আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

একজন ব্যর্থ প্রেমিকের গল্প



মাহি ছেলেটা দীর্ঘক্ষন তানিয়ার বন্ধ সিমে কল দিতেই আছে। যদিও জানে তানিয়া আদৌ জানবে না মাহির কলের ব্যাপারটা। তারপরও মাহী কল দিচ্ছে তো দিচ্ছেই। মাহী তানিয়াকে অনেক অনেক ভালবাসে। তানিয়াকে সে কোনভাবেই তার ভালবাসার কথা বুঝাতে পারে না, কে জানে তানিয়াও হয়ত ইচ্ছে করেই না বুঝার ভান ধরে রয়েছে।

মেয়েটিকে মাহী ছোটকাল থেকেই চেনে, তার উঠাবসা, চলাফেরা, সবকিছুই মাহী জানে। আর জানবেই না কেন? মেয়েটি যে মাহীর মামাতো বোন। তাদের পারিবারিক যে কোন অনুষ্ঠানে এক সাথে দেখা হয়, কথা হয়। কিন্তু মাহী মুখ ফুটে বলতে পারে না তার ভালবাসার কথা। পাছে কিভাবে নেয় ব্যাপারটা।

সে অপেক্ষায় থাকে তানিয়া কবে বড় হবে, কবে নিজের ভালবাসার মানুষটিকে খুজে নেওয়ার সময় আসবে। একটা সময় সে সময়টি আসে, তারপরও বলতে পারে না। তারপর মাহী তার ঘনিষ্ঠ হতে চেষ্টা করে, তার সাথে ফোনে কথা বলে, ফেবুতে নিয়মিত চ্যাটও হয়। এবার মাহী তার মনের কথাটি বলার সাহস পায়। মেয়েটি এটা শুনে হাসে আর বলে এটা কি সম্ভব ভাইয়া? আচ্ছা এটা অসম্ভবই বা কেন? মেয়েটি মাহীর মাত্র তিন বৎসরের ছোট্র, মাহীর পারিবারিক অবস্থা কোন ভাবেই মেয়েটির চেয়ে কোন অংশেই কম নয়।

পরিবারও যে মানবে না তা নয়। তারপরও মাহী চেয়েছিল ভালবাসার মানুষটিকে ভালবেসেই বিয়ে করতে। ভালবাসার মানুষটি সম্পর্কে সে যে সবই জানে। তার মানসিকতা, তার চাওয়া পাওয়া সব কিছুই যে মাহীর চাওয়া-পাওয়ার সাথে মিলে যায়। ধনাঢ্য বাবার সন্তান মাহীর খুবই ইচ্ছে জীবনে প্রতিষ্ঠিত হলে ধর্মীয় আর সামাজিক উন্নয়নে নিজের অর্থ ব্যয় করা।

একই উৎসাহ পায় ডাক্তারী পড়ুয়া তানিয়া থেকেও। তারও ইচ্ছা ডাক্তারী পড়া শেষ হলে সেও আর্তমানবতার সেবায় কাজ করবে। ঘরের বউ না চাইলে অনেক কাজই করতে পারে না স্বামীরা। বউয়ের মনপূত না হলে স্বামীরা কাওকে কোন কিছু দিয়েও শান্তি পায় না, স্ত্রী নানান অজুহাত দেখায়। বিয়ের পর স্ত্রীরা শশুড়-শাশুড়ীদেরই সেবা করতে পারে না, আবার মানুষের সেবা করবে কিভাবে।

এজন্য মাহী চায় তার মত যে চিন্তা করবে তাকেই তার জীবন সঙ্গী বানাবে। এমন অনেক স্বপ্ন দেখে মাহী। মাহীর কোন পিছু টান নেই, পিছু টান নেই তানিয়ারও। তাই সে মেয়েটিকে নিয়ে স্বপ্ন দেখে। কিন্তু সব স্বপ্ন এক মহূর্তে ভেস্তে যায় যখন মেয়েটি ছেলেটিকে বলে "পুরানো আত্বীয়তার মধ্যে নতুন করে রিলেশন হউক এটা সে চায় না"।

তারপরও হাল ছাড়ে না ছেলেটি। মেয়েটিকে অন্ধের মত ভালবেসে যায় ছেলেটি। মেয়েটি বারবার তাকে বুঝানোর চেষ্টা করে। শেষে কোন কথায় কাজে না এসে মেয়েটি ছেলেকে ধমক দেয়, কটু কথা বলে, রাগ দেখায়। তারপরও ছেলেটি ফিরে না, আদৌ ফিরতে পারবে কিনা তাও জানে না।

ছেলেটি মেয়েকে অনেক বেশি ভালবেসে ফেলেছে। অবুঝের মত ভালবেসে ফেলেছে। তানিয়া মাহীকে বিভিন্ন ভাবে ভয়-ভীতি দেখানোরও চেষ্টা করে। ছেলেটাকে কষ্ট দিতে ভালবাসে তানিয়া। আর কষ্ট পেতে ভালবাসে মাহী।

এই কষ্টের মধ্যেও তার ভালবাসার মানুষটিকে খুজে পায়। ছেলেটিকে যদি মেয়েটি একটি কড়া কথা বলে তাও ভাল লাগে তার কাছে, কারন কথাটি যে তারই ভালবাসার মানুষটি বলেছে। তানিয়ার সাথে একদিন কথা না বললে মাহীর খুব খারাপ লাগে, মনে হয় তার প্রিয় কিছু হারিয়ে গেছে। যদিও অধিকাংশ সময়ে সেই কথা গুলো হয় খুবই তিক্ত। ধীরে ধীরে মাহী শারীরিক ও মানসিক ভাবেও ভেঙ্গে পড়ে।

চোখ এড়ায় না পিতা-মাতার। ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরামর্শ দেয় মাহীর মা-বাবা। কিন্তু সে জানে তার অসুখটা কোথায়। তাই সে এড়িয়ে যায় সবকিছুই। বন্ধুরা ব্যাপারটা ঠিকই ধরতে পারে।

তারা পরামর্শ দেয় মেয়েটিকে ভুলে যাবার জন্য। তারা কিছু করতেও পারে না মেয়েটি মাহীর আত্মীয় বলে। তারা অন্য মেয়েকে ভালবাসতে বলে। কিন্তু মাহীর পক্ষে এটা সম্ভব না। জীবনে একটা মেয়েকেই ভালবেসেছিল, এবং তাকে নিয়েই ঘর বাধার স্বপ্ন দেখেছিল।

সে তার স্থানে অন্য কাউকে স্থান দিতে পারে না। ধনাঢ্য বাবার সন্তান মাহীকে অনেক মেয়ে প্রপোজও করেছিল, কিন্ত মাহী অনেক আগে থেকেই তানিয়াকে ভালবেসে ফেলে, সে আর কারও দিকে তাকাতে পারে না। কিন্তু মাহী এই যন্ত্রনা থেকে বাচতে চায়! আদৌ কি সে পারবে? আমার ব্লগ সাইটটিতে প্রকাশিত....একজন ব্যর্থ প্রেমিকের গল্প

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     বুকমার্ক হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.