারে ভোটকেন্দ্রে পুলিশের সংখ্যা বাড়াতে পারবেন বলে ইসি জানিয়েছে।
ভোটে বাধা দিলে কারাদণ্ড
ইসির জনসংযোগ পরিচালক এস এম আসাদুজ্জামান জানান, নির্বাচনী আইন মেনে শুক্রবার সকাল ৮টা থেকে মঙ্গলবার বিকাল ৪টা পর্যন্ত কোনো সভা, সমাবেশ, শোভাযাত্রা করা যাবে না।

এসময় বিশৃঙ্খল আচরণ, ভোটে বাধা ও নির্বাচনী কাজে দায়িত্বরতদের ভয়ভীতি দেখালে, অস্ত্র ও শক্তি প্রদর্শন করা যাবে না।
“কেউ বিধান লঙ্ঘন করলে ন্যূনতম ২ বছর থেকে সর্বোচ্চ সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড দেয়া হবে। ”
এক নজরে দশম সংসদ নির্বাচন
তফসিল: ২৫ নভেম্বর, মনোনয়ন দাখিলের শেষ সময় ২ ডিসেম্বর, বাছাই ৫-৬ ডিসেম্বর, প্রত্যাহারের শেষ সময় ১৩ ডিসেম্বর, ভোট ৫ জানুয়ারি।
মোট আসন- ৩০০, ভোট হবে ১৪৭ আসনে (১৫৩ আসনের প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত)
ভোটার সংখ্যা- ৯ কোটি ১৯ লাখ ৬৫ হাজার ৯৭৭। নারী ৪ কোটি ৫৮ লাখ ৪১ হাজার ৯০৫; পুরুষ ৪ কোটি ৬১ লাখ ২৪ হাজার ৭২।


১৪৭ আসনে মোট ভোটার ৪ কোটি ৩৯ লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৮।
মোট ভোটকেন্দ্র - ৩৭ হাজার ৭০৭,  ভোটকক্ষ- ১ লাখ ৮৯ হাজার ৭৮।
১৪৭ আসনে ভোটকেন্দ্র- ১৮ হাজার ২০৮, ভোটকক্ষ ৯১ হাজার ২১৩।
৩০০ আসনে রিটার্নিং কর্মকর্তা-৬৬ জন, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ৫৭৭ জন। ১৪৭ আসনে ১৪৭ আসনে রিটার্নিং কর্মকর্তা- ৬১ জন, সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ২৮৭ জন।


যেসব জেলায় ভোট নেই- চাঁদপুর, রাজবাড়ী, জয়পুরহাট, শরীয়তপুর ও মাদারীপুর।
অংশ নেয়া দলের সংখ্যা- ১২। মোট প্রতিদ্বন্দ্বী (বিনা প্রতিন্দ্বিতায় বিজয়ী ১৫৩ জন সহ) ৫৪৩, এরমধ্যে পুরুষ ৫১৬, নারী ২৭, স্বতন্ত্র ১০৪। ১৪৭ আসনে প্রার্থী ৩৯০ জন।
১৪৭ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ১২০ জন, স্বতন্ত্র ১০৪ জন, জাতীয় পার্টির ৬৬ জন, জেপির ২৭ জন, বিএনএফের ২২ জন, জাসদের ২১ জন, ওয়ার্কার্স পার্টির ১৬ জন।


এছাড়া ন্যাপের ৬ জন, তরীকত ফেডারেশনের ৩ জন, খেলাফত মজলিসের ২ জন, গণতন্ত্রী পার্টির ১ জন, গণফ্রন্টের ১ জন এবং ইসলামিক পার্টির ১ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া ১২৭ জন আওয়ামী লীগের, ২০ জন জাতীয় পার্টির,৩ জন জাসদের, ২ জন ওয়ার্কার্স পার্টির, ১ জন জেপির।     
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী- আনসার ২,১৮,৫০০, পুলিশ ৮০ হাজার, সশস্ত্র বাহিনী ৫২ হাজার ১০০, বিজিবি ১৬ হাজার১৮১, র‌্যাব ৮ হাজার ৪০৪, কোস্টগার্ড ২০০।
প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে ১৫ থেকে ১৮ জন করে নিরাপত্তা রক্ষী থাকবে।
ইলেকটরাল ইনকুয়ারি কমিটি- ১০৩টি।

