আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কৌতূহল ভূতে, আগ্রহ মুক্তিযুদ্ধে

বইমেলার মূল প্রাঙ্গণ বাংলা একাডেমি চত্বরে ২৪টি শিশু-কিশোর প্রকাশনা সংস্থাকে ৩৩টি স্টল বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ এলাকাটি শিশু কর্ণার নামেই পরিচিত।

বৃহস্পতিবার শিশু কর্ণারে পা রাথতেই চোখে পড়লো শিশুদের, অভিভাবকদের সঙ্গে ঘুরে ঘুরে বই দেখছে তারা।

শিশু প্রকাশনা সংস্থাগুলো জানায়, এ বছর ভূত ও হাসির বইয়ের পাশাপাশি চাহিদা রয়েছে মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক বইয়ের।

চার বছরের মেয়ে ঐশী এবং সাত বছরের ভাতিজা সাম্যকে নিয়ে মেলায় এসেছেন শাহীনুর রহমান।

“তাদের পছন্দ ভূত আর কৌতুকের বই। তবে আমি ওদের দুটো মুক্তিযুদ্ধের বই কিনে দিয়েছি। এতে ওদের এ বিষয়টা জানার আগ্রহ জন্মাবে,” বলেন তিনি।  

শুধু মুক্তিযুদ্ধের বই নিয়ে মেলায় এসেছে সেন্টার ফর বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়্যার স্ট্যাডিজ।

মেলায় সংস্থাটির সমন্বয়কারী শহীদুল আলম বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, শিশুদের জন্য মুক্তিযুদ্ধের বইগুলো বেশ ভালো বিক্রি হচ্ছে।

এরমধ্যে ‘মুক্তিযুদ্ধের কমিক সিরিজ’র ৬টি বই, ‘বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের গল্প’, ‘বাংলাদেশের সব বীরশ্রেষ্ঠর কথা’, ‘কিশোর মুক্তিযুদ্ধ সমগ্র’ এবং ‘ছড়া ও ছবিতে মুক্তিযুদ্ধ’ সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে।

শিশু একাডেমির স্টলের দায়িত্বে থাকা মিজানুর রহমানও একই কথা বলেন।

এখান থেকে সবচেয়ে বেশি বিক্রির তালিকায় রয়েছে ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প শোন’ ও ‘মুক্তিযুদ্ধের গল্প বলি’।  

প্রকাশনা সংস্থা আরো প্রকাশনের রোমান মল্লিক জানান, তাদের স্টলে ভূত ও হাসির বইগুলো সবচেয়ে বেশি বিক্রি হচ্ছে।

প্রকাশনা সংস্থা পিপিএমসির রোহানুল ইসলাম বলেন, এখনো মেলায় নতুন বই না আসলেও আগামী কয়েকদিনের মধ্যে তিনটি শিশু উপন্যাস আসছে।

 

ষষ্ঠ দিনে মেলায় নতুন বই এসেছে ৯৭টি। এরমধ্যে গল্প ১২টি, উপন্যাস ২০টি, প্রবন্ধ ৫টি, কবিতা ২২টি, গবেষণা ২টি, ছড়া ৪টি, জীবনী ৭টি, মুক্তিযুদ্ধ ১টি, ভ্রমণ ১টি, ইতিহাস ১টি, রাজনীতি ১টি, রম্য/ধাঁধা ৬টি, ধর্মীয় ২টি, কম্পিউটার ২টি, অনুবাদ ১টি এবং অন্যান্য ১০টি বই রয়েছে।

মূলমঞ্চের আয়োজন

বিকেলে গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে ভাষা-আন্দোলন এবং আমানুল হকের কীর্তি শীর্ষক আলোচনা হয়।

অধ্যাপক আহসানুল হকের সভাপতিত্বে আলোকচিত্রী নাসির আলী মামুন মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। আলোচনা করেন শহীদুল আলম, ফরিদুর রেজা সাগর ও লুৎফর রহমান রিটন।

 

নাসির আলী মামুন বলেন, “ভাষা-শহীদ রফিকের চূর্ণ-বিচূর্ণ মাথার যে ছবিটি ১৯৫২ সালের একুশে ফেব্রুয়ারি তার সাধারণ সিক্স টোয়েন্টি সাদা-কালো ফিল্মের ক্যামেরায় তিনি ধারণ করেছিলেন তা তৎকালীন পাকিস্তান সরকারের বর্বরোচিত, লোমহর্ষক, বিভৎস অত্যাচারের একমাত্র সচিত্র দলিল বলে সাক্ষ্য দেয় ইতিহাস। ”

তিনি বলেন, সত্যজিৎ রায়ের সংসর্গকে আমানুল হক শুধু ব্যক্তিগত স্মৃতির পর্যায়ে রাখেননি, বরং এ নিয়ে আমাদের উপহার দিয়েছেন। তার আমার দেশ চিত্রমালা-সিরিজ উত্তরপ্রজন্মকে এদেশের নিসর্গকে হৃদয়ঙ্গম করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। ”

সভাপতির বক্তব্যে আহসানুল হক বলেন, “ভাষা-সংগ্রামী আলোকচিত্রশিল্পী আমানুল হক প্রবলভাবে ছিলেন একজন খাঁটি বাঙালি। কিন্তু জাতিগত সংকীর্ণতা তাকে কখনো আচ্ছন্ন করেনি।

মাতৃভাষার জন্য সংগ্রামরত পৃথিবীর সকল জাতিগোষ্ঠীর প্রতি ছিল তার আন্তরিক সমর্থন। অন্তর্গত এই আন্তর্জাতিকতাই আমানুল হককে বিশিষ্টতা দান করেছে। ”

সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বাক শিল্পাঙ্গন ও মুক্তধারা সংস্কৃতি চর্চা কেন্দ্রের শিল্পীরা কবিতা আবৃত্তি করেন।

শুক্রবারের অনুষ্ঠান

অমর একুশে উদযাপন উপলক্ষে শুক্রবার সকাল সাড়ে ৮টায় শিশু-কিশোর চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার আয়োজন করেছে বাংলা একাডেমি। শিল্প-সমালোচক অধ্যাপক নজরুল ইসলাম এর উদ্বোধন করবেন।

বিকেল ৪টায় গ্রন্থমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘গণতন্ত্রের তিন শত্রু: দুর্নীতি, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মীয়/জাতিগত জঙ্গিবাদ’ এবং ‘গণতন্ত্র ও সুশাসনের তিন শত্রু: দুর্নীতি, সাম্প্রদায়িকতা, ধর্মীয়/জাতিগত জঙ্গিবাদ শীর্ষক’ আলোচনা অনুষ্ঠান।

মেজর জেনারেল (অব.) আবদুর রশীদ এবং মাসুদা ভাট্টি অনুষ্ঠানে পৃথক দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন।

আলোচনায় অংশ নেবেন ইমতিয়াজ আহমেদ, মেজর জেনারেল (অব.) মোহাম্মদ আলী শিকদার, মোহাম্মদ এ আরাফাত। সভাপতিত্ব করবেন অধ্যাপক বোরহানউদ্দিন খান জাহাঙ্গীর।  

সন্ধ্যায় পরিবেশিত হবে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।


সোর্স: http://bangla.bdnews24.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.