বর্ণময় ক্রিকেটের বর্ণাঢ্য ড্র। চট্টগ্রাম দেখল এমনই এক টেস্ট। যেখানে ছিল রেকর্ডের ছড়াছড়ি। ছিল সামর্থ্যের সর্বোচ্চ ব্যবহার। রেকর্ড গড়েছেন কুমার সাঙ্গাকারা।
লিখেছেন ইতিহাস। সামর্থ্যের সর্বোচ্চ প্রয়োগ করেছেন তরুণ মুমিনুল হক সৌরভ। ব্যাট হাতে ফুলের সৌরভ ছড়িয়ে আনন্দে ভাসিয়েছেন দেশের লক্ষ-কোটি ক্রিকেটপ্রেমীকে। তরুণ এই ক্রিকেটারের চওড়া ব্যাটেই চট্টগ্রামে পরাক্রমশালী শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ড্র করেছে বাংলাদেশ। দলকে ড্র উপহার দিতে মুমিনুল খেলেছেন কাটায় কাটায় ১০০ রানের অপরাজিত ইনিংস।
ক্যারিয়ারে এটা তৃতীয় সেঞ্চুরি। নামের পাশে রয়েছে এরচেয়েও বড় বড় ইনিংস। কিন্তু সবগুলোকে পিছনে ফেলে এগিয়ে রেখেছেন এটাকেই। কারণ একটাই, প্রতিকূল সে াতে ব্যাট করতে হয়েছে বলে।
উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা হয়েই ঢুকেছিলেন জাতীয় দলে।
গত বছর গলে অভিষেক ইনিংসে খেলেছিলেন ৫৫ রানের উজ্জ্বল ইনিংস। কিন্তু সেটা ছায়া হয়েছিল মুশফিকের ডাবল সেঞ্চুরি, মোহাম্মদ আশরাফুলের ১৯০ ও নাসির হোসেনের সেঞ্চুরিতে। তারপরও আলাদাভাবে চিনিয়েছিলেন নিজের জাত। পরের টেস্ট কলম্বোতে আবারও খেলেন ৬৪ রানের ইনিংস। এরপরই তিনি হয়ে উঠেন দলের অন্যতম ব্যাটিং স্তম্ভ।
হারারেতে অবশ্য বড় কোনো ইনিংস ছিল না। কিন্তু গত অক্টোবরে এই জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামকে করে রাখেন স্মরণীয়। ১৮১ রানের জ্বলজ্বলে ইনিংস খেলে নিজেকে ঠাঁই দেন অন্য এক উচ্চতায়। ওই সেঞ্চুরিতেই টাইগাররা ড্র করেছিল ব্ল্যাক ক্যাপসদের বিপক্ষে। পরের টেস্টে আবারও জ্বলে উঠেন মুমিনুল।
কিউই বোলারদের নিয়ে ছোটখাটো মুমিনুল মেতে উঠেন স্ট্রোকের ফুলঝুরিতে। ১২৬ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে স্বাদ নেন ড্রয়ের। কাল আবারও খেলেন তিন অংকের ম্যাজিক্যাল ইনিংস। এবারও একই ফল, ড্র।
৪৬৬ রানের পর্বতসমান স্কোরের বিপক্ষে খেলতে নেমে ৮১ রানে দুই ওপেনার তামিম ইকবাল ও শামসুর রহমানকে হারিয়ে দল যখন ধুঁকছিল, তখনই ত্রাণকর্তা হয়ে মাঠে নামেন ৫ ফুট ২ ইঞ্চি উচ্চতার মুমিনুল।
তৃতীয় উইকেট জুটিতে ইমরুল কায়েশের সঙ্গে ৭০ এবং চতুর্থ উইকেট জুটিতে সাকিব আল হাসানের সঙ্গে ১২০ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি গড়ে সতীর্থদের বাঁচান মিরপুরের লজ্জা থেকে। লজ্জা বাঁচাতে ১০০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলেন ১৬৭ বলে ১১ বাউন্ডারিতে। পঞ্চম দিনের এবড়ো-থেবড়ো উইকেটে প্রতিপক্ষের স্পিনারদের সামাল দিতে অপরাপর ব্যাটসম্যানরা যেখানে ছিলেন নাভিশ্বাস, সেখানে তিনি ছিলেন সাবলীল। তবে ইনিংসটি খেলতে পড়তে পড়তে লড়াই করতে হয়েছে তাকে। উইকেটের আন-ইভেন বাউন্সের জন্য খেলেছেন বেশকিছু আলতো শটস।
তারপরও সেঞ্চুরিটিকে এগিয়ে রেখেছেন আগের দুটি থেকে, 'আমি অন্য দুই সেঞ্চুরি থেকে এগিয়ে রাখব আজকেরটিকে (কাল)। কারণ ব্যাটিং করতে খুব কষ্ট হয়েছিল। ওরা খুব ভালো জায়গায় বোলিং করছিল। এছাড়া আমরা অনেক চাপে ছিলাম। ' ম্যাচ বাঁচাতে পঞ্চম দিনের পুরোটা সময়ের পাশাপাশি খেলতে হবে ৯০ ওভার।
এমন সমীকরণে খেলতে নামা যে কোনো দলের জন্যই কঠিন। কিন্তু সেই কঠিন পরিস্থিতিটাকে ঠাণ্ডা মাথায় সামাল দেন তরুণ মুমিনুলসহ টাইগার ক্রিকেটাররা। সেজন্যই দিনশেষে পরিসংখ্যানে যোগ হয়েছে ৮৪ টেস্টের ১২ নম্বর ড্র হিসেবে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।