একাত্তর টিভি'র খেলাযোগ দেখছিলাম। এই প্রোগ্রামটা আমি প্রায়ই দেখি।
পরপর তিনটা খবরের তিনটা কথা আমার ভাল্লাগে নাই।
১।
রিপোর্টার দেব চৌধুরী মমিনুল হককে ওনার ম্যাচ রিপোর্টে "পুঁচকে" বলে সম্মোধন করেছেন।
জাতীয় দলের একজন উদীয়মান ব্যাটসম্যানকে তার উচ্চতার জন্যে "পুঁচকে" বলার অধিকার দেব চৌধুরীকে কে দিয়েছে??? যদি সাংবাদিকটা পেশাকে ভালবাসেন আমি আশা করব দেব চৌধুরী উনার এই কথার জন্যে অনুতপ্ত হবেন এবং ক্ষমা চাইবেন।
২।
আজ সিঙ্গাপুরের সভায় আইসিসিকে দেওয়া তিন মোড়লের প্রস্তাবনা পাশ হওয়া নিয়ে আন্তাকি রাইসা তার রিপোর্টে বলেছেন - বাংলাদেশের লাভ হয়েছে। এখন থেকে বাংলাদেশ বেশী করে ম্যাচ খেলতে পারবে। মোট কথা বিসিবি ও পাপন সাহেবের পক্ষে সাফাই গেয়েছেন।
আচ্ছা, বাংলাদেশ আগে যা ছিল, এই প্রস্তাবনা পাশ হওয়ার পরও তাই থাকবে, মানে বাংলাদেশের টেস্ট শংকা নেই। এইখানে বাংলাদেশের লাভ হল কিভাবে? আর বেশী ম্যাচ খেলতে পারবে এই কথা রিপোর্টার আন্তাকি রাইসাকে কে বলেছে???
এই প্রস্তাবনা পাশ হওয়ার পর মুলত বাংলাদেশের আরো লস হয়েছে। আগে আইসিসির আয়ের শতকরা ৭৫% পূর্ন সদদ্য দেশগুলাকে দেওয়া হত। এখন যার যত বেশী আইসিসির আয়ে কন্ট্রিবিউশন থাকবে সে সেই হারে আইসিসি থেকে লভ্যাংশ পাবে। আল্টিমেটলি আইসিসি থেকে বাংলাদেশের প্রাপ্য লভ্যাংশ কমে যাবে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে তিন মোড়ল বাদে বাকী ৭ সদস্যের জন্যে তহবিল করা হবে। মানে এই ৭ দেশ মনে হয় তৃতীয় বিশ্বের দেশ গুলার মত যে, তাদের জন্যে উচ্ছিষ্ট অংশ দিয়ে সাহায্যের ব্যাবস্থা রেখে তহবিল করা হবে। তার মানে এইখানে সুস্পষ্ট বিভাজন তৈরী হয়ে গেল।
এইসব প্রস্তাবনা পাশে যেই নাজমুল হাসান পাপন সমর্থন দিয়ে আসলেন সেই পাপন সাহেবকে রিপোর্টার নায়কের ভূমিকায় হাইলাইট করলেন!!!
৩।
খেলাযোগের উপস্থাপক ফাহিম রহমান আমার পছন্দের লোক।
এইবারের আইপিএলের কিছু ম্যাচ নাকি বাংলাদেশে হওয়ার সম্ভাবনা। এই খবরের শুরুটা ফাহিম রহমান করেছেন এইভাবে - আইপিএলের কিছু ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ পেতে পারে বাংলাদেশ!
সুযোগ! কিসের সুযোগ??? আইপিএল এর ম্যাচ আয়োজনের জন্যে বাংলাদেশ মুখিয়ে আছে নাকি??? খবর বলার ধরন দেখে মনে হল আইপিএল এর কিছু ম্যাচ আয়োজন করতে পারলে ধন্য হবে বাংলাদেশ!!!?
যখন আইপিএলের ফিক্সিং কেলেংকারী নিয়ে শোরগোল বেধে গেল, ঠিক তখনই আইপিএলের ফিক্সিং নিয়ে খবরের সাথে বাংলাদেশের বিপিএল ফিক্সিং নিয়ে পুরো পাতা জুড়ে খবর বের হতে লাগল ওই দেশের মিডিয়াতে। এর পর এইটা বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক ম্যাচের উপরও গড়াল এই দেশের কিছু মিডিয়ার বদৌলতে। এর পরই ধামাচাপা পড়ে গেল আইপিএলের ফিক্সিং কেলেংকারী। মিডিয়াতে আর ওই খবর নাই।
কেবল ক্রিকেটের অন্ধকার জগতে বাংলাদেশের কে কে আছে তার গোড়া খোজা শুরু হল। অবশ্যই এর তদন্ত হবে। বিচার হবে। এবং বিচার হচ্ছেও। ট্রাইব্যুনাল গঠিত হয়েছে।
কিন্তু আইপিএল এ ফিক্সিং এর কি হল? আইপিএল কেলেংকারীর কয়জন ইন্ডিয়ার জাতীয় দলের সাথে সংযুক্ত আছে? আমরা সঠিকভাবে এখনও জানি না। ।
এইসব কাহীনীর চাপে পড়ে আড়ালে চলে গেল বিপিএলের আগামী আসর। আগামী বিপিএল হবে কিনা এইটা নিয়ে অনিশ্চয়তা। কিন্তু এই দেশের মিডিয়া এখন বলে বেড়াচ্ছে আইপিএলের ম্যাচ আয়োজনের সুযোগ পেতে পারে বাংলাদেশ!!!
একদলা থু মারলাম আইপিএল নামক জুয়ার আসরের মুখে।
যার প্রচার প্রসার ক্রিকেট ধ্বংসের জন্যে দায়ী। যার জন্যে টাকার লোভে বিসিসিআই এখন ইসিবি ও সিএ'কে সাথে নিয়ে আইসিসি লুট করার ব্যাবস্থা করেছে। অনিশ্চিত আগামীর হাতে চলে গেছে ক্রিকেট। শেয়ালের কাছে মুরগি বর্গা দেওয়া হয়ে গেছে। ।
আর একটা কথা...
মিডিয়া যদি মনে করে আমজনতা কিছু বুঝে না তাহলে তারা বোকা। অর্থ হালাল করতে টুইস্ট নিউজ প্রচার করার চেষ্টা করলেই ওই বিশেষ কাজের জন্যে পাওয়া ঐ বিশেষ অর্থ হালাল হয়ে যাবে না। । মাইন্ড ইট। ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।