নির্বাচন পর্যবেক্ষকের সংখ্যা ১৩ হাজার ৩৪১ (প্রাথমিক)।
এক নজরে বিগত সব নির্বাচন
নবম সংসদ নির্বাচন- জরুরি অবস্থায় দুই বছর থাকার পর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মধ্যদিয়ে গণতন্ত্রে ফেরে বাংলাদেশ।
এতে আওয়ামী লীগ ২৩০ আসনে জিতে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়। বিএনপি ২৯, জাপা ২৭, জাসদ ৩, ওয়ার্কার্স পার্টি ২, জামায়াত ২, এলডিপি ১, বিজেপি ১, স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৪টি আসনে জয় পায়।
নবম সংসদ নির্বাচনে রাজধানীর শ্যামপুরের একটি কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন।


নবম সংসদ নির্বাচনে রাজধানীর শ্যামপুরের একটি কেন্দ্রে ভোটারদের দীর্ঘ লাইন।
প্রথম সংসদ নির্বাচন- ১৯৭৩ সালের ৭ মার্চ অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ২৯৩ আসনে জিতে সরকার গঠন করে। জাসদ ১, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ ১ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৫টি আসন পায়।
দ্বিতীয় সংসদ নির্বাচন- ১৯৭৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে বিএনপি ২০৭টি আসন পায়। আওয়ামী লীগ [মালেক] ৩৯, আওয়ামী লীগ [মিজান] ২, জাসদ ৮, মুসলিম লীগ ও ডেমোক্রেটিক লীগ ২০, ন্যাপ [মোজাফ্ফর] ১, বাংলাদেশ জাতীয় লীগ ২, বাংলাদেশ গণফ্রন্ট ২, বাংলাদেশের সাম্যবাদী দল ১, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক আন্দোলন ১, জাতীয় একতা পার্টি ১ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১৬টি আসনে জেতে।


তৃতীয় সংসদ নির্বাচন- ১৯৮৬ সালের ৭ মে অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ১৫৩টি আসনে জেতে। আওয়ামী লীগ ৭৬, জামায়াতে ইসলামী ১০, সিপিবি ৫, ন্যাপ [মোজাফ্ফর] ২, ন্যাপ ৫, বাকশাল ৩, জাসদ [রব] ৪, জাসদ [সিরাজ] ৩, মুসলিম লীগ ৪, ওয়ার্কার্স পার্টি ৩ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৩২ আসন পায়।
চতুর্থ সংসদ নির্বাচন- বিরোধী দলের বর্জনের মধ্যে ১৯৮৮ সালের ৩ মার্চ অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে জাতীয় পার্টি ২৫১,টি আসনে যেতে। আ স ম আব্দুর রব নেতৃত্বাধীন সম্মিলিত বিরোধী দল ১৯, জাসদ [সিরাজ] ৩, ফ্রিডম পার্টি ২ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ২৫টি আসন পায়।
পঞ্চম সংসদ নির্বাচন- নব্বইয়ের গণঅভ্যুত্থানের পর ১৯৯১ সালের ২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে বিএনপি ১৪০টি আসনে জিতে সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়।

আওয়ামী লীগ ৮৮, জাতীয় পার্টি ৩৫,জামায়াত ১৮, সিপিবি ৫,বাকশাল ৫, জাসদ [সিরাজ] ১, ইসলামী ঐক্যজোট ১, ওয়ার্কার্স পার্টি ১, এনডিপি ১, গণতন্ত্রী পার্টি ১, ন্যাপ [মোজাফ্ফর] ১ ও অন্যান্য দল ৩টি আসন পায়।
ষষ্ঠ সংসদ নির্বাচন- বিরোধী দলবিহীন ১৯৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে বিএনপি ২৭৮ আসনে জেতে। ফ্রিডম পার্টি ১টি এবং স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ১০টি আসনে জেতে। গোলযোগের কারণে বাকি আসনে ভোট স্থগিত হয়ে যায়।
দশম সংসদ নির্বাচনের আগে এই নির্বাচনেই সর্বাধিক সংখ্যক (৪৯ জন) প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছিলেন।


সপ্তম সংসদ নির্বাচন- ১৯৯৬ সালের ১২ জুন অনুষ্ঠিত এই  নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ১৪৬ আসনে বিজয়ী হয়। বিএনপি ১১৬, জাতীয় পার্টি ৩২, জামায়াত ৩, ইসলামী ঐক্যজোট ১, জাসদ ১ ও স্বতন্ত্র ১টি আসন পায়।
অষ্টম সংসদ নির্বাচন- ২০০১ সালের ১ অক্টোবর অনুষ্ঠিত এই নির্বাচনে বিএনপি ১৯৩টি আসনে জেতে। আওয়ামী লীগ ৬২, জামায়াত ১৪, জাপা [ইসলামী ঐক্যফ্রন্ট] ১৪, বিজেপি ৪, জাপা [মঞ্জু] ১, ইসলামী ঐক্যজোট ২, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ ১ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীরা ৬টি আসন পায়।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।