উপমহাদেশের প্রখ্যাত সঙ্গীতজ্ঞ, সুরস্রষ্টা ও সঙ্গীত পরিচালক ভাস্কর চন্দ্রভারকার অতিথি প্রভাষক হিসাবে বছরে একবার পুণের ফিল্ম ইনস্টিটিউটে চলচ্চিত্রের ছাত্রদের সাথে সঙ্গীত নিয়ে কথা বলতে আসতেন। প্রথম দিন ক্লাসের পরিচিতি পর্বে বাংলাদেশ থেকে এসেছি জেনে ক্লাস শেষে আমাকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘ঢাকার খ্যাতিমান সেতার বাদক সাঈদ আহমদ এখন কোথায় আছেন, কেমন আছেন?’ সাঈদ আহমদকে আমি পেয়েছি বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক হিসাবে, এ ছাড়াও নাটক ও শিল্পকলায় তিনি ছিলেন সরাসরি আমার শিক্ষক আর পরবর্তী সময়ে তাঁকে পেয়েছি পরিবারের একান্ত ঘনিষ্ঠ বন্ধুর মতো। প্রফেসর চন্দ্রভারকারকে যখন বললাম, ‘আমি যে সাঈদ আহমদকে জানি, তিনি একজন নাট্যকার এবং বাংলাদেশ সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা। ’ ভাস্কর জানালেন, ‘সাঈদ একজন গুণী সেতার বাদক। লন্ডনে থাকাকালীন বিবিসির বাংলা, হিন্দি, ঊর্দু এবং সিলোনিজ সার্ভিসে নিয়মিত সেতার বাজাতেন।
এ ছাড়াও ঢাকায় ‘সাঈদ আহমদ এ্যান্ড সোসাইটি’ নামে একটি গানের দলও ছিল তাঁর। ’
বাংলাদেশ টেলিভিশনে দীর্ঘ বত্রিশ বছর একটানা কাজ করার কারণে অন্তত এক ডজন মহাপরিচালকের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার সৌভাগ্য (এবং অনেক ক্ষেত্রেই দুর্ভাগ্য) হয়েছে। মহাপরিচালক মহোদয়দের এই দীর্ঘ তালিকার শীর্ষে যে দু তিনটি নাম তার মধ্যে অন্যতম প্রধান নামটি অবশ্যই সাঈদ আহমদ। আপাদমস্তক পরিশিলিত ব্যক্তিত্বের অধিকারী সাঈদ আহমদ ছিলেন একাধারে নাট্যকার, শিল্প সমালোচক, অনুবাদক এবং সঙ্গীতজ্ঞ। সরকারের একজন উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা তথা পেশাদার ব্যুরোক্রাট হয়েও তিনি তাঁর সৃজনশীল কাজের পথযাত্রা থেকে বিচ্যুত হননি কখনো।
অন্যদিকে সাম্প্রতিক কালের অনেক কবি বা লেখক যশোপ্রার্থী আমলার মতো নিজের পদ বা পরিচয়কে তাঁর কাজে লাগাতে হয়নি। বাংলা ভাষায় এ্যাবসার্ড নাটকের পথিকৃৎ সাঈদ আহমদ ছিলেন নাটকের ক্ষেত্রে নিবেদিত প্রাণ মানুষ। আড়াই হাজার বছর আগের গ্রিক ট্রাজেডি থেকে শুরু করে সমসাময়িক কালের অসংখ্য নাটক ও নাট্যকার সম্পর্কে তাঁর জানাশোনা ছিল বিস্ময়কর।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশের চিরায়ত নাটক ও খ্যাতনামা নাট্যকারদের সাথে বাংলাদেশের দর্শকদের পরিচয় করিয়ে দেয়ার লক্ষ নিয়ে ‘বিশ্ব নাটক’ অনুষ্ঠানটি ১৯৮২ সালের প্রথম দিকে শুরু হয়ে কয়েকটি পর্ব প্রচারের পর বন্ধ হয়ে যায়। এরশাদের সামরিক শাসন জারির কিছুদিন পরে বিটিভির মহাপরিচালকের দায়িত্ব নেয়ার পরে নীতিগতভাবে নিজের অনুষ্ঠান প্রচার সমীচীন নয় বলে তিনি নিজেই এই সিদ্ধান্ত দিয়েছিলেন।
