সত্য তখনই দাম পায়, যখন তার পাশে মিথ্যা নামক অদৃশ্য বস্তুটি স্থান পায়......
ইতিহাসের পাতা ঘাটলে দেখা যায় মানুষ সেই অতীত থেকেই নিজেদের মধ্যে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কারনে যুদ্ধ করে আসছে। বর্তমান সময়ে আমরা বিভিন্ন আধুনিক অস্ত্র বিষেশ করে বিভিন্ন বন্দুকের নাম শুনলেও সুদূর অতীতে যখন এই বন্ধুক আবিস্কার হয়নি তখনও কিন্তু যুদ্ধ হত। আর তৎকালীন সময়ে যুদ্ধে ব্যাবহৃত হত নানা রকমের মারন অস্ত্র। আজ আপনাদের পরিচয় করিয়ে দেব এরকম কিছু বিখ্যাত মারন অস্ত্রের সাথে যেগুলি বিভিন্ন সময়ে মানুষ ব্যাবহার করেছে।
০৫) Chu Ko Nu:
Chu Ko Nu হচ্ছে বর্তমান অটোমেটিক রাইফেলের আদি পিতা।
এটি খুব কার্যকর এবং শত্রু পক্ষের জন্য বেশ ভয়ংকর এক অস্ত্র। এটির আবিস্কার হয়েছিল চায়নাতে এবং এর সর্বাধিক ব্যাবহার হয়েছে চায়না সহ ইউরোপের অনেক দেশ গুলিতে। এই আড় ধনুকের (Crossbow) বৈশিষ্ট হল এতে এক সাথে অনেক গুলি তীর লাগানো যেত আর তা অতি দ্রুত ছোড়া সম্ভব। আসলে তীর না বলে বলা যেতে পারে তীরের ছোট ভাই। কেননা এই Chu Ko Nu ব্যাবহৃত তীর গুলি অনেক ছোট ছিল অনেকটা স্নাইপারের গুলির সমান।
এই Chu Ko Nu ১৫ সেকেন্ডে ১০টি তীর সক্ষম ছিল। ১৮৯৪ থেকে ১৯৮৫ সালের দিকে চায়না এবং জাপানের মধ্যকার যুদ্ধের সময়েও এই Chu Ko Nu ব্যাবহার করা হয়েছিল।
০৪) Trebuchet:
Trebuchet কে বলা যেতে পারে আদি যুগের কামান। এই Trebuchet এর আবিস্কার হয় চায়নাতে। অবশ্য পরবর্তিতে এর নকশায় আমুল পরিবর্তন এসেছে কিন্তু মূল কার্যপ্রনালী প্রতিটির ক্ষেত্রেই একই ছিল।
এটি সব থেকে বেশি জনপ্রিয়তা পায় ইউরোপিয়ানদের মাঝে। ৬ শতকের দিকে এই Trebuchet ইউরোপে প্রথম আসে। তখন থেকেই বড় বড় কেল্লার দেয়াল গুড়িয়ে দিতে, এছাড়া দেওয়াল টপকে ভিতরে হামলা চালাতে ব্যাবহৃত হত এই Trebuchet। উপরে যে Trebuchet এর ছবিটি দেখছেন এটি ৩০০ পাউন্ড ওজনের পাথর ছুড়ে মারতে সক্ষম ছিল আর এটি চাইনিজদের বানানো প্রথম Trebuchet এর মত করেই বানানো। যদিও ইউরোপিয়ানরা এর নকশায় অনেক পরিবর্তন এনেছিল কিন্তু চাইনিজদের মত এত বেশি কার্যকর নকশা আর কেউ বানাতে সক্ষম হয়নি।
০৩) মৌমাছির চাকঃ
মৌমাছির চাক (Nest of Bees) নাম শুনেই নিশ্চই অবাক হয়ে যাচ্ছেন? এই নামের কিন্তু যতার্থতা রয়েছে। এই অস্ত্রটি খুবই সহজে বহন করা যায় আর খুবই কার্যকর। এর উপরে যে ছোট বক্সের মত দেখছেন এটার ভিতরটা দেখতে অনেকটাই মৌমাছির চাকের মত। আর এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৩২ টা তীর এক সাথে রাখা সম্ভব। আর পিছের হাতল ধরে টান দিলেই হলো তীর গুলি অটোমেটিক রাইফেলের গুলির মত ছুটে বের হতে থাকবে।
০২) Scythed Chariot:
Scythed Chariot এর বাংলা করলে এর নামকরন হত "কাস্তে রথ"। রথ কি তা তো বুঝে গেছেন কিন্তু এই কাস্তে কেন? আসলে রথের চাকার মাঝ বরাবর লাগিয়ে দেওয়া হত ধারালো বাঁকানো কাস্তে। আর এই Scythed Chariot এর ব্যাবহৃত হত মূলত অতীর গ্রীসে। এ সময় যুদ্ধ ক্ষেত্রে এই Scythed Chariot এর বহুল ব্যাবহার ছিল। Scythed Chariot চালানোর জন্য ব্যাবহৃত হত মোট চারটি ঘোড়া আর এই রথে যাত্রী হিসেবে থাকত চালক সহ দু'জন যোদ্ধা।
এই Scythed Chariot এর মূল ব্যাবহার ছিল যুদ্ধে সম্মুখ ভাগের শত্রু বাহিনীর সৈনিকদের নিহত করে পিছনের পদাতিক বাহিনীর জন্য পথ তৈরি করে দেওয়া। এই Scythed Chariot কিন্তু তার কাজ বেশ ভাল মতই করত। Scythed Chariot এর সামনে যারা আসত তারা ঘোড়ার ধাক্কায়, পাশে গেলে কাস্তের আঘাতে আবার বেঁচে গেলে রথে থাকা সৈনিকদের অস্ত্রের আঘাতে মৃত্যুবরন করত। শত্রু পক্ষের পদাতিক বাহিনীর জন্য এ ছিল এক আতংকের নাম।
০১) কাতারঃ
কাতার (Katar) এর উতপত্তি ভারতে।
দেখতে অনেকটা সাধারন তরোয়ালের মত কিন্তু একটু উদ্ভট আকৃতির হাতল। দেখতে যেমনই হোক না কেন এই কাতার কিন্তু বেশ ভয়ংকর অস্ত্র। এর হাতলের মধ্যে একটা ট্রিগার আছে যেটাতে চাপ দেবার সাথে সাথে এই কাতার নামক তলোয়ারের মধ্য থেকে আরো দুটি তলোয়ার বেড়িয়ে আসে। যা কাছে থাকা শত্রুকে চমকিত করে দেয় আর ব্যাবহার কারিকে আঘার হানার সুবিধা দেয়। এছাড়াও এই কাতার অনেক ধারালো অস্ত্র।
এটি এতটাই ধারালো যে লৌহ বর্ম ভেদ করে শত্রুকে মোক্ষম আঘাত হানতে সক্ষম।
পূর্বের পর্বঃ অতীতের ব্যাবহৃত ১৫টি ভয়ংকর অস্ত্র (২য় পর্ব)
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।