‘পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কিরে হায়/ ও সেই চোখের দেখা/ প্রাণের কথা সেকি ভুলা যায়/ আয় আরেকটি বার/ আয়রে সখা প্রাণের মাঝে আয়...'
এই বিখ্যাত গানের কলির মত বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ দিনে জড়ো হয়ে নানা স্মৃতিকাতর মুহূর্তের স্মৃতিচারণে মেতেছিলো সিলেটের মদন মোহন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের হিসাব বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। নয়নাভিরাম প্রাকৃতিক পরিবেশে মনোমুগ্ধকর আয়োজনে হিসাব বিজ্ঞান ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০০৭-০৮ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের আবেগঘন স্মৃতিচারণ আর শিক্ষকদের বক্তব্যে অনেকেই আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। শীতের কুয়াশা উপেক্ষা করে সকাল থেকেই দু’টি পাতা একটি কুঁড়ির ছায়াঘেরা নগরীর চা বাগানের বাংলোয় আসতে শুরু করে সহপাটি বন্ধুরা। সকাল এগারোটায় আলী বাহার চা বাগানের পুরো বাংলো এলাকা মুখরিত হয়ে উঠে প্রায় ২শ বিদায়ী শিক্ষার্থীর পদচারনায়।
বিদায়ী অনুষ্ঠানের টি-শার্ট পরে অনুষ্ঠান স্থলে একে একে সকলেই জড়ো হলে অন্যরকম এক পরিবেশের সৃষ্টি হয়।
প্রায় সকলের চোখে মুখে স্পষ্ট হয়ে উঠে বিদায়ের বেদনা। হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র কামরুল ইসলাম, ব্যবস্থাপনা বিভাগের সুমাইয়া আক্তার যুথি আর জামিল বিন মিজান চৌধুরীর সাবলিল উপস্থাপনায় অনুষ্ঠান শুরু হয়। শুরুতেই ধন্যবাদসহ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র ও অনুষ্ঠানের কো-অর্ডিনেটর শংকু দাস। সোনালী দিনগুলোর স্মৃতিচারণ করে কামরুল হাসান তারেক বলেন, দেখতে দেখতে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনের শেষ দিনে আমরা আবারো জড়ো হলাম। কত কথা, কত স্মৃতির ধুলো জমেছে স্মৃতির আঙ্গিনায়।
সেই সব দিনগুলো কি আর ভুলা যায়? সাইফুর রহমান রাজন বলেন, শিকদের আন্তরিকতা আর সহপাঠি বন্ধুদের সহযোগিতা এক জনমেও ভুলার নয়। এই অনুষ্ঠানের মূল পরিকল্পনাকারী ব্যবস্থাপনার ছাত্র মনজুর আহমেদ তুলে ধরেন কেন এই আয়োজন, কিভাবে সফল করা হলো এই অনুষ্ঠান। ব্যবস্থাপনার ছাত্র মিসবাহ উদ্দিন শিমুল যখন স্মৃতিচারণ করেন। তখন তার দু’চোখের কোণায় অশ্র“ ফোটা রোদের আলোয় চিকচিক করে পুরো অনুষ্ঠানেই ছড়িয়ে পড়ে। এই অনুষ্ঠানের আয়োজনের অন্যতম উদ্যোক্তা পার্থ দাশের বক্তব্য আবেগের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়।
বিশেষ করে তারাপুর ক্যাম্পাস ইনচার্জ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক জয়ন্ত দাশ যখন বক্তব্য রাখেন, তখন পুরো অনুষ্ঠানস্থলে উপস্থিত শিক্ষার্থী ও অতিথিরা আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। নেমে আসে পিনপতন নিরবতা। অনুষ্ঠানে প্রবাসী শিার্থীদের অংশ গ্রহন ছিলো উল্লেখ করার মত। ওয়াহিদুজ্জামান দিপু, সিদ্দিকুর রহমান, আমানত চৌধুরী, কাওসার চৌধুরী, আকতার হোসেন, মাহফুজ জামান, শামীম আহমেদ, জাহেদুল ইসলাম, সালাউদ্দিন, মো. বাবুল, হুমায়ুন রশিদ অপু, শেখ সুমন মোকাদ্দেস, সোহেল আহমেদ, মাসুম আহমেদ, ইমরানুল হক ও সাকের হোসেন সকলেই প্রবাসী। তব এ অনুষ্ঠানে তারা অংশ নেয়।
অনুষ্ঠানে স্মৃতিচারণমূলক বক্তব্য রাখেন, ব্যবস্থাপনা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক জয়ন্ত দাশ, হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক প্রদীপ কুমার দে, আলী বাহার টি এস্টেটের সত্বাধিকারী আবু বক্কর রাজন, অধ্যাপক অসিত রঞ্জন দাশ। হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র সাংবাদিক কামরুল ইসলাম, সুমাইয়া আক্তার যুথি এবং ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র জামিল বিন মিজান চৌধুরী এর যৌথ উপস্থাপনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন ব্যবস্থাপনা বিভাগের ছাত্র ও অনুষ্ঠানের উদ্যোক্তা শংকু দাশ, অনুষ্ঠানের অন্যতম আয়োজক ও উদ্যোক্তা হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের কামরুল হাসান তারেক, অন্যতম উদ্যোক্তা ব্যবস্থাপনার ছাত্র বিপ্লব মজুমদার, অন্যতম উদ্যোক্তা ব্যবস্থাপনার ছাত্র মিসবাহ উদ্দিন শিমুল, অন্যতম উদ্যোক্তা ব্যবস্থাপনার ছাত্র সাইফুর রহমান রাজন, অন্যতম উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপনার ছাত্র মনজুর আহমেদ, অন্যতম উদ্যোক্তা ও ব্যবস্থাপনার ছাত্র আবির ইকবাল তারেক, মিনহাজুর রব, ব্যবস্থাপনার ছাত্র তানভির ফেরদৌস নাবীন, এজাজ আহমেদ, পার্থ দাশ, নির্মল দাশ, সালাউদ্দিন, রাহী, জুবায়ের আহমেদ, হিসাব বিজ্ঞানের আবদুল লতিফ, হিসাব বিজ্ঞানের কবির আহমেদ, নিজাম, পোলক, লুৎফুর রহমান খান, গোপন, হিসাব বিজ্ঞানের উমেদ, জাকারিয়া, মাসুক আহমদ, লিটন, তামিম, সোহেল ফয়ছল, নিলুফা, তানজিনা, রেজিয়া আকতার পপি, ফাহমিদা মেহজাবীন, জেনি খানম প্রমুখ। অনুষ্ঠানে গান পরিবেশন করে ব্যবস্থাপনার কৃষনা পাল, কামরুল হাসান তারেক, এনামুল হক, সৈকত প্রমুখ।
উপস্থাপক সুমাইয়া যুথি আর জামিল চৌধুরী গোধুলী লগ্নে যখন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতার শেষ তিন লাইন- ‘তোমারে যা দিয়েছিনু সে তোমারি দান/ গ্রহণ করেছ যত ঋণী তত করেছ আমায়/ হে বন্ধু, বিদায়ৃ.। ’ বলে উঠলেন ঠিক তখন বেদনার করুণ সুর বেজে উঠে চারিদিকেৃ.. একে একে বিদায় নিতে শুরু করলেন সবাই।
তখন সূর্য পশ্চিম আকাশে ডুবে গিয়ে রাতের শুকতারা নেমে এসেছে। ।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।