সুখীমানুষ
অনুঘটক
--------------
নায়ক আর একজন বৃদ্ধ পার্কের বেঞ্চে বসে আছেন। কেউ কথা বলছেন না। নায়কের মন খারাপ, হাতে একটা ডয়েরীর দিকে তাকিয়ে আছেন। বৃদ্ধ আর নায়ক কেউ কারো সাথে কথা বলছেন না। বৃদ্ধ কি ভেবে ওঠে গেলেন।
নায়ক খুব নীরবে চোখ মুছলেন। সন্ধা গিয়ে তখন প্রায় অন্ধকার। নায়ক ডায়েরীটা পাশেই একটা বিনে ফেলে হাটতে হাটতে চলে গেলেন... বৃদ্ধ পাশেই ছিলেন। ডায়রীটা ওঠিয়ে নিলেন।
বয়স্ক একটি হাত ডায়েরীর পৃষ্ঠা ওল্টাচ্ছেন।
ফ্ল্যাশব্যাকে পিছনে চলে যাবে কাহীনী।
নায়ক, নায়িকা পাশাপাশী ফ্ল্যাটে থাকেন। কিন্তু কারোই কোন দিন কথা বার্তার প্রয়োজন হয়নি। প্রথম যেদিন কথা হলো তাও রিক্সাভাড়া নিয়ে এক ঝামেলায়। নায়িকা রিক্সা থেকে নামার পর রিক্সাওয়ালা বেশী ভাড়া চাচ্ছে।
এই নিয়ে গন্ডগোল। নায়ক এসে উপস্থিত। রিক্সাওয়ালাকে হাল্কা একটা ঝাড়ি দিয়ে চোখ টিপে দিলেন। রিক্সাওয়ালা চুপ হয়ে গেলো। নায়িকা ন্যায্য ভাড়া দিয়ে উপরে ওঠে গেলো।
নায়ক রিক্সাওয়ালার কাছে গিয়ে বল্লো যেন মেয়ে মানুষের মতামতকে সবসময় দাম দেয়, ঝগড়া যেন না করে। গায়ে হাত রেখে একটু আদর করে এই হাতটা দিয়েই হ্যান্ডশ্যাক পর্যন্ত গেলো। হাতের মধ্যে থাকা টাকাটা যে রিক্সাওয়ালার হাতে গেলো তা দুইজন ছাড়া আর কেউ বুঝার কোন গতি রইলো না।
নায়ক বাসায় এসে এই প্রথম ডায়েরী নিয়ে লেখা শুরু করলো। খুব কাছে থেকে কোনদিন আর মেয়েটিকে সে দেখেনি।
আজ মেয়েটাকে অনেক ভালো লাগলো।
কিন্তু নায়কের বয়স নায়িকার চাইতে প্রায় ১০/১২ বছর বেশী। প্রথম দিন ডায়েরীতেই সে লিখলো, সমস্যা: এজ ডিফারেন্স।
নায়িকার রানিং একটা সম্পর্ক থাকবে। ইউনিভার্সিটিরই একটা ছেলের সাথে।
এই সম্পর্কগুলো ঠিক প্রেম না, বন্ধু বা তারচেয়েও একটু বেশী টাইপ। ফর্মলি লাভইউ টাভইউ টাইপ কিছু না। জাষ্ট একসাথে ক্লাস, এসাইনমেন্ট, আড্ডা, দলবেধে ঘুরতে গেলে একটু পাশাপাশি থাকা এই যা।
মাঝে আরো বেশ কিছু টুকিটাকি সমস্যা হবে মেয়েটার বা তার পরিবারের। নায়ক খুব নিষ্ঠার সাথে এই সব সলভ করে দিবে।
কিন্তু এমন ভাবে করে দিবে যেন তা কোন ব্যাপারই না। খুব নিরবে, নিভৃতে পাশে থাকার মত।
চট করেই সিনেমাটিক কোন ঘটনায় নায়িকার অন্য কারো সাথে পরিচয় হয়ে যাবে। এখনের ছেলেটা বেশ মেয়ে-পটানো টাইপ। প্রেম বিষয়ক যাবতীয় ঢং ঢাং এই সম্পর্কে দেখানো হবে।
আর এত দিনে নায়কের সাথে খুব নিরব একটা নির্ভরতা মেয়েটার হয়ে যাবে যা নায়িকা বুঝবে না। ভার্সিটির বন্ধুটিকে ছেড়ে নতুন প্রেমে পড়ার সময়ও যাবতীয় এডভাইস সে নায়কের কাছ থেকেই নিবে। নায়ক সব সময়ই বলবে, লিসেন টু ইউর হার্ট।
নতুন ছেলেটার ব্যাপারে নায়ক সাবধান করে দিতে চাইবে কিন্তু যদি কিছু মনে করে ভেবে দিবে না। কিন্তু নজরে নজরে রাখবে।
মাঝে একদিন সে ডায়রীতে লিখবে, তবে কি তার প্রেমে বিফলতাই আমার সুযোগ? পরে অনেকটা জায়গা ফাঁকা রেখে নীচে লিখবে নাহ্ তুমি সুখী হও, তাই হোক, অবশ্যই তবে তাই হোক।
প্রমে, সংসারে মেয়েটা মারাত্মক সমস্যায় পড়বে। আর সব কিছুই ফোনে তারা শেয়ার করবে। পাশাপাশি ফ্ল্যাট অথচ কথা বলে শেয়ার করবে সব ফোনে। যে কোন ইস্যুতেই নায়িকা বকবক করতেই থাকবে আর নায়কটা মনযোগ দিয়ে সব শুনবে।
আর কথা শেষে ডায়রী লিখতে বসবে।
নায়িকা যখন তার প্রথম প্রেমের প্রতারণায় এবং সাংসারিক সমস্যায় পুরাই ভেঙ্গে পড়বে তখন এক দিন কাঁদতে কাঁদতে বলবে আই নিড এ শোল্ডার টু ক্রাই অন। নায়কটা সেদিন অনেক্ষন নিজের কাঁধের দিকে তাকিয়ে থাকবে ডায়েরীত মজা করে লিখবে, কাঁধেরও যোগ্যতা লাগে, যা আমার কাঁধের নাই।
মেয়েটা অনেক দিনই একা। কথা হয় প্রায়ই নায়কের সাথে।
নায়িকাটাও ফিল করে আস্তে আস্তে নায়কের সাপোর্ট, শেয়ার ইত্যাদি। কিন্তু সে ভাবে, এত কিছুর পরে আর কিভাবে? আর নায়ক ভাবে, যতটুকু আছে অতটুকুও যদি না থাকে!
নায়িকা সম্পূর্ণ ব্যার্থমনে বিদেশ চলে যাবে ঠিক করে। সে ছাত্রী ভালো, স্কলারশিপও পায়। যেদিন ফ্লাইট এর আগের রাতেই ডায়েরীটা ফেলে দিয়ে যায় নায়ক।
ডায়েরী পড়তে পড়তে প্রায় ভোর হয়ে যায়।
মাঝে মাঝে ঘড়ির ঘন্টা আগানো দেখানো হবে। ভোর চারটার দিকে ভদ্রলোক বৃদ্ধ বয়সে যা যা পড়তে হয় শীতের রাতে সব একে একে পড়বে। ড্রাইভারকে গাড়ী বের করতে বলবে...
পরের টা পরে
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।