সম্প্রতি শেয়ারবাজারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ্য করছি। এর পেছনে যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন থাকতে পারে। আমাদের প্রকৃত অর্থনৈতিক চিত্র তো খুব উজ্জ্বল নয়। গত অর্থবছরের চেয়ে এবার জিডিপি প্রবৃদ্ধি তুলনামূলক কম। গত ডিসেম্বরে যেসব প্রতিষ্ঠান আর্থিক প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তার মধ্যে খুব বেশি প্রতিষ্ঠান নেই যারা আগের বছর থেকে খুব বেশি লাভবান হয়।
গত কয়েক মাসে যে সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতি বিদ্যমান ছিল তাতে অনেক প্রতিষ্ঠানই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনে দেখা গেছে, জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর প্রান্তিকে অনেক ব্যাংকেরই মুনাফার হার কমে গেছে। বর্তমানের শান্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতার একটাই ইতিবাচক দিক। এ ছাড়া বাজারটা এখনো অবমূল্যায়িত আছে, তাই বিনিয়োগের সুযোগ আছে। এই দুটি কারণে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা হতে পারে।
তবে এই প্রবণতার মাত্রাটা যেন অতিমাত্রায় না পৌঁছে সেদিকে নজর দেওয়া দরকার। বিনিয়োগকারীদেরও সতর্ক হতে হবে। গত সোমবার আরটিভির 'শেয়ারবাজার ও আপনার জিজ্ঞাসা' শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ও এসইসির সাবেক চেয়ারম্যান মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম এ কথা বলেন। সৈয়দ আশিক রহমানের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য ও ডিএসইর সাবেক প্রেসিডেন্ট কাজী ফিরোজ রশীদ, সিএসইর প্রেসিডেন্ট আল-মারুফ খান, সিপিডির অতিরিক্ত গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, মার্চেন্ট ব্যাংকার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ এ হাফিজ ও ডিএসইর পরিচালক খুজেস্তা নূর-ই নাহরিন।
মির্জ্জা আজিজ বলেন, এখানে ইনসাইডার ট্রেডিং ছাড়াও সিকিউরিটিজ আইনের আরও অনেক রকম ভায়োলেশন হতে পারে।
এ ছাড়া আমেরিকান মার্কেটের মতো হাইলি রেগুলেটেড মার্কেটেও ইনসাইডার ট্রেডিংয়ের কেস খুব বেশি ডিটেকটেড হয় না। আর যদি সেখানে কোনো ইনসাইডার ট্রেডিং ডিটেক্ট হয় তাহলে খুব তাড়াতাড়ি কর্তৃপক্ষ আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়। আমাদের দেশে হয় না। এখানে আইন বাস্তবায়নের দীর্ঘসূত্রিতা আছে। ডিটেকশন ক্যাপাসিটিরও ঘাটতি আছে।
তবে আশার কথা_ শেয়ার সম্পর্কিত বিষয়ে সম্প্রতি একটা এঙ্ক্লুসিভ কোর্ট করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আশা করা যায় নিরাপত্তাবিষয়ক মামলাগুলো এতে দ্রুত নিষ্পত্তি হবে। একইসঙ্গে হাইকোর্টেও একজন বিচারক থাকা দরকার যিনি মূলত সিকিউরিটি বিষয়ক মামলাগুলো দেখবেন, যাতে ওইখানেও বিষয়গুলো দ্রুত বিচার সম্পন্ন হয়। তবে যত যাই হোক, শেষ কথা হচ্ছে বিনিয়োগকারীদের নিজেদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা নিজেদেরই করতে হবে। সতর্কতার সঙ্গে বিনিয়োগ করতে হবে।
শেয়ারবাজারে বিদেশি বিনিয়োগের ওপর নজর রাখার তাগিদ দিয়ে এসইসির সাবেক এ চেয়ারম্যান বলেন, ১৯৯৭-'৯৮ সালে ডলার পতনের আশঙ্কায় পতন প্রবণতা দেখা দিলে অল্প সময়ের ব্যবধানে বিভিন্ন দেশের শেয়ারবাজার থেকে বিনিয়োগ তুলে নেয় বিদেশিরা। এতে এক বছরের মধ্যে চারটা দেশ থেকে ৫৫ বিলিয়ন ডলার বেরিয়ে যায়। যার ফলে একটা বড় রকমের ক্রাইসিস সৃষ্টি হয়। তাই পোর্টফোলিও বিনিয়োগকে স্বাগতম জানালেও সতর্ক থাকতে হবে এটা যেন অতিমাত্রায় না হয়ে যায়।
যদি তেমন কিছু দেখা দেয় তার জন্য নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিতে হবে।
অনেক সময় বেরিয়ে যাওয়ার ওপর ট্যাঙ্ আরোপ করা হয়।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।