লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি। নতুন কিছু ক্রিয়েট করতে সব সময় ভালো লাগে। নতুন নতুন "গল্প" লিখতে বেশী ভালো লাগে। ।
এই শাহজাহান!! বোকার মত দাঁড়িয়ে আছো কেন? একটা আইস্ক্রিম আনতে কি সারাদিন লাগিয়ে দেবে নাকি??
-সাজু কিছুক্ষন স্মৃতির দিকে তাকিয়ে আবার রাস্তা পার হবার জন্য সামনের দিকে এগিয়ে গেলো।
রাস্তা পার হয়ে অপেরা আইস্ক্রিম কর্নার থেকে দুটো
"কোন আইস্ক্রিম" নিয়ে রাস্তা পার হয়ে পার্কের ভেতরে চলে গেলো। পার্কের ভেতর একটা ছায়া জায়গায় গাছের নিচে বেঞ্চে বসে আছে স্মৃতি। একটা আইস্ক্রিম স্মৃতির হাতে দিলো সাজু। আরেকটা নিজে খুলতে খুলতে বলল,
-তোমাকে কতবার বলেছি এভাবে আমাকে যেখানে, সেখানে উচ্চস্বরে "শাহজাহান"
বলে ডাকবেনা। কতবার বলবো তোমাকে "সাজু" বলে ডাকবে।
ওই নামটা
অন্য কেউ বলে ডাকলে তেমন খারাপ লাগেনা। তবে তুমি ডাকলে ভীষণ লজ্জা লাগে আমার!
-ওলে আমার লজ্জাবতী! দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে আইস্ক্রিম খাচ্ছো কেন? বলদের মত!
বসে বসে খাও।
-এই আরেকটা জিনিস। শুধু কথায়, কথায় বলদ বলো! এটাও আর কখনো বল্বেনা।
আমার এগুলো শুনতে ভালো লাগেনা।
রাগ লাগে। ভালোবেসে আদরের সাথে
"সাজু" বলে ডাকবে। আর বলদ না বলে "সোনা" বলবে। ঠিক আছে?
-হি হি হি হি..আচ্ছা বলবো। এই সোনা! ওভাবে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে "আইস্ক্রিম" খেওনা।
এখানে আমার পাশে বসে খাও! এবার হয়েছে?
-হ্যাঁ হয়েছে। খুব হয়েছে।
হাঁসি মুখে স্মৃতির পাশে বসে পড়লো সাজু। আইস্ক্রিম খাচ্ছে আর স্মৃতির খাওয়া দেখছে। স্মৃতি একেবারে ছোট বাচ্চা মেয়েদের মত আইস্ক্রিম খাচ্ছে।
মেয়েটা খাওয়ার ভেতরে শুধু এই আইসক্রিমটাই খাই! কি যে মজা পাই এই আইস্ক্রিম খেয়ে' কে জানে? তোমার কি মনে আছে সাজু গতবার "ভ্যালেন্টাইন ডে তে" আমরা কি কি করেছিলাম?
হ্যাঁ মনে আছে। বেশ মনে আছে। ফ্যান্টাসি কিংডমে গেছিলাম তোমাকে নিয়ে। তুমি রোলার কোস্টারে উঠতে ভয় পাচ্ছিলে। আমি বলছিলাম কোন ভয় নেই! আমি তো আছি।
কিসের ভয়? জোর করে তোমাকে উঠিয়েছিলাম। তুমি তো দু'চোখ বন্ধ করে সে কি চিৎকার দিচ্ছিলে! তোমার চিৎকার শুনে আশে পাশের সবাই আমাদের দিকে তাকিয়ে ছিলো। আমি তো ভয়ই পেয়ে গেছিলাম তোমার ওই চিৎকার শুনে।
-তোমার তো দেখি ভালোই মনে আছে। ওইদিন আমি জীবনে প্রথম বার রোলার কোস্টারে উঠেছিলাম।
এজন্যই তো বেশী ভয় করছিলো। তারপর সারাদিন আর কি কি করেছিলাম খেয়াল আছে?
