আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

"মাইয়া রেপ হইব না তো কি হইব??????" এর উত্তরে বলছি।

মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন শিরোনামে উল্লিখিত পোস্টটির পড়ুন এখানে । ____________________________ ভেবেছিলাম কাদা ছোঁড়া-ছুঁড়ি থেকে নিজেকে বিরত রাখব। তাই প্রথম কমেন্ট এর পরে আর কোন কমেন্ট করি নি। কিন্তু চুপ থাকলে তো আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ মেনে নেওয়া হয়। তাই ইচ্ছার বিরুদ্ধে হলেও অভিযোগ খণ্ডাতে আবারো কমেন্ট করতে বসলাম।

এবারে বিস্তারিত। ৫ নং কমেন্টের বিস্লেষণে বলছি - 'জনৈক গণ্ডমূর্খ' ১৬ নং কমেন্টে এর ব্যাখ্যা দিয়েছেন এবং সঠিকই দিয়েছেন। যাদের জ্ঞান সীমাবদ্ধ তারাই এক এক জন একেক অর্থ বের করেছে। গঠনমূলক সমালোচনা তো দূরে থাকুক, আক্রমণাত্মক ও উস্কানি মূলক মন্তব্যে আপনাদের হীনমন্যতার পরিচয় দিয়েছেন। আমি আপনাদের অনুরূপ মন্তব্য প্রদান করে 'তুমি অধম, তাই বলিয়া আমি উত্তম হইব না কেন' - এই বাংলা প্রবাদের ব্যত্যয় ঘটাব না।

পোস্টটার লেখক 'খাইয়া কাম নাই' কে বলছি। আমি আপনার "INDIAN দের প্রতিবাদের ভাষা দেখেন!!!!! মাইয়া রেপ হইব না তো কি হইব??????" পোস্টটার সময়োপযগীতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছি। পোস্টটি আপনি এমন সময় দিলেন যখন সাম্প্রতিক ভারতের নয়াদিল্লি এবং বাংলাদেশের টাঙ্গাইলে ঘটে গেল নারী ধর্ষণের মর্মস্পর্শী দুটো ঘটনা। কিন্তু আপনার আর্কাইভ ঘেটে এর প্রতিবাদে কোন পোস্ট পাওয়া গেল না। সারা দেশের মানুষ যখন ধর্ষণের প্রতিবাদে মুখর তখন আপনি এমন একটা পোস্ট দিলেন যেটা পরোক্ষভাবে হলেও ধর্ষকামী মনের ইন্ধন যোগাবে।

কেউ মনে করতে পারে স্বল্পবসনা ললনা দেরকে ধর্ষণ করা বা তাদেরকে লাঞ্ছিত করা যায়েজ। আমার করা কমেন্টের "মেয়েরা অর্ধ উলঙ্গ হয়ে ঘুরে বেড়ালেও তাদের কে ধর্ষণ করার অধিকার কোন পুরুষের নেই" - লাইনটার পরিপ্রেক্ষতে বলছি। লাইনটা পড়ে অনেকে ধরেই নিলেন যে আমি নারীদের অর্ধ উলঙ্গ হয়ে চলা ফেরাকে উৎসাহিত করছি। অথচ কথাটি ছিল হাইপোথেটিক্যাল। বাস্তবে যারা ধর্ষিত হয়েছে তাদের কয়জন অর্ধ উলঙ্গ হয়ে চলা ফেরা করেছিল একটু ভেবে দেখুন।

ডিলিউশনের মধ্যে থেকে কোন লাভ নেই। নয়াদিল্লির দামিনি শিকার হল নিত্যদিনের চলার যানবাহনে। আর টাঙ্গাইলের মেয়েটি শিকার হল বান্ধবীর প্রতি সরল বিশ্বাসের কারণে। এটা আমিও স্বীকার করি মেয়েরা শালীনভাবে চললে কিছু ধর্ষণ হয়তো রোধ করা যেত কিন্তু ধর্ষণ প্রতিরোধের সব দায় দায়িত্ব নারীদের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে আমরা কাপুরুষের মত হাত গুটিয়ে বসে থাকতে পারি না। যে নারী ধর্ষণের মত পাশবিক নির্যাতনের শিকার সেই নারীকেই আমরা দোষারোপ করছি তার সম্ভ্রম রক্ষা করতে না পারার জন্য।

সেক্সিজমের এর চেয়ে বড় পরিচায়ক আর কী হতে পারে? আমরা মুখে সম অধিকারের কথা বলি। ধর্মেও নারী পুরুষ এর সম অধিকারের কথা উল্লেখ আছে। কিন্তু বাস্তবে এর প্রতিফলন কোথায়? আজো দেশের অনেক জায়গায় ধর্ষণের প্রতিবাদে ধর্ষকের পাশাপাশি ধর্ষিতাকেও দোষী সাব্যস্ত করে শাস্তি দেওয়া হয়, দোররা মারা হয় এমনকি ধর্ষকের সাথে বিয়েও দেওয়া হয় সারা জীবন ধর্ষিত হওয়ার জন্য। ধর্ষণ করে পুরুষ। তাই ধর্ষণ প্রতিরোধে পুরুষদের দৃষ্টিভঙ্গি ও মূল্যবোধের কী করে উন্নয়ন করা যায় সেটা ভাবুন, তারপর নারীদের পোষাকের দিকে নজর দিন।

যারা ধর্ষক আমি মনে করি তারা শুধু মানুষই নয় বরং সমগ্র পুরুষ জাতিরও কলঙ্ক। তাহলে ধর্ষণের ঘটনায় শুধু ধর্ষককে দায়ী করলে কিছু পুরুষের গায়ে লাগে কেন? এটা কি তাদের ধর্ষকদের প্রতি সহানুভূতিই প্রকাশ করে না? একজন পুরুষ হয়েও যে এ বিষয়টা আমি অনুধাবন করতে পেরেছি সেজন্য আল্লাহর কাছে শুকরিয়া আদায় করছি। যারা পারেননি তাদের জন্য করুণা হয়। লেখকের 'নেকড়ের সামনে মাংশ রাখলে সে তার মজা নেবেই' এই কথার পরিপ্রেক্ষিতে বলছি - আপনি কি এখানে মহান আল্লাহ্‌ কতৃক সৃষ্ট আশরাফুল মাখলুকাত খ্যাত মানুষদের এক নগণ্য প্রাণী নেকড়ের সাথে তুলনা করেছেন? যদি তা না করে থাকেন তাহলে ধরে নিচ্ছি যে, ধর্ষকামী মনের মানুষরূপী পশুদের কথা বলেছেন এখানে। যদি তাই হয় তাহলে তো সমস্যার সমাধান আরো সহজ হয়ে গেল।

আগে সেই নেকড়ে গুলোকে খুঁজে বের করুন। তার পর মাংস লুকান। নেকড়ে সনাক্ত না করে মাংস লুকালেও কোন লাভ হবে না। নেকড়ে তার মাংসের সন্ধান ঠিকই করে নেবে। ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.