সবাইকে শুভেচ্ছা।
(পূর্ব প্রকাশিতের পর)
বিকেল পাঁচটায় গাড়ী নিয়ে বের হলো। অন্যদিন একটু দেরীই হয়ে যায় বেরুতে বেরুতে। নিজেই ড্রাইভ করছে। সকালে আসা আর বিকেলে ফিরে যাওয়াটা শাহেদ নিজেই ড্রাইভ করে।
অফিসের কাজের সময় ড্রাইভার ব্যবহার করে। এই সময়টা রাশ আওয়ার। আজকাল লুসাকা শহরটাতেও জ্যাম পড়ে যায়। পাঁচ বছর আগেও এরকমটি ছিল না। ট্রাফিক বেড়ে গেছে অনেক।
শহরে ঢুকতে গ্রেট ইস্ট রোডের ফ্লাইওভারটায় লম্বা লাইন পড়েছে। অবশ্য এখান থেকে ছুটে যেতে পারলেই কায়রো রোডের পিছনের রাস্তা ধরে ফ্রিডম ওয়েতে চলে যেতে পারবে। মল্লিকাদের দোকানটা ছিল আগে কায়রো রোডের উপর। গত দু'বছর হলো ফ্রিডম ওয়েতে চলে এসেছে। কায়রো রোড হচ্ছে লুসাকা শহরের প্রানকেন্দ্র।
শহরের অফিস পাড়া, বানিজ্যিক এলাকা। আবার দোকানপাটও আছে, গ্রোসারি থেকে শুরু করে স্টেশনারি। যে কারনে ঘর ভাড়া বেশি, খরচ বেশী।
শাহেদ গাড়ি পার্ক করে ঢুকলো। মল্লিকা মুখ নিচু করে কিছু একটা লিখছিলো।
কেউ একজন এলো ভেবে মুখ তুললো। কিন্তু কিছুই বললো না। মাথা নিচু করে আবার কাজে মন দিলো। আজ কি ওকে অন্যরকম লাগছে। একটু অন্যরকম লাগতেই পারে।
আজ তো আর গতকালের মতো নয়। আজ যে ওর নিজেকে উদ্ভাস করে দিয়েছে শাহেদের কাছে, যা সকালেও ছিল পাথরচাপা। শাহেদের সামনে তো আজ সে অন্য এক মল্লিকা। সামনের ডিসপ্লে বোর্ডটার কাছে গিয়ে দাঁড়ালো শাহেদ। বড় দু'টো স্পিকার লাগানো আছে দুই কোনে।
গজল বাজছে হাল্কা সুরে। ওর এখানে এলে সব সময়ই কিছু না কিছু বাজতেই থাকে। কিন্তু সবই নরোম সুরের। খুব ভাল পছন্দ ওর।
মল্লিকা মুখ নিচু করেই বললো, কেমন আছ?
ভাল।
তুমি?
ভাল।
এই কথাগুলো খুব স্বাভাবিক। প্রতিবার এলেই এই কথাগুলো দিয়ে শুরু হয়। কিন্তু এরপর কি বলা যায়!
কিছুক্ষন নিরবেই কাটলো। মল্লিকা এর ফাঁকে ফেরৎ আসা ডিভিডিগুলো জায়গা মতো রেখে নিলো।
ভিতরে কোন কাস্টমার নেই। একটু দুরে এক কোনে আফ্রিকান এক মহিলা আ্যাটেন্ডান্ট বসে আছে।
নিরবতা ভেঙ্গে শাহেদ বললো, মল্লিকা তুমি পাগল হয়ে গেছ। কি করেছ এটা?
শাহেদ এবার 'তুমি' করেই শুরু করলো এবং হিন্দীতেই। কেন সে হয়তো নিজেই জানে না।
মল্লিকা কিছু বলে না। চুপ করেই থাকে।
আচ্ছা ঠিক আছে। কিন্তু এরপর কি করবে? শাহেদ আবার বলে।
এবার মল্লিকা একটু হেসেই বলে, কি করবো আবার? তোমাকে ভালবেসে যাবো।
ওর মুখের দিকে তাকালে বিস্মিত হতে হয়। কেমন একটা করুনাও হয় শাহেদের। বলে, তুমি কষ্টই পাবে শুধু।
এবার মল্লিকা কথা ঘুরিয়ে বলে, তুমি এক কাজ কর..., বলে সে সেল্ফ থেকে একটা ডিভিডি টেনে বের করে আবার বলে, এই ছবিটা তুমি দেখ। ভাল লাগবে।
শাহেদ বলে, কি ছবি এটা?
