এত দিন সুচিত্রার গুণমুগ্ধরা ফুল কিংবা উপহার আনলে তা প্রহরীদের ঘেরাটোপ পেরিয়ে কিছুতেই পেঁৗছত না নায়িকার কাছে৷ থেকে যেত 'বেদান্ত আবাসন'-এর নিরাপত্তারক্ষীদের হেফাজতেই৷ সুচিত্রা সেনের পারলৌকিক কাজের আগের দিন সেই 'কঠোর অনুশাসন' কিছুটা হলেও লঘু হল৷ রবিবার সকালে নিজের ফ্ল্যাট থেকে আবাসনের নিরাপত্তারক্ষীদের ফোন করে মুনমুন সেন জানতে চান, মায়ের কোনও ভক্ত কি ফুল দিয়ে গিয়েছে? বেদান্তর গেটের সামনে তখন ফুলের স্তূপ৷ নিরাপত্তাকর্মীরা তা জানান মুনমুনকে৷ এর পরই মুনমুন নিরাপত্তাকর্মীদের হকচকিয়ে দিয়ে বলেন, 'উপরে মায়ের ঘরে ফুলগুলো দিয়ে এসো৷' তবে সুচিত্রা সেনের ঘরে ভক্তদের পাঠানো ফুল প্রবেশের ক্ষেত্রে শর্তও চাপিয়েছেন তিনি৷ নিরাপত্তাকর্মীদের বলেছেন, কোনও মালা যেন উপরে না-পাঠানো হয়৷ শুধু ফুলই ছাড়পত্র পেতে পারে৷
অন্তরালে যাওয়ার পর থেকেই নিজের সব ছবি সুচিত্রা সরিয়ে দিয়েছিলেন তাঁর তিন হাজার স্কোয়্যার ফুটের ফ্ল্যাট থেকে৷ সেখানে ছবি থাকত শুধু রামকৃষ্ণ এবং সারদাদেবীর৷ সুচিত্রার নানা মুডের ছবি অবশ্য রয়েছে মুনমুন সেনের ফ্ল্যাটে৷ রবিবার সকালে মুনমুনের ফ্ল্যাট থেকে সুচিত্রা সেনের সব থেকে বড় পোট্রেট ফটোগ্রাফ আনা হয় সুচিত্রার ফ্ল্যাটে, রাখা হয় নায়িকার খাটে৷ তার সামনেই বিছিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ভক্তদের নিয়ে আসা ফুল৷
জীবনের শেষ তিরিশ বছর নিজের জীবন সম্পর্কে যে রকম গোপনীয়তা রক্ষা করেছিলেন সুচিত্রা, তাঁর পারলৌকিক কাজেও সেই গোপনীয়তা বজায় রেখেছেন মুনমুনরা৷ ঘুণাক্ষরেও বাইরের কাউকে জানতে দেওয়া হয়নি, সোমবারের কাজে আমন্ত্রিত কারা৷ তবে সূত্রের খবর, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, যুবকল্যাণমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস-সহ রাজ্যের আরও কয়েকজন মন্ত্রীকে ব্যক্তিগত ভাবে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মুনমুন সেন৷ তবে উত্তরবঙ্গ সফর রয়েছে বলে মমতা কোনও প্রতিশ্রুতি দিতে পারেননি মুনমুনকে৷ উত্তরবঙ্গ যাওয়ার আগে সকালের দিকে তিনি একবার সুচিত্রার বাড়ি ঘুরে যেতে পারেন বলে খবর৷ এ ছাড়াও, টলিউডের কিছু অভিনেতা-অভিনেত্রীর পাশাপাশি রিয়া-রাইমার বন্ধু-বান্ধবী এবং আত্মীয়-স্বজন, পরিবারের ঘনিষ্ঠদের আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷
জানা যাচ্ছে, 'বেদান্ত আবাসন'-এর যে বাসিন্দারা সুচিত্রার নিকট প্রতিবেশী হয়েও কোনও দিন নায়িকাকে চোখের দেখা দেখেননি, তাঁদেরও আজ পারলৌকিক কাজে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে৷ 'বেদান্ত আবাসন'-এর ছাদে ছ' হাজার বর্গফুট এলাকা জুড়ে এই অনুষ্ঠান হবে৷ ছাদে সুচিত্রার ফ্ল্যাটের উপরের অংশে একটি টেরাকোটার মন্দির রয়েছে৷ পারলৌকিক কাজ হবে সেখানেই৷
টানা চার বছর সুচিত্রার দেখভাল করেছেন তাঁর নার্স, সিস্টার অরুণা৷ তাঁর ছুটি হয়ে গিয়েছে শুক্রবারই৷ তবু তাঁকে পারলৌকিক কাজে আসতে অনুরোধ করেছিলেন মুনমুন৷ সুচিত্রাকে 'মা' বলে ডাকা অরুণা কিন্ত্ত বলছেন, 'মায়ের পারলৌকিক কাজে আসার ইচ্ছা নেই৷ খুব ভিড় হবে৷ মা ভিড় পছন্দ করতেন না৷ একা থাকতেই ভালোবাসতেন৷ আমি বরং বাড়িতে বসেই তাঁকে স্মরণ করব৷'
সূত্র: এই সময়
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।