সে সময় সেনাবাহিনীর একটি ইউনিট স্থায়ীভাবে বাংলাদেশ টেলিভিশনে অবস্থান গ্রহণ করেছিল। বেতার টেলিভিশন ঘিরে এই অতিরিক্ত যুদ্ধাংদেহী ব্যবস্থা শুধু সামরিক শাসকের প্রচার মাধ্যমগুলোর নিরাপত্তা বিধানের জন্য হলে আমাদের দিক থেকে বলার কিছু ছিল না। প্রথম থেকেই সংবাদ প্রচারের পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ সামরিক কর্মকর্তারা নিজেদের হাতে নিয়েছিলেন। কয়েকদিন পরে তাঁরা অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রেও নাক গলাতে শুরু করলেন। একজন মেজর সাহেব অনুষ্ঠান প্রচারের আগে অবলোকন করে প্রচারের ছাড়পত্র দিলে অনুষ্ঠান প্রচারিত হতো।
অনেক সময় তাঁর মতামতের ভিত্তিতে অনুষ্ঠান পুনঃসম্পাদনা করে প্রচারের ঘটনাও ঘটেছে বেশ কয়েকবার।
আমি তখন ’শ্যামল ছায়া’ নামে বাংলা ভাষা সংস্কৃতি ঐতিহ্য নিয়ে একটি অনুষ্ঠান সবে শুরু করেছি। আমার পরিকল্পনা প্রযোজনায় অনুষ্ঠানটি উপস্থাপন করতেন জহুরুল আলম (বর্তমানে পাবলিক সার্ভিস কমিশনের সদস্য)। অনুষ্ঠানের শুরুর দিকের একটি পর্বে অধ্যাপক নরেন বিশ্বাস প্রথমবারের মতো টেলিভিশনে চর্যাপদ থেকে কয়েকটি কবিতা পাঠ করে সমসাময়িক সমাজ ও কবিতার প্রাসঙ্গিকতা নিয়ে কথা বলেছিলেন। অনুষ্ঠানটি যে দিন প্রচার হবার কথা সেদিন সকালে অফিসে যেতেই মেজর সাহেবের কক্ষে ডাক পড়লো।
শুরুতেই তিনি বললেন, ‘আপনার অনুষ্ঠানে হিন্দি কবিতা লাগিয়েছেন কেন? দেশটা কি আপনারা ইন্ডিয়া বানাতে চান?’ বুঝলাম অধ্যাপক নরেন বিশ্বাসের ‘আলিয়ে কালিয়ে বাট রুন্ধেলা/তা দেখি কাহ্ন বিমন ভৈলা...’ মেজরের অজ্ঞতাবশত হিন্দি বলে মনে হয়েছে। আমি সবিনয়ে জানালাম ‘এখানে কোনো বিদেশি ভাষা ব্যবহার করা হয়নি, আপনি যা শুনেছেন তা বাংলা ভাষারই প্রাচীন রূপ। ’
এরপর অনুষ্ঠান তো বটেই আমার নিজের ভাগ্যে কী ঘটতে যাচ্ছে তা অনুমান করাও কঠিন ছিল। বিষয়টি জেনারেল ম্যানেজার হয়ে মহাপরিচালক পর্যন্ত পৌঁছে গেল। সাঈদ আহমদ সাহেব মাঝে মাঝেই খাস ঢাকাইয়া ভাষায় কথা বলতেন।
আমাকে ডেকে বললেন, ‘আরে মিয়াÑ তুমি আর কাম পাও নাই মেজর সাহেবরে চর্যাপদ বুঝাইতে গেছো!’