'ম্যায়নে পেয়ার কারনে লাগা'।
নাম দেখে তো মনে হচ্ছে এর পরিচালিকা তুমিই। শাহেদ হাল ছেড়ে দিয়ে এবার একটু রসিকতা করে।
এর পর থেকে শাহেদ আর ঘাটায় নি মল্লিকাকে। বরং মল্লিকার ব্যবহারে সে-ই ওর দিকে ঝুঁকে যায়।
ওর ভিতরে এক ধরনের দুর্বলতা তৈরি হতে থাকে। কিন্তু সে ভাবে এই ভালবাসা যদি প্লেটনিক হয় তবে ক্ষতি কি? সরে এসে মল্লিকাকে কষ্ট দিতে ওর নিজেরই কেমন এক ধরনের কষ্ট হয়।
সময় গড়িয়ে যায়, শাহেদের দোকানে আসা-যাওয়াটাও বেড়ে যায়। ফার্স্ট হাফে মানে সকালের দিকটাতে তেমন একটা কাস্টমার থাকে না। শাহেদ ঐ সময়টাতে যায়, গল্প করে এটা-সেটা।
আর ওদের কাছে আসাটা বেড়ে যায়। মল্লিকা মাঝে মাঝে হিন্দীতে কথা বলে, শাহেদ আরষ্ট হয়ে একটু বলেই আবার ইংরেজিতে চলে যায়। মল্লিকা বলে, তুমি হিন্দীতে বল না কেন। তুমি তো হিন্দী পারো। শাহেদ বলে, তুমি বলছো, কিন্তু আমি জানি ভুল বলছি।
তুমি যতটুকু ভুল বলছো সেগুলো আমি শুধরে দেবো। আমার সঙ্গে কথা বল, দু'দিন পর দেখবে তুমি শাম্মী কাপুরের মত হিন্দি বলছো।
মানে? তুমি আর কাউকে পেলে না, ঐ ভোট্কা ব্যাটা শাম্মী কাপুরের সঙ্গে তুলনা করলে? শাহেদ উষ্মা দেখিয়ে বললো।
এই, তুমি শাম্মী কাপুরকে নিয়ে কিছু বলবে না। সে আমার প্রিয় নায়ক।
মল্লিকা বললো।
শাহেদ শুনে তো হাসি থামাতে পারে না।
হি ইস নাও ব্লাডি ওল্ড ম্যান। ডু ইউ নো ?
জানি, কিন্তু আমি পুরনো ছবি দেখতে পছন্দ করি আর ওরটাই দেখি।
শাহেদ বললো, আজ বুঝলাম তোমার মাথায় সত্যি গন্ডগোল আছে।
এভাবেই গড়িয়ে যায় সময়। শাহেদও সত্যি সত্যিই হিন্দী বলাটা ভালই রপ্ত করে ফেলে। মল্লিকা অনেক সহজ করে দিয়েছে আর অনেক কঠিন শব্দের অর্থগুলো শিখে নিয়েছে। যেমন, কারবাট। মানে বিছানায় শোয়া অবস্থায় এপাশ-ওপাশ করা।
অথবা 'মেহ্সুস' মানে অনুভব করা। কথা বলার মানুষ থাকলে যে অনেক কঠিন ভাষাও শিখে ফেলা যায় তা শাহেদ বুঝতে পারছে। এখন শাহেদ হিন্দীতেই কথা বলতে যেন স্বচ্ছন্দ বোধ করে। একদিন মল্লিকা মুখ নিচু করে কার্ডে এন্ট্রি করছিল, শাহেদ পাশে দাঁড়িয়ে ওর আঙ্গুলগুলো দেখছিল। হঠাৎ বললো, মল্লিকা, তোমার হাতটা একটু ছুঁয়ে দেখি?
