- আফনার কইন্যা মেরি কইরতো রাজি হইসে সাব !
- কি? কি কইলি? আবার ক! কানের কাছে আইয়া ক!
- আফনার ক ই ন্যা মেরি কইরতে রাজি !
- শুকুর আলহামদুলিল্লাহ! আল্লাহ এতোদিন পর মুখ তুইল্লা তাকাইসে ।
- হ সাব!
- হ হ কি? এবার ঘটক ডাকো। খারাইয়া থাইকো না কইলাম, দৌড়াও। আর মিষ্টির ওর্ডার দিয়া আইবা। লাল টকটকা মিষ্টি।
শুধুই রস ঝড়বে আহ!
- সাব । কতা আসে ...
- কি কতা? জলদি কও।
- হেয় আফনার ফছন্দে মেরি করবে না।
- তো কার পছন্দে মেরি করবে? তোমার পছন্দে?
- না না সাব।
- তাইলে কি তারে বাশ গাছের সাথে মেরি দিবো?
- না না সাব।
হেয় কাওরে ফছন্দ করে। ওরে মেরি করপে ।
- কারে? পোলাডা কেডা?
- হাফ-প্রিতি ।
- হাফ-প্রিতি?
- হয়, হাফ-প্রিতি।
- তুই আমার সাথে মশকারী করস? প্রিতি মাইয়াগো নাম আমি জানি না? তুই আমার বংশ চিনোস বেয়াদপ? তোর বাপের জন্মের আগের থেইকা ঘরে টিবি আসে।
প্রিতি জিন্দার ছবি দেহি নাই মনে করচ্ছোস তুই?
- না না সাব। এভা ওই প্রিতি-জিন্দা না। এভা হাফ-প্রিতি , হাফ প্রিতি।
- হাফ মানে কি আমি জানিনা মনে করসোস? হাফ মানে আদা। এক আঙ্গুলের আদা।
বুঝছোস?
- বুজচ্ছি সাব। কিন্তু এইটা হাফ-প্রিতি। আপনার কইন্যা নিজের মুখে কইসে।
- কি কইসে?
- হাফ-প্রিতি।
- পোলা করেটা কি? ঘাস কাটে? না গু খায় ?
- না।
কুতি কুতি তাকা আতে। কেলে কেলে তাকা। অনেক তাকা।
- খেলে?
- হয় কেলে ,কেলে।
- কি খেলে?
- ক্কি কত কেলে।
- তুই কস টা কি? আঁতুড়িরে ডাইকা পাডা, আমি ওর মুখেরত্তে হুনুম।
আঁতুড়ি তখন আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে নিজেকে ঠিক করে নিচ্ছে । চোখে কাজল দিয়েছে লম্বা করে । চুলগুলো খুলে রেখেছে। চুলের উপর এক দু বাতাসেই ছেলেদের পাগল হওয়ার হুইসেল বাজে।
ঠোটে খুব হালকা করে লিপিস্টিক দিয়েছে, ঘন ভরাট করে দেয় গার্মেন্টের মেয়েরা। সে মোটেও গার্মেন্টস এর মেয়ে নয়। তাই হালকা করে দিয়েছে । টাইট টি শার্ট আর জিন্সে তাকে চমৎকার মানিয়েছে। একটু আগে ফেসবুকে একটা ছবিও দিয়েছে।
ক্রেপশন ছিলো, " আমার মাঝে নেইতো আমি, হারিয়ে গেছি তোমাদের মাঝে । আমি কি কিউট না? " । সবাই ছবিটা দেখে খুব সুন্দর বলেছে। একজন তো গাড়ি নিয়ে বাড়ির নিচে দাঁড়িয়ে গেছে।
হাফিজ তখন আঁতুড়ির দরজার সামনে এসে দাড়ায়।
চিৎকার দিয়ে বলে," আফা আফা! সাবে ডাকে। জলদি আহেন " । আঁতুড়ি রেগে যায়। রেগে মেগে খুব সুক্ষ মেকাপ নষ্ট হয়ে যায়। হাফিজের দিকে জল্লাদের মতো তাকিয়ে বলে, তোমাকে না বলেছি আফা বলবে না? বলবে আপা আপা! বুঝেছো?
যে বুজ্জি আপফা।
হাফিজ ঠিক হওয়ার নয়। আঁতুড়ি আবার মেকাপ নিয়ে রুম থেকে বেড়িয়ে জিয়া সাহেবের সামনে আসেন।
- ডেকেছিলে বাবা?
- হ ডাকসি। আতুড়ি তুই বলে মেরি করবি ?
- বলেছিলা আমাকে আতুড়ি ডাকবে না? বলবে মেহজাবীন ,মেহজাবীন। আতুড়ি না।
- ঠিকাসে মা। মেরি করবি কারে?
- আফ্রিদিকে।
- এডা কে? বেতন পায় কতো? কি কাম করে? ঢাকায় বাড়ি কয়ডা ওর?
- অনেক টাকা ওর। ও ক্রিকেটার। ক্রিকেট খেলে?
- আমাগো পাড়ার মাডে খেলে পোলায়?
- না না বাবা।
ও পাকিস্তানের খেলোয়ার। আফ্রিদি। ওকে দেখতেই তো স্টেডিয়ামে যাচ্ছি। এই দেখো পোষ্টার লিখে নিয়ে গেছি, " মেরি মি আফ্রিদি "
জিয়া সাহেব চেয়ারে একটু ঠিক করে বসলেন। মুখে একটু হাসি নিয়ে বললেন," মা বয় তুই দুই মিনিট " ।
মেহজাবীন বসে পরে। জিয়া সাহেব চিৎকার দিয়ে হাফিজকে ডাকেন।
- ওইইইইই হাফেজ্জজ্জজ ...
- যে সাব ।
- জুতা খোল!
- যে সাব?
- জুতা খোল কইলাম, আঁতুড়িরে পিডা। ওরে পিডানো জায়েজ আসে।
ওর মেরি আমি করাবো না। তুই আগে ওরে জুতা দিয়া খেইচ্চা মার। চোরের মতো মার।
হাফিজ হতভম্বের মতো দাঁড়িয়ে আছে। মেহজাবীন দৌড়ে বাসা থেকে পালিয়ে গেছে।
নিচে দাঁড়ানো গাড়িতে চড়ে পালিয়েছে। গাড়ি নিয়ে দাঁড়ানো ছেলেটা খুব খুশি হয়েছে। সে ভেবেছে মেহজাবীন তার জন্য দৌড়ে এসেছে। কিন্তু মেহজাবীন স্মার্ট মেয়ে। সে তাকে সত্য ঘটনা বলবে না।
জিয়া সাহেব এখনো ক্ষেপে আছেন। যে দেশের জন্য দু লক্ষ মা বোন ধর্ষিত হয়েছে ইজ্জত দিয়েছে ,সে দেশের মেয়ে হয়ে আঁতুড়ি কিভাবে মেরি মি আফ্রিদি লিখতে জানে? তিনি আতুড়িকে পড়ালেখা করিয়েছেন কেনো? এই পোস্টার লেখার জন্য? জিয়া সাহেব জানেন না।
মেহজাবীন বাসা থেকে জুতার বারি খেতে খেতে বেঁচেছে । সে এখন স্টেডিয়ামের পথে। আর কিছুক্ষন পরেই খেলা শুরু হবে।
মেহজাবীনকে টিভিতে দেখাবে ,আর সে চিৎকার করে পোস্টার উচিয়ে ফিগারটা নাচিয়ে বলবে, " মেরি মি আফ্রিদি। মেরি মি, মেরি মি, মেরি মি ,ফা......... "
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।