এদিকে সরকারদলীয় সংসদ সদস্যের নগদ অর্থ চাওয়ার ওই ঘটনাটিকে গণতন্ত্রের জন্য ‘অশনি সঙ্কেত’ অভিহিত করে এই বিষয়ে স্পিকার ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ প্রত্যাশা করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল (টিআইবি)।
নিজের নির্বাচনী এলাকা পটুয়াখালীর বাউফলে গত শুক্রবার এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ফিরোজ বলেন, তিনি ক্রেস্ট চান না, ক্যাশ চান।
নতুন সরকারের পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলমসহ কয়েকজন বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সোনার নৌকা উপহার নিয়ে সমালোচনার মুখে পড়ার পর ফিরোজের এই ঘটনা ঘটে।
ওই বক্তব্যের বিষয়ে জানতে ফিরোজের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি শনিবার বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেছিলেন, নিজের জন্য নয়, দলের জন্য টাকা চেয়েছেন তিনি।
একই বক্তব্য নিয়ে রোববার সংসদ ভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে হাজির হন ছয় বারের এই সংসদ সদস্য।
তিনি বলেন, “আমি দেখলাম সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে স্টেজ, ফুল, ক্রেস্ট ইত্যাদি খাতে অনেক টাকা খরচ হচ্ছে।
“আমি শুধু বলতে চেয়েছি, এ সব বন্ধ কর। ক্যাশ দাও, দলের ফান্ড শক্তিশালী কর। ”
বাউফলের ওই অনুষ্ঠানের ভিডিওতে ফিরোজকে মাইকে বলতে শোনা যায়, “আগামীকাল দলীয় কার্যালয়ে সকাল ৯টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত বসব। যদি কেউর উপঢৌকন দেয়ার ইচ্ছা থাকে, তবে আর এই ক্রেস্ট না।
ক্যাশ চাই, ক্যাশ চাই।
“বোঝেন নাই? নির্বাচন করতে গেলে অনেক লাগে। কাজেই ক্যাশ দিয়েন, খুব ভালো হইবে। কাল দেখা হবে সবার সঙ্গে। আজ আর কোনো ক্রেস্ট নেব না।
সমস্ত ক্রেস্ট আমি পরে নেব। ”
“পত্রিকায় যেভাবে খবরটি এসেছে, আমি আসলে সেভাবে বলিনি। আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। এর আগেও প্রথম আলো পত্রিকায় আমাকে দুর্নীতিবাজ আখ্যা দিয়ে নিউজ করা হয়েছে।
ডেইলি স্টার পত্রিকায় আমাকে ডিফল্টার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু তারা কেউ কোনো প্রমাণ হাজির করতে পারেনি। ”
নিজের মুক্তিযোদ্ধা পরিচয় তুলে ধরে তিনি বলেন, “যারা আমাকে ছোট করতে চেয়েছে, তারাই এরকম খবর প্রকাশ করেছে। ”
বক্তব্য অগ্রহণযোগ্য: টিআইবি
সংসদের প্রধান হুইপ ফিরোজের নগদ অর্থ চাওয়াকে ‘অশনি সঙ্কেত’ অভিহিত করে ওই বক্তব্যের পক্ষে তার যুক্তিকেও অগ্রহণযোগ্য বলেছে টিআইবি।
“নিজের বক্তব্যের সপক্ষে চিফ হুইপ গণমাধ্যমকে যে সাফাই যুক্তি দেখিয়েছেন, তাও পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য,” রোববার এক বিবৃতিতে বলেছে দুর্নীতিবিরোধী প্রতিষ্ঠানটি।
সংসদে প্রধান হুইপের পদের মর্যাদার সঙ্গে ওই বক্তব্য কতটুকু সামঞ্জস্যপূর্ণ, তা বিবেচনার জন্য স্পিকার ও সংসদ নেতার প্রতি আহ্বান জানিয়েছে টিআইবি।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বিবৃতিতে বলেন, “চিফ হুইপের উক্ত বক্তব্য শুধু ন্যক্কারজনকই নয়, বরং তা দেশের গণতন্ত্র ও সুশাসনের জন্য এক অশনি সঙ্কেতও বটে।
“সংবর্ধনার জন্য উপঢৌকন হিসেবে ক্রেস্টের পরিবর্তে নগদ অর্থ প্রদানের জন্য জাতীয় সংসদের একজন দায়িত্বশীল ব্যক্তির প্রকাশ্য জনসভায় এ ধরনের নজিরবিহীন বক্তব্য প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতি নির্মূলের অবস্থানের সাথে সাংঘর্ষিক। ”
এর মধ্যদিয়ে সংবিধান লঙ্ঘন হয়েছে বলে দাবি করেছে টিআইবি। নবম সংসদে উত্থাপিত সংসদ সদস্যদের আচরণবিধি খসড়া আইনটি প্রণয়নের দাবিও জানিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।