মল্লিকা যেন একটু চম্কে উঠলো।
পরক্ষনেই সামলে নিয়ে বললো, কিউ নেহি? ছোঁও না? শাহেদ হাত বাড়িয়ে ওর হাতটা ধরলো। মল্লিকা যেন কেঁপে উঠলো। আর শাহেদ নতুন এক ছোঁয়ার অনুভবে আলোড়িত হলো। ছেড়ে দিল খুব শীঘ্রই। কেউ দেখে ফেললে সর্বনাশ হয়ে যাবে।
কাস্টমার যারা আসে তারা নিশ্চয়ই হাত ধরে কথা বলে না। এভাবে ওদের মাঝে দূরত্ব আরও কমে আসে।
আরেকদিনের কথা। শাহেদ গিয়েছে মল্লিকার ওখানে কিন্তু মল্লিকাকে দেখছে না। ঘরের কোনাটাতে বরাবরের মতো বেজার হয়ে বসে থাকা আফ্রিকান মেয়েটার কাছে জানতে চাইলো।
মেয়েটা এতদিনে জেনে ফেলেছে এখানে শাহেদের বিশেষ কদর আছে। জবাব পাওয়ার আগেই শাহেদ শুনতে পেলো, আমি এখানে?
শাহেদ দেখলো পিছনটাতে যেখানে পোশাক সাজানো তার আড়াল থেকে কথা বলছে মল্লিকা। গোছগাছ করছে। শাহেদ দাঁড়িয়ে আছে দেখে মল্লিকা আবারো বলে, এখানে চলে এসো।
শাহেদ এগিয়ে যায়।
এদিকটা নিরিবিলি, শুনশান। গোলাকার রিভোলভিং হ্যাংগারে রেডিমেড পোশাকগুলো সাজানো বলে ওদিক থেকে খুব একটা দেখাও যায় না।
মানব-মানবী এক হতে নেই, তাও যদি হয় আড়ালে। শাহেদ কাছে গিয়ে দাঁড়ালো আর চকিতেই মল্লিকা ওকে জড়িয়ে ধরলো। ক্ষীন কন্ঠে বললো, এভাবে একটু জড়িয়ে থাকতে দাও।
শাহেদ কেঁপে উঠলো। দু'হাতে ওর মুখখানি তুলে দেখলো কিছুক্ষন। তারপর আলতো করে চুমু খেলো ওর ঠোঁটে। খুব বেশিক্ষন নয়, কিন্তু মনে হলো যেন অনন্ত কাল। শাহেদ হঠাৎ যেন শুন্য থেকে মর্ত্যে এসে দাঁড়ালো।
চকিতে ছাড়িয়ে নিল। কি করছে ও এসব! কেউ দেখে ফেললে ওর যাই হোক কিন্তু মল্লিকার কি হবে?
সেদিন মল্লিকার ওখান থেকে বের হয়ে শাহেদ এমনিই গাড়ি চালিয়ে এদিক ওদিক ঘুরলো। নিজের ভিতরে একটা তোলপাড় খেলে যাচ্ছে। ওর চোখের সামনে কেন বারবার ভেসে উঠছে ওর স্ত্রী শম্পার মুখটা! ওর আদরের মেয়ে দু'টোর মুখ, ছেলেটাও এসে দাঁড়া্য় যেন ওর পাশে। সে কি ফাঁকি দিচ্ছে ওদেরকে? এ যে প্রতারনা! কিন্তু সে তো চেয়েছিল প্লেটোনিক প্রেম, মল্লিকার সঙ্গে।
যেখানে থাকবে না কোন শরীরী ভাষা, থাকবে না কোন শরীরের চাহিদা। আজ ফিরতে একটু রাত হয়ে যায়। শম্পা দরজা খুলে বলে, আজ দেরি করলে যে? শাহেদ শম্পাকে দেখে, একটু সময় নিয়েই। শম্পা আবার বলে, তোমার কি শরীর খারাপ? শাহেদ সামলে নেয়। বলে, না, একটু কাজ পড়ে গিয়েছিল।
শাওয়ার নিয়ে বের হতে যেয়ে মেয়ে টিংকুর ঘরটা চোখে পড়ে। টিংকু পড়ছে। কেন যেন একটু পাশে গিয়ে দাঁড়াতে ইচ্ছে করলো।
কি পড়ছো মা?