-হ্যাঁ আছে। তারপর আমরা দুজন ধানমণ্ডি লেকের পাড়ে গিয়েছিলাম। সেখানে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত ছিলাম। দুজনে আমাদের ভালোবাসার কত কথা একজন আরেকজনকে বলছিলাম! মনে আছে তোমার? হ্যাঁ মনে আছে! সাজু আমাদের ভালোবাসা চিরদিন
যেন এরকম রঙ্গিন থাকে! চিরসবুজ থাকে!
হুম, থাকবে।
"শাহজাহান" তুমি কি আমার ভালোবাসার জন্য "তাজমহল" তৈরি করতে পারবে?
-না স্মৃতি! আমার তো অতো টাকা, পয়সা নেই যে তাজমহল নিরমান করবো।
তবে তোমার ভালোবাসার জন্য একটা "স্মৃতি মহল" অবশ্যই তৈরি করবো। ।
-সত্যিই??
-হ্যাঁ সত্যি!!
-আমার আর কিছুই লাগবেনা। শুধু "স্মৃতি মহল" হলেই আমি খুশি।
।
এভাবে আর কতক্ষন বসে থাকবি? সন্ধ্যা হয়ে গেলো তো! বাসায় চল। ।
আর কতদিন এরকম পাগলামি করবি?
স্মৃতি মারা গেছে আজ ৫ বছর হয়ে গেলো!! এখনো কি তোর প্রতিদিন এসে এই পার্কে এসে বসে থাকতে হবে? আর কত কাঁদবি? কাঁদতে কাঁদতে তোর চোখের নিচে কালো দাগ জমাট বেঁধেছে। কত বললাম ওকে ভুলে যা! আমি আর বলবোনা তোকে!
আর হইতো বেশীদিন নেই, এরকম করতে থাকলে তোকেও মনে হয় আর বাঁচানো যাবেনা।
সকাল থেকে কিছু খাস নাই! এভাবে সারাদিন কত গুলো আইস্ক্রিম খাবি তুই?? আইস্ক্রিম খেয়ে খেয়ে কি কোন মানুষ বাঁচতে পারে? পাশে এই দুইটা আইস্ক্রিম কার জন্য রেখেছিস? একা একা কি গুন গুন করছিস?
-ওকে বল! আমি ওর জন্য "স্মৃতি মহল" তৈরি করেছি! ওকে ফিরে আসতে বল রাজু!!
আমি ওকে ছাড়া বাঁচবোনা!
কি বলে ছিল? আমাদের ভালোবাসা চির রঙ্গিন থাকবে? চিরসবুজ থাকবে? আর আজ স্বার্থপর! আমাকে রেখে একাই চলে গেলো! ও খুব স্বার্থপর রে!! খুব স্বার্থপর!
ওকে বল আজ "ভ্যালেন্টাইন ডে" আমি ওর জন্য এখানে বসে অপেক্ষা করছি।
ওকে আসতে বল! আমাকে "শাহজাহান" বলে চিৎকার দিয়ে ডাকতে বল! আমি ওর পরে আর কখনো রাগ করবোনা! আমাকে যত খুশি "বলদ" বলে ডাকতে বল!
আমি আর কখনোই মন খারাপ করবোনা!! কখনোই না...
"হ্যাপি ভ্যালেন্টাইন ডে স্মৃতি"
"উৎসর্গ"
ফেসবুকীয় ফ্রেন্ড "তাজমহলহীন শাহজাহান" ভাইকে। উনি বলেছিল উনি এবং ওনার প্রেমিকাকে নিয়ে যেন একটা গল্প লিখি। তাই ভাই, একটা ছোট খাটো গল্প লিখে ফেলালাম
আপনাদের নিয়ে। ।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।