বললাম, ‘স্যারÑ চর্যাপদ তো আমি মেজর সাহেবকে শোনাতে চাইনি অনুষ্ঠানটা করেছি দর্শকের জন্য। ’
‘আচ্ছা খাড়াও দেখতাছি, আর্মির বড় সাহেব গো লগে একটু বাতচিত কইরা লই। ’
সে সময় সেনা বাহিনীর পক্ষে ব্রিগেয়িার চিশতি এবং পরবর্তীতে কর্নেল শাহ সালাহউদ্দিন বেতার ও টেলিভিশনসহ মিডিয়া সম্পর্কিত বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ করতেন। বিটিভির মহাপরিচালক কার সাথে কথা বলেছিলেন আমার জানা নেই। তবে সেদিনের ‘শ্যামল ছায়া’ অনুষ্ঠানটি ‘আনকাট’ প্রচারিত হয়েছিল এবং এরপর থেকে অনুষ্ঠানে সেনা কর্মকর্তাদের হস্তক্ষেপও পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গিয়েছিল।
১৯৮৮ সালে সরকারি দায়িত্ব থেকে অবসর গ্রহণের পরে সাঈদ আহমদ নতুন করে শুরু করেছিলেন ‘বিশ্ব নাটক’। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা ছাড়াও শুরুতে কয়েক বছর নাটক নির্বাচন ও নাটকের ইতিবৃত্ত সম্পর্কিত গবেষণার কাজটিও তিনি নিজেই করতেন। বিশ্ব নাটকের প্রথম কয়েকটি পর্ব আমার সহকর্মী খ ম হারূন ও সালেক খানের প্রযোজনায় নির্মিত হলেও ১৯৮৯ সাল থেকে দীর্ঘ দেড় যুগে দেড় শতাধিক নাটক, নাট্যালেখ্য ও চিরায়ত নাটক নিয়ে সাঈদ আহমদের সাথে কাজ করার সুযোগ হয়েছে। এই বিপুল সংখ্যক নাটকের পরিচালক প্রযোজক হিসাবে কাজ করার যে অভিজ্ঞতা তা আমার টেলিভিশন জীবনের তিন দশকে সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি বলে আমি মনে করি।
নাটক নির্বাচনের ক্ষেত্রে অস্কার ওয়াইল্ড, জাঁ পল সার্ত্র, টেনাসি উইলিয়ামস, আন্তন চেখভ, ব্রেটোল্ড ব্রেখট, স্যামুয়েল বেকেট, হেনরিক ইবসেন, জন গসওয়াদি বা জে বি প্রিসলির মতো প্রথিতযশা ও সুপরিচিত নাট্যকারদের পাশাপাশি তুলনামূলকভাবে কম পরিচিত এবং সমসাময়িক নাট্যকারদের নাটক ও নাট্যকারদের পরিচিতিও তুলে ধরা হয়েছে।
অগাস্ত স্ট্রিন্ডবার্গ (সুইডেন) ফেদরিকো গার্সিয়া লোরকা (স্পেন) ওলে সোয়েঙ্কা (নাইজেরিয়া), ভাসলভ হাভেল (চেকোশ্লোভাকিয়া), ইউকিও মিশিমা (জাপান) নিকোলাই গোগোল, (রাশিয়া) এডোয়ার্ড বন্ড (ইংল্যান্ড), শন ওকেসি (আয়ারল্যান্ড), এডোয়ার্ড আলবি (যুক্তরাষ্ট্র), লুকা কারাজিয়েলে (রোমানিয়া), গুয়ান হাইচিং (চীন) এবং তওফিক আল হাকিম (মিশর)-এর নাটক বিশ্ব নাটক অনুষ্ঠানে অন্তর্ভূক্ত করে অনুষ্ঠানটিকে সত্যিকারের আন্তর্জাতিক রূপ দেয়ার ব্যাপারে আমাদের চেষ্টার কোনো ত্রুটি ছিল না। ‘বিশ্ব নাটক’ অনুষ্ঠানটি নিয়মিত চালু রাখতে যে বিপুল পরিমাণে অনূদিত নাটকের প্রয়োজন ছিল তা যোগান দেয়া ছিল রীতিমতো কঠিন কাজ। প্রচারিত দেড় শত নাটকের মধ্যে সাঈদ আহমদ নিজে অনুবাদ করেছেন অন্তত গোটা পনের নাটক।