পড়ছি না। অংক করছি।
আজ দেরী করলে কেন বাবা?
হ্যা, একটু দেরীই হয়ে গেছে। কাজ ছিল। পড়ো।
শাহেদ বেরিয়ে নিজের কামরায় চলে আসে। চা খেতে খেতে স্ত্রীকে বলে, একটা কথা বলতে চাই তোমাকে।
কি কথা?
খুবই জরুরী কথা।
দেখো প্রেমে ট্রেমে পড়ে থাকলে আমাকে বলার দরকার নেই। ওটা সহ্য করতে পারবো না। অন্য কিছু হলে নিশ্চিন্তে বলতে পারো।
শম্পা এই রকমই।
ওরা প্রেম করে বিয়ে করেনি ঠিকই, কিন্তু বিয়ের পরে চুটিয়ে প্রেম করেছে। আর তাই হয়তো এত সহজিয়া কথাবার্তা।
কিন্তু শাহেদ চম্কে ওঠে। শম্পা কি জেনে ফেললো কিছু। তাই বা কি করে হয়।
শাহেদ সামলে নিয়ে বলে, কি যে বলো! আমি ভাবছি অনেক দিনতো দেশের বাইরে কাটালাম। এবার ফিরে যাই দেশে।
শম্পা তাকালো শাহেদের দিকে। বললো, হঠাৎ এ কথা বলছো যে? কোন সমস্যা হয়েছে?
না, কি সমস্যা হবে! তবে কাজের চাপটা এখানে একটু বেশীই। তা'ছাড়া দেশের বাইরে আর কতদিন থাকবো।
শম্পাও অনেকটা একঘেয়েমী জিবনে হাপিয়ে উঠেছে। সবাইকে ছেড়ে সাত সমুদ্র তেরো নদীর পাড়ে পড়ে আছে। এখন চলে গেলে মন্দ হয় না।
মন্দ বলো নি। তুমি চাইলে চলে যাওয়া যায়।
শম্পা সম্মতি দিল।
রাতে শুয়ে শাহেদ আজকের ব্যাপারটা নিয়ে ভাবছিল। মল্লিকার জন্য খারাপ লাগছে। একটু কি ভালবাসেনি ওকে! বেসেছেই তো। কিন্তু একটা সর্বনাশ থেকে ওকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে।
কিছু দিন মল্লিকার ওখানে গেল না শাহেদ। মল্লিকা ফোন করে জানতে চাইলো শাহেদ রাগ করেছে কি না। শাহেদ বলেছে, রাগ করবো কেন? যা ঘটেছে তার অংশীদার তো আমরা দু'জনেই।
কয়েকদিন পর শাহেদ গিয়েছে মল্লিকার ওখানে। দু'জনেই যেন একটু আরষ্ট।
শাহেদ বলে, মল্লিকা, আমরা মনে হয় একটু বেশিই এগুচ্ছি। নিজেদের শাসন না করতে পারলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। তোমার কথা ভেবেছো? কি হবে সে তো বুঝতেই পারছো।
মল্লিকা চুপ করে থাকে।
শাহেদ বলতে থাকে, সেদিন যা ঘটে গেলো তাকে আর বাড়তে দেয়া যায় না মল্লিকা।
আমাদের ভেতরের প্রবল 'আমি'টাকে যদি আমারা নিয়ন্ত্রন না করি তা'হলে সর্বনাশ হবে। কি করবে তখন?
