আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বোবা !

ঘুম থেকে চোখ খুলে সামিতের প্রথম কাজ মোবাইল চেক করা। যদিও সে ভাল করেই জানে তার আম্মু ব্যতীত কেউ কল দেবে না। কোন মিসকল নেই কিন্তু একটা টেক্সট আছে, সেটা আর চেক করার প্রয়োজন মনে করল না, কারণ গ্রামীণ আর এয়ারটেল যে হারে টেক্সট দেয়ার প্রতিযোগিতা শুরু করেছে, তাতে না দেখাই ভাল। ফ্রেশ হয়ে পিসি চালু করেছে মাত্র, তখন আবার মেসেজ কিন্তু চেক করল না। কিছুক্ষণ পর একটা মিসডকল, সেটা দেখতে গিয়ে চোখে পড়ল অপরিচিত নাম্বার, এমনকি টেক্সট দুটো ওই নাম্বার থেকে।

বাংলিশে লেখা, টেক্সটের রিপ্লাই দেননি কেন? আমি সেই সকালে টেক্সট দিয়ে অপেক্ষায় রইলাম। প্রথম টেক্সট টা পড়তে গিয়ে দেখে “ আপনাকে আমার ভীষণ পছন্দ হয়েছে, আপনার সাথে প্রেম করব, আপনার কি কোন গার্ল ফ্রেন্ড আছে? না থাকলে...

সামিত কিছু বুঝল না। কারণ এর আগে এক ক্লাসমেট এমন দুস্টমি করেছিল। প্রথম দিন মেসেজ দিয়ে কোন উত্তর না পেয়ে দ্বিতীয় দিন কল করতেই ধরা পড়েছিল। তবু আজ উত্তর লিখলঃ হু আর ইউ?

আপনার প্রেমিকা!

হাউ টু পসিবল?

আপনি হ্যাঁ বললেই সম্ভব।

আপনি সামিত আপনাকে অনেক দিন ধরেই জানি।
সামিত বুঝল এটা সেই আগের ছেলে, না হয় কোন পরিচিত বন্ধু, তাই আর কোন উত্তর দিল না। দুই দিন কোন খবর নেই, এরপর একের পর একট টেক্সট করতে লাগল কিন্তু সামিতের কোন উত্তর না পেয়ে কল করল,সামিতঃ হ্যালো, হ্যালো, আপনি বোবা নাকি? কোন কথা বলছেন না যে?

কেটে দিয়ে টেক্সট দিল সে: আপনার কণ্ঠ খুব সুন্দর। আমি মাঝে মাঝে কল করলে আপনি কথা বলবেন প্লিজ।

সামিতের মাথা খারাপ হয়ে গেল ফাজলামির একটা মাত্রা অবশ্যই থাকা উচিত।

সামিত রেগে-টেক্সট দিল অশ্রাব্য ভাষায়ঃ তোর কি ভাত খেয়ে কাজ নেই? তুই আর কল দিবি না এমনকি টেক্সট ও না। দিলে হাড়গোড় ভেঙ্গে হাতে ধরিয়ে দেব। সেন্ড করার দুই মিনিট পরেই কল এলো রিসিভ না করলে এলো টেক্সট । সরি কল করার জন্য,কিন্তু অর্থপেডিককে কেন শুধু শুধু আমাদের মাঝে ডাকছেন? সে কি আপনার কোন আত্বীয়? শুধু বলুন আপনার জিএফ আছে কিনা? এর পর আর কোন দিন ডিস্টার্ব করব না।

সামিত ভাবল আছে বললেই এর থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে বুঝি, তাই লিখে দিল হুম আছে।



সে: শুধু নামটা বলুন এর পর আর কোনদিন টেক্সট দেব না এমনকি কলও করব না।

সে এই মুহূর্তে নাম বলবে কি করে? তার তো আসলেই প্রেমিকা নেই! অন্যকারো নাম বলে দিলে ঝামেলা হয় যদি। মিনিট দশেক পর টেক্সট এলো প্লিজ বলুন না, বললাম তো আপনাকে আর কখনই ডিস্টার্ব করব না। সামিত রিয়া নাম বলে চালিয়ে দিল। এর পরেই ঘটল বিপত্তি, আপনি এত খারাপ ? প্রেম করছেন, বাড়ি থেকে পড়াশোনা করতে পাঠিয়েছে পড়াশোনা করেন , বুঝছেন?
রাগে শরীর হিস হিস করছে, মনে হচ্ছে সামনে পেলেই খেয়ে ফেলবে তাকে।

কয়েকদিন নীরব থেকে আবার কল দিল । সামিত হ্যালো বলল কিন্তু চুপচাপ, পড়ে কেটে দিয়ে টেক্সট দিল: আমি আপনাকে ভাল বাসি। আপনি প্রেম করেন না তবুও মিথ্যে বলছেন।

সামিতঃ অন্য-কাউকে খুঁজে নাও।

সে: না,আপনাকেই দরকার আমার।



সামিতঃ তুমি কে র? বাড়ি কোথায় তোমার?

সে: বলতে পারব না।

সামিতঃ তার মানে তুই ছেলে, এক থাপ্পড়ে কান ফাটিয়ে ফেলব ফাজিল জানি কোথাকার...

সে: ওমা আপনি কানের ডাক্তারের সাথে কন্টাক্ট করেছেন নাকি?
সামিতঃ মানে?

সে: মানে হল কান ফাটালে কানের ডাক্তার কিছু মাল্লু কামাবে আর আপনিও কমিশন পাবেন!

সামিত একটু বেশিই রেগে গেল, কি করবে বুঝতে পারছে । ওর মোবাইলে কল ব্লক করা গেলেও টেক্সট এর টা নেই।

সামিত টেক্সট এর উত্তর দেয়া বন্ধ করে দিল। শুধু পড়েই ডিলিট।

প্রায় চারদিন পর একটা টেক্সট উত্তর দেয়ার মত: আপনি কোথায়? প্লিজ বলুন,দেখা করব !!

সামিত ক্যাম্পাসে আড্ডা দিচ্ছিল তাই লিখল: ক্যাম্পাস এ । যেই হোক এসে পরিচয় দিলেই মাইর শুরু করবে বলে সবাই লাইব্রেরীর সামনে বসে রইল। মিনিট বিশেক পর বন্ধুদের মধ্যে বসে থাকা সামিতকে একটা মেয়ে এসে হাত ধরে নিয়ে গেল। বাকিরা হা হয়ে মেয়েটিকে দেখতে ছিল আর সামিত দেখছিল বন্ধুদের অভিব্যক্তি। মেয়ে আর কেউ নয় সামিত যাকে মনে মনে যাকে পছন্দ করে , এ সেই এলিনা ।

সোর্স: http://prothom-aloblog.com

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।