আমার ব্লগ এ কিছু আজব আজ লেখা পোস্ট করবো যা কিছুটা ভিন্ন হলেও জীবনের করুণ সত্যি। কিছুটা কাল্পনিক আবার কিছুটা বাস্তবের সমন্নিতরুপ থাকবে প্রতিটি লেখায়। পোস্ট অফিস একটি পাবলিক প্লেস। বিভিন্ন রকম সেবা গ্রহণের জন্য নারী, শিশুসহ সাধারণ মানুষ পোস্ট অফিসে আসে। এরা কেউ যেন পরোক্ষ ধুমপানের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, তাই জিপিও (জেনারেল পোস্ট অফিস) দেশের ডাক বিভাগের প্রধান কার্যালয় আজ থেকে ধূমপানমুক্ত।
এছাড়া সারাদেশের ৯৮৮৬টি ডাকঘর রয়েছে, সেগুলো ধূমপানমুক্ত রাখতে হবে। বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ধূমপানমুক্তকরণ কর্মসূচি উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে ডাক টেলিযোগ মন্ত্রী এডভোকেট সাহার খাতুন এমপি এ ঘোষণা দেন।
বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট, বাংলাদেশ ডাক বিভাগ ও ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর যৌথ উদ্যোগে ১২ ডিসেম্বর ২০১২ জিপিও মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এক সভায় ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী সাহারা খাতুন আরও বলেন, জিপিও ও ডাক বিভাগের কার্যালয়ে যারা কাজ করেন, আপনারা ধূমপানমুক্ত প্রতিষ্ঠানে ধূমপান থেকে বিরত থাকবেন এবং আগতদের কেউ যেন ধূমপান না করে, তা নিশ্চিত করবেন।
ডাক বিভাগের মহাপরিচালক নায়েব দেলোয়ার হোসেন এর সভাপতিত্বে এবং ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর কর্মসূচি সমন্বয়কারী আমিনুল ইসলাম সুজন এর সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোট-এর সমন্বয়কারী সাইফুদ্দিন আহমেদ, বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপি’র উপ-মহাপরিচালক এ কে এম মিজানুর রহমান, জাতীয় তামাক নিয়ন্ত্রণ সেল এর কর্মসূচি ব্যবস্থাপক আমিনুল আহসান, প্রত্যাশা মাদক বিরোধী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক হেলাল আহমেদ প্রমুখ। সভায় প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ডাব্লিউবিবি ট্রাস্ট এর পরিচালক এডভোকেট সৈয়দ মাহবুবুল আলম।
সাহারা খাতুন এমপি বলেন, আজ একটি বিশেষ দিন। ২০১২ সালের ১২ ডিসেম্বর। ১২-১২-১২ এই দিনটিতে আমরা একটি ভাল কাজে (জিপিও ধূমপানমুক্ত) স্মরণীয় করে রাখতে পেরে আনন্দিত। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যে তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন রয়েছে সে আইনটি দুর্বল। তাই সরকার তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনকে যুপোপযুগী করার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।
ইতোমধ্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে মন্ত্রী পরিষদ সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইনের চুড়ান্ত খসড়া অনুমোদন করেছে। আশা করা যাচ্ছে, আগামী সংসদ অধিবেশনে সংশোধিত তামাক নিয়ন্ত্রণ আইন পাস হবে।
সাইফুদ্দিন আহমেদ বলেন, তামাক নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশের অগ্রগতি অনেক। এ অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে এবং নারী-শিশুসহ অধূমপায়ী জনগোষ্ঠীকে পরোক্ষ ধূপমানের ক্ষতিকর দিক থেকে রক্ষায় সব সরকারি অফিস-আদালত-শিল্প প্রতিষ্ঠান-রেস্টুরেন্ট শতভাগ ধূমপানমুক্ত রাখা দরকার। তিনি আরও বলেন, ২০০১ সালের ৩১ মে, বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস-এর ন্যায় প্রতিবছর বিশ্ব তামাকমুক্ত দিবস উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করলে ডাক বিভাগে কর্মরতসহ এর সেবা গ্রহীতাদের মধ্যে ধূমপান ও তামাকের ক্ষতিকর বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি পাবে।
এ কে এম মিজানুর রহমান বলেন, আনসার ও ভিডিপি একটি সুশৃঙ্খল বাহিনী। সারাদেশে প্রায় ৬০ লক্ষ কর্মী বাহিনী রয়েছে। সুবৃহৎ এ বাহিনীর প্রধান কার্যালয়সহ সারাদেশের সব কার্যালয় ইতোমধ্যে ধূমপানমুক্ত করা হয়েছে। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় অন্যান্য সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোকেও এগিয়ে আসতে হবে।
আমিনুল আহসান বলেন, তামাক একটি বহুমাত্রিক ক্ষতিকর উপাদান।
এর ফলে মানুষের মৃত্যুই হয় না, মানুষ আর্থিকভাবেও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাই স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয় তামাক নিয়ন্ত্রণ কার্যক্রমকে জোরালো করার পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে।
নায়েব দেলোয়ার হোসেন সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ডাক বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা নিষ্ঠার সঙ্গে মানুষকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে। জনসেবার পাশাপাশি অধূমপায়ীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষায়ও আমরা কাজ করে যাব। ডাক বিভাগের প্রধান কার্যালয়, জিপিও ও অন্যান্য কার্যালয় ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করায় মাননীয় মন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাাচ্ছি।
আগামীতে ডাক বিভাগের সব কার্যালয় ধূমপানমুক্ত রাখা হবে।
প্রবন্ধে সৈয়দ মাহবুবুল আলম বলেন, বাংলাদেশে সরকারিভাবে প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে ধূমপানমুক্তকরণ কর্মসূচি ব্যাপক আকাওে শুরু হয় ২০১০ সালের ৩১ মে এডভাকেট সাহারা খাতুন এমপির নেতৃত্বে। তিনি রমনা থানাকে ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করেন। এ ধারাবাহিকতায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন দেশের সব সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করে। বাংলাদেশ আনসার ও ভিডিপির সব কার্যালয, পরিবেশ অধিদপ্তরের সব কার্যালয়, বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স এর সব কার্যালয়, বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কতৃপক্ষ (বিআরটিএ) সব গণপরিবহণকে ধূমপানমুক্ত ঘোষণা করেন।
এছাড়া বিভিন্ন সিটি করপোরেশনসহ স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠান, জেলা প্রশাসক ও সিভিল সার্জন কার্যালয়, দর্শনীয় স্থান ধূমপানমুক্ত হয়েছে। এ ধারাবাহিকতায় আজ ডাক বিভাগের সব কার্যালয় ধূমপানমুক্ত হচ্ছে। বাংলাদেশের তামাক নিয়ন্ত্রণের জন্য এটি ইতিবাচক দিক।
আলোচনা সভা শেষে ডাকবিভাগ ধূমপানমুক্তকরণ কর্মসূচির ফিতা কেটে ধূমপানমুক্ত ডাক বিভাগের আনুষ্ঠানিকতা সম্পন্ন করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ডাক বিভাগের উর্ধ্বতন কর্মকর্তা, শ্রমিক ইউনিয়ন এর নেতৃবৃন্দ, জাতীয় যক্ষা নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচি (নাটাব), একলাব, এইড, টিএমএসএস, প্রত্যাশা, মানবিক, শার্প, বিআরসিটি, গ্রীণ মাইন্ড, হিলসসহ বাংলাদেশ তামাক বিরোধী জোটভূক্ত বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।