অনুষ্ঠান উপস্থাপনায় সাঈদ আহমদ যেমন সহজ স্বাভাবিক ঘরোয়া ভাষায় কথা বলতেন ব্যক্তি জীবনেও ছিলেন অত্যন্ত সাধারণ। ছোট বড় সকলের সাথে মিশতে পারতেন নির্দ্বিধায়।
বাংলাদেশ সরকারের সচিব হিসাবে অবসর নিয়েছিলেন, কিন্তু ঢাকা শহরের কোথাও কোনো বাড়ি বা এ্যাপার্টমেন্ট ছিল না তাঁর। লালমাটিয়ায় এবং পরে ধানমন্ডিতে তিন রুমের একটি অতি সাধারণ ভাড়া বাসায় জীবন কাটিয়েছেন তিনি। আড্ডা জমাতে এবং বন্ধু বান্ধবসহ লেখক কবি শিল্পী সাহিত্যিকদের বাড়িতে ডেকে খাওয়াতে পছন্দ করতেন। দেশি বিদেশি সাংস্কৃতিক জগতের অনেক গুণী মানুষের সাথে পরিচয় ঘটেছে তাঁর লালমাটিয়ার বাসায়। এদের মধ্যে ভারতের প্রখ্যাত নাট্য নির্দেশক অভিনেতা হাবীব তানভীরের কণ্ঠে গান শোনার এবং তাঁর সাথে প্রায় দিনব্যাপী আলাপ আলোচনার এক বিরল সুযোগের কথা বিশেষভাবে মনে রাখার মতো।
সাঈদ আহমদ মানুষ হিসাবে কতটা উদার প্রকৃতির ছিলেন তার একটি উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। ঢাকার এক গ্রুপ থিয়েটারের একটি নাটক মহিলা সমিতি এবং গাইড হাউস মঞ্চে বেশ কয়েক মাস ধরে চলছিল। বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে নাটকটির প্রদর্শনীতে হলের বাইরে প্রায় নিয়মিতভাবে ‘হাউজ ফুল’ ঝুলতে দেখা গেছে। আমি নিজেও নাটকটি দেখেছি এবং বলা যায় উপভোগ করেছি। আমরা যখন বিটিভিতে ওলে সোয়েঙ্কার ‘সোয়াম্প ডুয়েলার্স’ (বিলের মানুষ নামে অনুবাদ করেছিলেন আলী আহমেদ) নিয়ে কাজ করছি তখন মূল নাটকটি পড়ার জন্যে আমি ‘সিলেক্টটেড প্লেজ অব ওলে সোয়েঙ্কা’ বইটি সাঈদ আহমদের কাছ থেকে নিয়ে এসেছিলাম।
‘সোয়াম্প ডুয়েলার্স’ পড়া শেষ করে অন্য একটি নাটক পড়ার সময় দেখা গেল মহিলা সমিতির মঞ্চে দেখা সেই নাটকটির সাথে কোথায় যেনো মিল খুঁজে পাচ্ছি। নাটকের অন্তত একটি দৃশ্যে এই মিল এতা বেশি যে তাকে সরাসারি বঙ্গানুবাদ বললেও বাড়িয়ে বলা হয় না। কথাটা সাঈদ আহমদকে জানালাম। বিষয়টা একটু ভেবে নিয়ে বললেন,‘এই কথা আর কাউকে বলার দরকার নেই। যিনি লিখেছেন তিনি নিশ্চয়ই সোয়েঙ্কা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে লেখাটা নিজের মতো করেই লিখেছেন।
তাছাড়া আমাদের সাংস্কৃতিক জগতে তাঁর একটা সম্মান আছে, সেটা নষ্ট করা উচিত হবে না। ’ আমি জানি, আমাদের সাংস্কৃতিক জগতের রথী মহারথীদের অনেকেই এ ধরণের একটি ঘটনার উৎস খুঁজে পেলে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে তা কাজে লাগাতে একটুও দেরি করতেন না।
