তবে জামায়াতে ইসলামীর আমির ও তখনকার শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী ছিলেন অনেকটাই শান্ত, হাতে থাকা বোতল থেকে শরবত পান করতেও দেখা গেছে তাকে।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ ও বিশেষ ট্রাইবুন্যাল-১ এর বিচারক এসএম মজিবুর রহমান বৃহস্পতিবার বেলা সাড়ে ১২টায় জনাকীর্ণ আদালতে দশ বছর আগের চাঞ্চল্যকর এই মামলার রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে চোরচালানের দায়ে নিজামী ও বাবরসহ ১৪ আসামিকে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন তিনি।
রায় শুনেই উত্তেজিত হয়ে উঠতে দেখা যায় এক সময়ের বিএনপি নেতা বাবরকে। তিনি দাবি করেন, এই রায়ে ন্যায়বিচার হয়নি।
“আমি আল্লাহর কাছে ফরিয়াদ জানাচ্ছি, যিনি অন্যায়ভাবে রায় দিয়েছেন, তারও যেন বিচার হয়। ”
ক্ষমতায় থাকতে ইংরেজি-বাংলা মিশিয়ে নানা অদ্ভুত মন্তব্যের জন্য বার বার সংবাদ শিরোনামে আসা এই সাবেক প্রতিমন্ত্রী জানান, তিনি এই রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে এই মামলা করে তার রায় দেয়া হয়েছে মন্তব্য করে আখেরে আল্লাহর কাছে ন্যায়বিচার পাওয়ার আশা প্রকাশ করেন তিনি।
রায়ের পর বাবরের এই উত্তেজনার মধ্যেই এজলাস থেকে বেরিয়ে যান বিচারক। তখনো জামায়াত আমির নিজামীকে দেখা যায় অনেকটাই নির্লিপ্ত।
একাত্তরের হত্যা-লুটপাট-নির্যাতনের মতো যুদ্ধাপরাধের মামলায় রায়ের অপেক্ষায় থাকা নিজামী সাংবদিকদের প্রশ্নের জবাবে এই জামায়াত নেতা শান্ত ভঙ্গিতে বলেন, আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে আপিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন।
এদিকে ফাঁসির আদেশ পাওয়া আরেক আসামি চট্টগ্রাম ইউরিয়া সার কারখানার (সিইউএফএল) সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কে এম এনামুল হক রায় শুনেই অসুস্থ হয়ে পড়েন।
তিনি অচেতন হয়ে পড়লে ধরাধরি করে তাকে আদালত কক্ষ থেকে বাইরে নিয়ে আসায় হয়।
২০০৪ সালের ১ এপ্রিল রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে কর্ণফুলী নদী তীরে সিইউএফএলের সংরক্ষিত জেটিঘাটেই দুটি মাছ ধরার ট্রলার থেকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র খালাস করে ট্রাকে তোলার সময় আটক করে পুলিশ।
বিএনপি-জামায়াত জোট সরকারের আমলে এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদের সর্ববৃহৎ চালান ধরা পড়ার পর দেশব্যাপী ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়।
পরে তদন্তে দেখা যায়, সমুদ্রপথে চীন থেকে ভারতীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘উলফা’র জন্য আনা এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদ বাংলাদেশের ভূখণ্ড ব্যবহার করে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে ভারতে নিয়ে যাওয়ার কথা ছিল।
ওই ঘটনায় চোরাচালান ও অস্ত্র আইনের দুই মামলায় আসামি ছিলেন মোট ৫২ জন, যাদের মধ্যে ৩৮ জনকে খালাস দিয়েছে আদালত।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।