অবশ্য একের পর এক হরতালের পরও চলতি ২০১২-১৩ অর্থবছরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে প্রত্যাশা করছে রাজস্ব বোর্ড।
বুধবার বিকেলে ইকনোমিক রিপোর্টার্স ফোরামের (ইআরএফ) সদস্যদের সঙ্গে এক প্রাক-বাজেট আলোচনায় এনবিআর চেয়ারম্যান গোলাম হোসেন এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, “একর পর এক হরতালের মধ্যেও চলতি অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের টার্গেট অর্জিত হবে বলে আমরা আশা করছি। তবে দেশে যে অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি দেখা দিয়েছে তাতে আগামী ডিসেম্বর পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে মনে হচ্ছে। ”
“সে পরিস্থিতিতে আগামী অর্থবছরে রাজস্ব আদায়ের লক্ষ্যমাত্রা বেশি ধরা মোটেও ঠিক হবে না।
অর্থমন্ত্রণালয় আমাদের এক লাখ ৩৬ হাজার কোটি টাকা লক্ষ্যমাত্রা ধরতে বলেছিল। কিন্তু আমরা সেটা কমিয়ে এক লাখ ২৫ হাজার কোটি টাকা করতে অনুরোধ করেছি। ”
বিএনপির নের্তৃত্বাধীন জোট গত মার্চে নয় দিন হরতাল দিয়েছে। আর এপ্রিলে এখন পর্যন্ত হরতাল দিয়েছে পাঁচ দিন।
গোলাম হোসেন প্রশ্ন রাখেন, “ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধ থাকলে, ব্যবসায়ীরা ব্যবসা না করলে ট্যাক্স দেবে কোথা থেকে।
”
চলতি বাজেটে রাজস্ব বোর্ড নিয়ন্ত্রিত করের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক লাখ ১২ হাজার ২৫৯ কোটি টাকা। এরমধ্যে আট মাসের (জুলাই-ফেব্রুয়ারি) রাজস্ব আদায়ের তথ্য পাওয়া গেছে। এ সময়ে যে লক্ষ্যমাত্রা ছিল তার থেকে চার হাজার কোটি টাকা আদায় কম হয়েছে।
রাজধানীর সেগুনবাগিচায় এনবিআর সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত আলোচনায় ইআরএফ সভাপতি খাজা মাইনউদ্দিন সামর্থবানদের কাছ থেকে কর আদায়ে এনবিআরকে কঠোর হওয়ায়ার পরামর্শ দেন।
সাধারণ সম্পাদক আবদুর রহিম হারমাছি সঞ্চয়পত্রের সুদের হারের উপর ৫ শতাংশ উৎসে কর প্রত্যাহার,পুঁজিবাবাজারে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়ে আনতে বিভিন্ন প্রণোদনা এবং দেশীয় শিল্পের স্বার্থ সংরক্ষণে কর আরোপের সুপারিশ করেন।
‘৬০ লাখ লোকের সামর্থ আছে’
গোলাম হোসেন বলেন, দেশে ৬০ লাখ লোকের আয়কর দেওয়ার সামর্থ রয়েছে। এরমধ্যে মাত্র ১৩ লাখ লোক কর দেন। আর
৫ লাখ ছোট ব্যবসায়ীর মূল্য সংযোজন কর (ভ্যাট) দেয়ার সক্ষমতা থাকলেও মাত্র ৬০ হাজার ছোট ব্যবসায়ী ভ্যাট দেন।
বাজেটে পুঁজিবাজারকে সহায়তা দেয়ার জন্য নানা উদ্যোগ রাখা হবে বলে জানান তিনি।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “এবছর পুঁজিবাজার থেকে কাঙ্খিত রাজস্ব পাওয়া যায়নি।
এ খাত থেকে ৮০০ কোটি টাকা আসবে বলে লক্ষ্যমাত্রা ধরা আছে। মার্চ পর্যন্ত এসেছে ৩০০ কোটি টাকা। ”
এছাড়া সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ বাড়াতে নতুন বাজেটে কি উদ্যোগ নেয়া যায় সে বিষয়ে এনবিআর কাজ করছে।
‘২৭ হাজার বাড়ি মালিকের টিআইএন নেই’
বাংলাদেশের মানুষের কর ফাঁকি দেয়ার প্রবণতা বেশি- এ মন্তব্য করে গোলাম হোসেন বলেন, “এনবিআরের উদ্যোগে আমরা রাজধানী ঢাকায় জরিপ চালিয়ে দেখেছি, ৫০ হাজার মালিক মালিকের মধ্যে ২৭ হাজার মালিকেরই টিআইএন নেই। ”
ইআরএফের সাবেক সভাপতি মনোয়ার আহমেদ বলেন, সাধারণ মানুষকে জীবনযাত্রায় একটু স্বস্তি দেয়ার জন্য ব্যক্তিশ্রেণির করদাতাদের করমুক্তসীমা বাড়ানোর উচিত।
পাশাপাশি একটি পরিবার একাধিক গাড়ি ব্যবহার করলে অতিরিক্ত শুল্ক আরোপেরও পরামর্শ দেন তিনি।
রাজস্ব আদায়ে নীতির চেয়ে প্রশাসনিক সংষ্কারের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেন ইআরএফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু কাওসার।
এনবিআরের সদস্য ফরিদউদ্দিন, সৈয়দ আমিনুল করিম, জাহাঙ্গীর হোসেনসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।