কালবেলা, মাইলপোস্ট, তৃষ্ণায়, একদিন প্রতিদিন ও শেষ নবাবÑ মাত্র পাঁচটি মৌলিক নাটক লিখেই সাঈদ আহমদ বাংলা নাটকে যে ধারার সূচনা করেছিলেন তা তাঁকে এবং আমাদের নাটককে বিশ্বের সাহিত্য অঙ্গণে পরিচিত করেছে। নাটকগুলো ফরাসি, জার্মান, ইতালিয়ান, রুশ, ঊর্দু ও পাঞ্জাবি ভাষায় অনুদিত হয়েছে এবং দেশের বাইরে মঞ্চস্থ হয়েছে ভারত, পাকিস্তান, যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রে। বিশ্বের অনেক দেশের নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ে অতিথি প্রভাষক হিসাবে নাটক ও শিল্পকলা সম্পর্কিত বিষয়ে ভাষণ দেয়ার জন্য আমন্ত্রিত হয়ে ফ্রান্স, জার্মানি, ব্রাজিল, চীন, জাপান, নেদারল্যান্ডস, রাশিয়া, মালয়েশিয়াসহ তিনি ভ্রমণ করেছেন প্রতিবেশি দেশগুলোতেও।
শিল্প ক্ষেত্রে অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে ১৯৯৩ সালে লাভ করেছেন ফরাসি সরকারের দেয়া সম্মাননা লিজিওন ডি অনার। দেশে বাংলা একাডেমি পুরস্কার, শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার ও একুশে পদক ছাড়াও পেয়েছেন আরও অসংখ্য পুরস্কার ও সম্মাননা।
বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক হিসাবে সাঈদ আহমদ কতটা সফল ছিলেন সে বিবেচনায় না গেলেও বলা যায় জাতীয় টেলিভিশনের মতো একটি সংস্থার প্রধান হিসাবে নেতৃত্ব দেয়ার ক্ষেত্রে যে প্রশাসনিক যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতার প্রয়োজন এবং এ ধরনের একটি প্রতিষ্ঠানে যে মেধা ও মননের প্রয়োজন সেক্ষেত্রে তাঁর কোনো অপূর্ণতা ছিল না। বিশেষ করে শিল্প-সাহিত্য-সংস্কৃতির বিভিন্ন শাখায় তাঁর সচ্ছন্দ্য বিচরণ এই প্রতিষ্ঠানে একটি বৈপ্লবিক পরিবর্তনের সূচনা করতে পারতো। কিন্তু সরকারি নিয়ম নীতির কঠিন বাধা নিষেধ আর সামরিক স্বৈরাচারের নানামুখি হস্তক্ষেপের কারণে অল্প কিছু দিনের মধ্যেই তিনি বিরক্ত হয়ে পড়েছিলেন।
পরবর্তীতে মূলত আমলা নির্ভরতার কারণে এবং আরও পরে রাজনৈতিক বিবেচনায় নিয়োগ প্রাপ্তদের কার্যকালে বিটিভি ক্রমেই তার গৌরবোজ্জ্বল অতীত থেকে চূড়ান্ত অধোগতির তলানিতে এসে ঠেকেছে।
২১ জানুয়ারি সাঈদ আহমদের চতুর্থ মৃত্যু বার্ষিকী। আমাদের সাংস্কৃতিক জগতের এই গুণী মানুষটিকে আজ স্মরণ করি বিনম্র শ্রদ্ধায় ।
লেখক: মুক্তিযোদ্ধা, সাবেক উপ-মহাপরিচালক, বাংলাদেশ টেলিভিশন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।