আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টারজান ইতিকথা ১

টারজান ইতিকথা শুরু করার আগে বলে নেয়া ভালো টারজান পয়েন্ট জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটা আড্ডা মারার জায়গা। ক্লাস শেষে বা ক্লাসের মাঝের সময়টুকুতে ছেলে মেয়েরা এখানে এসে আড্ডা মারে, চা সিগেরেট খায়, আবার দুপুরের খাবারও পাওয়া যায়। সমাজ বিজ্ঞান অনুষদের কাছাকাছি হওয়ায় এই অনুষদের ছত্র ছাত্রীর সংখ্যাই বেশি, তবে অন্যান্য অনুষদের ছেলে পেলেও সময় পেলে আড্ডা দিতে আসে। আমার অনেকটা সময় এই টারজানে ‘বারেক ভাই’ নামের এক রসিক মানুষের টঙে বসেই সময় কাটে। কথা না বাড়িয়ে একটা ঘটনা দিয়ে শুরু করা যাক।

ঘটনা গুলো কিন্তু বানানো নয়। তবে সরাসরি নাম না বলে ‘ইয়ে’ শব্দটা ব্যবহার করেছি। বাকি সব সেন্ট পার্সেন্ট সত্যি।

সকালে আমি কিছু খেতে পারি না। তারপরও ইদানিং খেতে হচ্ছে।

আর আমার পুরনো প্রেমিকা অ্যাসিডিটি গ্যাস ফর্ম করে বলছে "তুমি যেখানে আমি সেখানে ছেড়ে যাব না। "
তাই বারেক ভাইয়ের দোকানের ভেতরে বসে চায়ে গুলিয়ে এন্টাসিড প্লাস খাচ্ছি। এন্টাসিড সহজে গলে না। আমি একমনে চামচ দিয়ে গুলানোর চেষ্টা করছি। হঠাৎ সামনে তাকিয়ে দেখি একটা মেয়ে ছেলের মাথায় কী যেনো খুঁজছে।

আমি এন্টাসিড গুলানোয় মন দিলাম (টিপিকাল প্রেমিক-প্রেমিকারা যা করে আর কী)। এরপর মেয়েটা চিৎকার করে উঠলো 'পাইছি'।
আমি ভাবলাম উকুন বুঝি। কিন্তু না মেয়েটা একাটা মুড়ির পিস বের করেছে। গার্লফ্রেন্ডের মুখে বিজয়ীর হাসি, ছেলেটিও হাসছে।

কিন্তু সামনের বেঞ্চে বসা ছেলেটির বন্ধু আমার মতই বিরক্ত হল। সে উঠে গিয়ে ছেলেটির কান থেকে হেডফোনটা খুলে নিল।

-দেখি তোর হেডফোনটা
ছেলেটা নিজের ফোন বের করে হেডফোনটা কানে দিয়ে বলল
-কি বাজে হেডফোন ইউজ করিস সাউন্ডতো ফ্যাসফ্যাস করে।
বলতে বলতে আমার পাশে এসে বসলো। আমি কানের দিকে তাকিয়ে দেখি স্কালের হেডফোন!!!!
ছেলেটি আবার বয়ফ্রেন্ডটাকে বলল
-এক হুডি আর কত পরবি? ব্যাটা ধোসও তো না, এই ইয়ে তুমি গন্ধ পাচ্ছ না, আমি তো এখান থেকে পাচ্ছি, ব্যাটা পাঁঠা।


গার্ল ফ্রেন্ডটা তখনো চুপ। এবার ছেলেটা আবার বলল
-দ্যাখ দ্যাখ, ওর পা দ্যাখ। কীরে তুই পা ধোস না কত দিন? মনে হচ্ছে কাঁদা পারায় আসছিস।
বয়ফ্রেন্ডটা এবারো চুপ। কিন্তু বিধি বাম, এবার গার্লফ্রেন্ডটা ভ্রু কুচকে বললো
-দেখো ইয়ে হেডফোনটা আমার আপা ইতালি থেকে পাঠিয়েছে।

এটা স্কালের হেডফোন। আর যে হুডি থেকে তুমি গন্ধ পাচ্ছ সেটাও ইতালি থেকে আসা, আজকে সকালেই ওটা আমি ওকে গিফট করেছি। আর কাঁদা তোমার কনভার্সে লেগে আছে ওর না। অ্যাই উঠো। বলে গদগদ করে চলে গেল।

ছেলেটি আকস্মিক আক্রমনে নির্বাক। পরে শুনলাম ছেলে দুটি রুমমেট। আজ দুই বেটারই কপালে দুঃখ আছে। এত ঘটনা ঘটে গেল, চাও শেষ হয়ে গেল কিন্তু আমার এন্টাসিড তবুও গললো না। শেষমেশ আঙুল দিয়ে উঠিয়ে চিবিয়েই খেতে হল।

বারেক ভাই হেসে বলল 'মাসুদ ভাই গললো না, না?'
কোন রকমে হাসি চেপে বললাম, নাহ ভাই মাইয়্যা মাইনষ্যের কথায় শুধু পোলারাই গলে এন্টাসিড না। ।

সোর্স: http://prothom-aloblog.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।