বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি বাড়াতে নতুন উদ্যোগ হিসেবে বেসরকারি খাতের জন্য ঋণ প্রবাহ কিছুটা বাড়িয়ে অর্থবছরের দ্বিতীয়ার্ধের নতুন মুদ্রানীতি ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। ষাণ্মাসিক মুদ্রানীতিতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ প্রবৃদ্ধির হার নির্ধারণ করা হয়েছে ১৭ শতাংশ, যা আগের মুদ্রানীতিতে ছিল সাড়ে ১৫ শতাংশ। বৃহৎ বিনিয়োগে দেশের করপোরেট ও বহুজাতিক গ্রুপের অর্থায়নে ব্যাংকিং খাতের পরিবর্তে শেয়ারবাজার ও ডিবেঞ্চার ইস্যুর দিকে জোর দেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
গতকাল এক সংবাদ সম্মেলনে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর ড. আতিউর রহমান ২০১৩-১৪ অর্থবছরের দ্বিতীয় ষাণ্মাসিক মুদ্রানীতি ঘোষণা করেন। গভর্নর বলেন, বিগত ছয় মাসে রাজনৈতিক সহিংসতায় আমাদের নানামুখী ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয়েছে। এর পরও রপ্তানি প্রবৃদ্ধি ১৮ শতাংশ ছিল। এ সময় আর্থিক কর্মকাণ্ড স্থিতিশীল ও বিনিয়োগকারীদের আস্থা ধরে রাখতে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। আগামীতে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকলে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৬ শতাংশের কাছাকাছি থাকবে।
ড. আতিউর রহমান বলেন, বিভিন্ন কারণে এখন খাদ্য মূল্যস্ফীতির ঊধর্্বগামী রয়েছে। আমরা খাদ্য মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে সব রকমের পদক্ষেপ নেব। কৃষি খাতে ঋণ জোগান পর্যাপ্ততার ওপর বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ নজর জোগান সহায়ক হয়ে খাদ্য মূল্যস্ফীতির চাপ প্রশমনে ভূমিকা রাখবে বলে আমি মনে করি। তিনি আরও বলেন, এই মুদ্রানীতিতে নতুন কিছুই নেই। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক তার সহায়ক ভূমিকাকে আরও জোরদার করার অংশ হিসেবে প্রবাসীদের সঞ্চয় টাকা ট্রেজারি বিল/বন্ডে বিনিয়োগে আকর্ষণে ব্যাংকগুলোকে সক্রিয় করার একটি কার্যক্রম হাতে নিচ্ছে। বিদেশি প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা ইতোমধ্যে এসব আকর্ষণীয় মুনাফা হারের সুযোগ নিয়ে ট্রেজারি বিল/বন্ড ক্রয় করছে। সার্বিক বিবেচনায় আগামীর মুদ্রা ব্যবস্থাকে বিনিয়োগ সহায়ক করতে বাংলাদেশ ব্যাংক কার্যকর পদক্ষেপ নেবে। ঘোষিত মুদ্রানীতিতে বলা হয়েছে, গত এক বছরের রাজনৈতিক সহিংসতায় আমাদের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, বিনিয়োগ, মূল্যস্ফীতির ওপর চাপ রয়েছে। এ সংকট কাটাতে বিনিয়োগ সহায়ক নীতি গ্রহণ করা হবে। বিনিয়োগ প্রবৃদ্ধি বাড়াতে বেসরকারি খাতে ঋণ প্রবাহ বাড়ানো হবে। সরকারের ঋণ গ্রহণের সহনশীল মাত্রা অক্ষুণ্ন রাখা হবে। কোনোভাবেই এই হার বাড়ানো হবে না। এতে আরও বলা হয়েছে, দেশের বড় করপোরেট ও কংগ্লোমারেট (বৃহৎ পুঁজি) গ্রুপগুলোকে অর্থায়ন জোগানের জন্য ব্যাংকগুলোর চেয়ে পুঁজিবাজারে ইক্যুয়িটি ও ডিবেঞ্চার ইস্যুর দিকে জোর দেওয়া হবে। যাতে ব্যাংক ব্যবস্থার স্বল্পমেয়াদি আমানতভিত্তিক বিনিয়োগ ক্ষুদ্রতর আকারের ঋণগ্রহীতাদের জন্য সুলভ থাকে। তবে এ মুদ্রানীতিতে রেমিট্যান্স আন্তঃপ্রবাহের প্র্রবৃদ্ধিতে সাম্প্রতিক মন্দায় রিজার্ভ নিয়ে ঝুঁকি তৈরি হয়েছে বলে কেন্দ্রীয় ব্যাংক চিহ্নিত করেছে।
ডেপুটি গভর্নর আবু হেনা মোহা. রাজী হাসানের উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে ডেপুটি গভর্নর এস কে সুর চৌধুরী, নাজনীন সুলতানা, প্রধান অর্থনীতিবিদ ড. হাসান জামানসহ বাংলাদেশ ব্যাংকের ঊধর্্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।