মল্লিকা মাথা নিচু করেই আছে। কিছু লেখার ভান করছে। এক ফোঁটা চোখের জল কাগজে পড়ে লেখাটা নষ্ট করে দিলো। শহেদ অবাক হয়ে দেখলো মল্লিকা কাঁদছে! ওর কষ্ট হলো।
শুধু বললো, মল্লিকা, প্লিজ। বোঝার চেষ্টা কর।
মল্লিকা একটু মুখ ঘুরিয়ে নিজেকে সামলে নিয়ে বললো, কি করতে চাও তা'হলে? ঠিক আছে, আমরা এখন থেকে শুধু কথাই বলবো। তুমি ক'দিন আসোনি, আমার কষ্ট হয়েছে।
শাহেদ জানে এই 'ঠিক আছে' আর ঠিক থাকবে না।
এসব বলে কয়ে আসে না।
মিঃ প্যাটেল দোকান বন্ধ করছে। রাত ন'টায় দোকান বন্ধ করার সময়। মল্লিকা দাঁড়িয়ে আছে গাড়ির কাছে। মিঃ প্যাটেলের অপেক্ষা করছে।
একটা উড়োজাহাজ উড়ে গেল তেমন একটা উঁচুতে নয়, যেন একটু আগেই উড়াল দিয়েছে। জাহাজের আলোগুলো স্পষ্ট। লাল আলোটা টিপ টিপ জ্বলছে নিভছে। এরকম উড়োজাহাজ লুসাকা শহরের আকাশে কতই উড়ে যায়, মল্লিকা কখনো কি আর তাকিয়ে দেখে? কিন্তু কেন যেন আজ উড়োজাহাজটার দিকে একটু তাকিয়ে দেখে অজান্তেই একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে গাড়িতে উঠে বসে।
শাহেদ উড়োজাহাজের ভিতরে বসে আছে।
জানালার ধারে বসেছে। অন্ধকারে কিছু দেখা না গেলেও শহরের আলোগুলো এখনও দেখা যাচ্ছে। নিচে তাকিয়ে যেন খোঁজার চেষ্টা করে মল্লিকাদের দোকানটা কোন দিকে। মল্লিকা এখন কি করছে! দোকান বন্ধ করে ঘরে ফিরে গিয়েছে নিশ্চয়ই। শাহেদ ঘড়ি দেখে।
গতকালও মল্লিকার ওখানে গিয়েছিল। সহজাত কথা-বার্তা বলেছে। মল্লিকাকে একটুও বুঝতে দেয়নি যে শাহেদ কত বড় একটা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে। কিন্তু মল্লিকাকে একবার বলেছিল, আচ্ছা মল্লিকা, আমি যদি হঠাৎ চলে যাই তো তুমি কি করবে?
চকিতে শাহেদের দিকে তাকিয়ে বলেছে, তুমি যাবে না আমি জানি।
শাহেদ আর কিছু বলেনি।
এখন মল্লিকার জন্য খারাপ লাগছে। কাল বা পরশু শাহেদ ওর ওখানে না গেলে অফিসে ফোন করবে মল্লিকা। আর তখনি জেনে যাবে যে শাহেদ দেশে ফিরে গেছে। শুনে কি করবে মল্লিকা? কাঁদবে? রিসিভারটা হাত থেকে পড়ে যাবে? নাকি বিশ্বাস করবে না! ও কি আর দোকানে আসবে না? বসবে না আর কখনো? নাকি সবই চলবে, কেউ কিছু জানবে না। মল্লিকা যেমন মেয়ে হয়তো কাউকে কিছু জানতেই দেবে না।
নিজের অবুঝ আর বাঁধ ভাঙা প্রেমটাকে নিজের ভিতরেই লালন করবে চোখের জলে।
শাহেদের চোখ ঝাপসা হয়ে আসে। মনে মনে বলে, মল্লিকা তোমার কাছ থেকে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। জেনেছি পাগলপারা প্রেম কাকে বলে। আমি কোন দিন তোমাকে ছেড়ে যাবো না এ কথাটা ঠিক নয়।
এটা কেবলই তোমার এক অন্ধ বিশ্বাস। আমি তোমার এই বিশ্বাস রাখতে পারিনি। এই দেখো আমি চলে যাচ্ছি। আমাকে ক্ষমা করো। তুমি ভাল থেকো, মল্লিকা।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।