যুদ্ধাপরাধী জামাতের সঙ্গে মানবতাবিরোধী অপরাধ ২০১৩-১৪তে প্রত্যক্ষ অংশগ্রহণের ফলে "বিরোধী দল" হিসেবে বিএনপির গ্রহণযোগ্যতা এখন মাইনাসে। প্রধানমন্ত্রীর বড় ভাই "বিশেষ দূত" শেখ এরশাদের দোয়া নিয়ে স্ত্রী রওশন শেখ সংসদে বিরোধী দলের নেত্রীর ভূমিকায় অভিনয়ে অংশ নিচ্ছেন। এই মিউচুয়াল এডমিরেশন সোসাইটি সংসদটিকে "বেয়াই প্রজাতন্ত্র যাত্রা-পালা ছাড়া আর কিছু বলা যাচ্ছেনা। বাস্তবতা হচ্ছে বাংলাদেশ এখন বিরোধীদল শূণ্য। গত পাঁচবছরেও সাবেক বিরোধীদল সংসদে না যাওয়ায়; তার আগে আরো সতেরো বছর বিরোধী দল ছাড়াই সংসদের "বেয়াই প্রজাতন্ত্র যাত্রাপালা'টি সাঙ্গ হয়েছে।
আমরা বুঝতে পারি সংসদ ছাড়াও রাষ্ট্র চলে; উন্নয়নের পরিসংখ্যান রচনা করা যায়, উন্নয়নের জোয়ারে দেশের মানুষকে দিশেহারা করে দেয়া যায়। কাজেই সংসদে না গিয়েও গত ২২ বছর বিরোধীদল হিসেবে সবচেয়ে বড় সাফল্য দেখিয়েছে বাংলাদেশের জনমানুষ। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ইস্যুতে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মুল কমিটি থেকে শাহবাগ এই সফলতম অর্জন; মূলতঃ জনমানুষের একমাত্র অর্জন। এই জনমানুষ নিজের খেয়েই রানা-প্লাজা থেকে অভয়নগর আগুণ নিভিয়ে বেড়ায়।
সুতরাং আর আলকায়েদাপন্থী ইঙ্গ-মার্কিন গণতন্ত্রের সংজ্ঞায় কথিত বিরোধী দল তৈরী করে নতুন মাথাব্যথা বাড়ানোর দরকার নাই।
মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসাম্প্রদায়িক সুষম সমাজ তৈরীর নিয়ত লড়াইটি জনমানুষকেই চালিয়ে যেতে হবে। বুবু কী করবে? ভাবী কী করবে এইসব গ্রাম্য পাচালী বাদ দিয়ে "রাজনীতির পয়সায় পেট চালাই না" জনমানুষের সফলতম বিরোধী দলটিকেই মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে হবে। আমরাই বিরোধী দল; আমরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু এবং অন্যান্য ত্যাগী রাজনীতিকদের চেতনার উত্তরাধিকার এই সংখ্যা-গরিষ্ঠ সমাজ।
এই সমাজের মানুষ মোটামুটি সফলভাবে বাংলাদেশ রাজনীতিতে চেতনা ও বিশেষণের প্যান্ডোরার বাক্সটি খুলে ফেলেছে।
সুতরাং সমাজে "কথায় বড় না হয়ে কাজে বড় হবার" সংস্কৃতির অনুশীলন এখন সময়ের দাবী। আজ হয়তো আওয়ামী লীগের " কইছিলাম না " ভাইয়ারা মনে মনে ভাবছে, আমরাই শেষ হাসিটা হাসলাম। অন্যদিকে বিএনপি-জামাত কাঁদতে কাঁদতে মনে মনে বলছে, এখনো খেলা শেষ হয় নাই। তৃতীয় দিগন্তে মতিবাদীরা বসে ভাবছে বদলে দেবো, উলটে দেবো।
এই সোনালী ত্রিভুজের জানা প্রয়োজন; শেষ হাসিটা আসলে জনমানুষ হেসেছে।
কারণ রাজনীতিতে গত ৪২ বছরের জারুজুরি ফাঁস হয়ে গেছে। রাজনীতিতে বহু ব্যবহারে জীর্ণ রেটোরিকস আজ খুব কৌতুককর। নতুন মন্ত্রীসভা ও প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন। অপেক্ষাকৃত সততার বাতাবরণ এই মন্ত্রীসভায় আছে। কিন্তু শুধু প্রত্যাশা্র বাতাসা খেয়ে আমরা আর আপনাদের বেতন দেবোনা।
২০১৪টিকে নতুন মন্ত্রীর চাকরীর প্রবেশন হিসেবে আমরা ধরে নিচ্ছি। আর একটি হিন্দু গ্রাম যদি উজাড় হয়; আর একজন মনির যদি জামাতের বা দুর্বৃত্তদের বোমায় পুড়ে; এদেরকেও বাক্স-প্যাটরা গোছাতে হবে। ঐ দক্ষিণ-এশীয় সামন্ত-রাজনৈতিক ইউফোরিয়ায় ক্যামেরার সামনে গদগদ হয়ে বাইট দেয়া আমরা আর দেখতে চাইনা। প্রফেশনালি চাকরী করা শিখতে হবে নতুন পতাকা-স্ট্যান্ড হোল্ডারদের। পারফরমেন্স খারাপ হলে চাকরি নাই।
১৫ কোটি মুখ যদি ৪৮ জনের দিকে তাকিয়ে দিনে একবার অন্ততঃ তাচ্ছিল্যের হাসি হাসতে শেখে; চাকরি করার শখ মিটে যাবে মন্ত্রীদিগের। জনমানুষের জন্য আজ এক মন-খারাপের দিন। অভয়নগরের স্মৃতি নিয়ে আমরা আপনাদের মন্ত্রী হবার মিষ্টি খেতে পারছি না। খুব তেতো লাগছে; যা খাচ্ছি। সুতরাং প্রিয় প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীরা অযথা সময় নষ্ট না করে কাজে নেমে পড়ুন।
ইয়োর টাইম স্টার্টস নাও।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।