সান্ধ্যকালীন কোর্সে বুঝি আপনার কষ্ট হয়, কিন্তু কোন কোন অভাগার সেটাই শিক্ষালাভের শেষ উপায়
কাপুরুষ বারবার মরে। জানি না শাস্ত্রের বচন কি না, জানি না সাহসীদের পুনরুত্থান ঘটে কি না। যতটুকু ধারণা করি পাপীরই পুনর্জন্ম হয়। পূর্ব জনমের দেনা-পাওনার হিসাব মেলাতে। নিজেকে সাহসী পুরুষ দাবী করি না।
আমার জন্য ভাগ্যের কোন বৃষ্টিপাত দেখিনি এখনো। বাংলার সোঁদা মাটিতে আমার ভালোবাসার বীজগুলি এখনো ঘুমায়া। ঘুমায়া এখনো পুনরুত্থানের স্বপ্ন। কিন্তু অন্তত একবার পুনর্জীবন ঘটেছে ইতোমধ্যে। অন্তত সামুতে।
কিছু কি ঘটেছে বিগত শীতঘুমের কালে? বৈষয়িক যা কিছুই হোক। সাহিত্যের খেরোখাতায় আঁকিবুকি না থাকলে মনে হয় কিছুই হয় নি। হিসাবটা আপেক্ষিক কিন্তু গৌণ নয়। পূর্ব জন্ম যেমন তেমনি পরবর্তী জনমের প্রাসঙ্গিকতা ও মুক্তির প্রশ্ন এখানে খুব উচ্চকিত।
"দোলনকাল" আমার শীতঘুম কিংবা প্রাসঙ্গিক হিসাব নিকাশ।
শ্রদ্ধাভাজন এক জ্যেষ্ঠ কবি, সম্প্রতি ‘দোলনকাল’র পাণ্ডুলিপি পাঠান্তে, বাংলা কবিতার বহুচর্চিত দুই প্রতিভাস স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। তার ধারণা আশিক রেজা, ‘ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো মহান পুরুষ’ নজরুলের ‘বল বীর, চির উন্নত মম শির’র দীক্ষা থেকে; আল মাহমুদ’র ‘পরাজিত নই নারী পরাজিত হয় না কবিরা’র কার্তিকীয় চেতনা থেকে সরে দাঁড়িয়েছে। হয়তো। আমি কি করে বলবো, আলপথে সোজা এসেছি কি না। পদাঙ্ক অনুধাবনকারী কিংবা যথাযোগ্য বিষাদের অভাব যারা ধরতে পারেন, এমন স্পর্শকাতর এন্টেনাওয়ালারা হয়তো পারেন।
কিন্তু সে ভিন্ন প্রসঙ্গ। জাতির সামনে প্রশ্ন হচ্ছে, কবিতায় কিংবা কবির নিকট ‘পরাজয়’ কি অর্থ প্রকাশ করে। কবি সমাজের ঠিক কোন সম্প্রদায়, কোন চেতনার প্রতিনিধিত্ব করেন। নানান বিবেচনায় কবিতা একটি মধ্যবিত্তীয় অসুখ, কবিকূল মধ্যবিত্ত সম্প্রদায়ভূত। প্রকাশিত ভড়ং বলে-তিনি শোষিত, নির্যাতিত ও বিত্তহীনের।
উপলব্ধি হচ্ছে, মধ্যবিত্ত বংশদ্ভুদ কবিকূল বঞ্চিতের বেদনায় আকুল বটে কিন্তু কবিতায় নাযিল হয় নিজস্ব অহং! পরাজিতের পরাজয়, লজ্জা, ছোটলোকি, সুবিধাবাদের কাদা বাইম মাছের মতো অনায়াসে ঝেড়ে ফেলেন। কবির ভড়ং যে সম্প্রদায়েরই হোক, অহং ঈশ্বরের কাতার থেকে যদিবা নামে নবীর কাতারে যথাযোগ্য আসন না দিলে দাঁড়িয়ে থাকে। চির অভিজাত, পরমপুরুষকে জল-জমিন, মাটির পৃথিবীর ‘অস্পৃশ্যতা’ স্পর্শ করার সাহস বা উচ্চতা কোনটাই রাখে না।
যে কাল বিস্মরণযোগ্য তাই প্রাচীনকাল। মানুষের মনন যখন থেকে কথা বলেছে, অনাগতকালকে নির্মাণের কথা ভেবেছে-সমস্তটাই আধুনিক যুগ।
সেই যুগ চেতনার ঝাণ্ডাকেই কবিতার বাতাসে উড়াই। যে বাতাস শুধু শাসকের কিংবা শোষিতের কথাই বলে না বরং দুইয়ের মধ্যবর্তী সম্প্রদায়ের কথাও বলে। কবির অহং বিবেচনায় যাকে অস্বীকার করা হয়েছে এতকাল, উত্তরাধুনিককালে তার ঝাণ্ডাও তোলা চাই। সকলকালে ‘বাপের ঘরের পিসি, মায়ের ঘরের মাসি’ কিংবা ‘বাপে খেদানো মায়ে তাড়ানো’ বুর্জোয়া মধ্যবিত্তের নিজস্ব বেদনা, প্রকট ছল এবং দোদুল্যমানতা-দোলনকাল’র অস্থির আয়নায়, ঢেউ খেলানো পানিতে যে প্রতিবিম্ব তৈরি করে-তাই ‘দোলনকাল’র উপজিব্য।
অভিন্ন ফুল থেকেই প্রজাপতি সংগ্রহ করে বিষ আর মৌমাছি সংগ্রহ করে মধু।
পড়ুয়া বন্ধুরা কি সংগ্রহ করবেন কিংবা সংগ্রহ করবেন কি না তা তারাই ঠিক করবেন। কিন্তু চেহারা দেখার জন্য কিংবা পাতা উল্টানোর জন্য পাবেন হাতের নাগালেই : আশিক রেজা’র দোলনকাল
বইমেলায় প্রাপ্তিস্থান: রাঁচি গ্রন্থ নিকেতন কিংবা কালের ধ্বনি স্টল, লিটলম্যাগ প্রাঙ্গন
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।