আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আসুন ফিলিস্তিন দেশটি সম্পর্কে জানি



ভূমধ্যসাগরের পূর্বে ১০,৪২৯ বর্গমাইলব্যাপী ফিলিস্তিন দেশটি ছিল অটোমান খেলাফতের অধীন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধে যারা ছিল বৃটেন বিরোধী জোটে৷ তখন যুদ্ধ জয়ে ফিলিস্তিনদের সহযোগিতা পাওয়ার আশায় ১৯১৭ সালে বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী লর্ড বেলফোর যুদ্ধে জয়ী হলে এই ভূমিতে একটি স্বাধীন রাষ্ট্র হবে বলে আশ্বাস দেন। প্রকৃতপক্ষে ফিলিস্তিনিদের প্রতি অবিচারের জন্য সারাবিশ্ববাসীই কোন না কোনভাবে কমবেশী দায়ী, যদিও মূল অপরাধী জায়নিস্টরা, ব্রিটিশ ওপনিবেশবাদীরা এবং আরব রাজারা।

১৯০৫ থেকে ১৯১৪ সাল পর্যন্ত ফিলিস্তিনে ইহুদীদের সংখ্যা ছিল মাত্র কয়েক হাজার। কিন্তু ১৯১৪ সাল থেকে প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে ১৯১৮ সাল পর্যন্ত বৃটিশদের সহযোগিতায় ফিলিস্তিনে ইহুদীদের সংখ্যা ২০ হাজারে উন্নীত হয়। এবং ১৯৪৮ সালে সেখানে ইহুদীদের সংখ্যা ৬ লাখে উন্নীত হয়।

বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ এবং জনগন পূর্ব জেরুজালেমকে ফিলিস্তিনিদের অধিকার মনে করে, শুধু ইজরায়েল, যুক্তরাষ্ঠ্র এবং মাঝে মাঝে কিছু ইইউ ডিপ্লোমেটরা পূর্ব জেরুজালেমের উপর ফিলিস্তিনি সার্বভৌমত্ব মানতে রাজি না।

ফিলিস্তিন প্রেসিডেন্ট মাহমুদ আব্বাস জাতিসঙ্ঘে সদস্যপদের জন্য আনুষ্ঠানিক আবেদন জানিয়েছিলেন। সাধারণ পরিষদের বার্ষিক অধিবেশনে তিনি এ উপলক্ষে গুরুত্বপূর্ণ ভাষণ দেন। তবে তখন তার আবেদনে বিশ্বের প্রভাবশালী দেশগুলো কর্ণপাত করেনি। অতীতে ফিলিস্তিনি শহর রামাল্লায় নারী ব্যবসায়ীর সংখ্যা ছিল একেবারেই হাতেগোনা।

অথচ এখন নারীরা এ শহরে ফুলের দোকান, ফলের দোকান এবং খাবারের দোকান ছাড়াও ক্যাফেটেরিয়ার মতো সৃজনশীল ব্যবসায় জড়িয়ে পড়েছেন। এ শহরে প্রত্যেক নারীই দক্ষতার সঙ্গে তাদের প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। ফিলিস্তিনে অনেক পয়গম্বরের আগমন ঘটেছিল এবং অনেক বৃহৎ সভ্যতার জন্মস্থান। তিন মহাদেশের যোগাযোগ পথগুলোর মধ্যস্থলে এর অবস্থান। ফিলিস্তিন মিশর, সিরিয়া, মেসোপটেমিয়া ও এশিয়া মাইনরের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক প্রভাবের অঞ্চলে পরিণত হয়েছিল।



ফিলিস্তিনের অবস্থান এশিয়া মহাদেশের একেবারে পশ্চিম প্রান্তে। উত্তরে লেবানন ও সিরিয়া, পশ্চিমে ভূমধ্যসাগর, দক্ষিণে আকাবা উপসাগর ও মিশরীয় উপদ্বীপ এবং পূর্বে জর্ডান রাজ্য দ্বারা বেষ্টিত। গ্রীষ্ম শুষ্ক উষ্ণ। শীতকাল শীত ও বর্ষণ পবন। শীতকালে নাতিশীতোষ্ণ এবং গ্রীষ্মকালে শুষ্ক গরম।

ওয়েষ্ট ব্যাংক তথা পশ্চিম তীরে গ্রীষ্মকালে গড় তাপমাত্রা ২৮ ডিগ্রী সেলসিয়াস ও শীতকালে গড় ১২ ডিগ্রী সেলসিয়াস। ফিলিস্তিনি সেন্ট্রাল ব্যুরো অব স্ট্যাটিস্টিকসের পরিসংখ্যানের তথ্যমতে, ১৯৯৫ সালে কর্মক্ষেত্রে এখানকার নারীর অংশগ্রহণের হার ছিল ১১ দশমিক ৫ শতাংশ। কিন্তু ১৭ বছরের ব্যবধানে বেড়ে বর্তমানে তা পৌঁছে গেছে ১৬ দশমিক ৭ শতাংশে। ফিলিস্তিনে তিন প্রকারের মুদ্রার প্রচলন আছে। জর্ডানের দিনার, যুক্তরাষ্ট্রের ডলার ও সিরায়ীলি শেকেল।

সরকারী ভাষা আরবী। তবে বেশীর ভাগ ইংরেজী বলে, বেশ কিছু হির্রু ও যৎ সামান্য ফরাসী এমনকি ল্যাটিন। ঐতিহাসিক ক্রমে জনগণ কে ফিলিস্তিনি বলা হয়। যদিও ধর্মগত ভাবে বিভিন্ন ধর্ম প্রচলিত।

ফিলিস্তিনের গুরুত্বপূর্ণ শহর রামাল্লাহ ফিলিস্তিনের গোলযোগপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে পর্যটনের সম্ভাবনা আর সব দেশের তুলনায় কম।

যদিও ধর্মীয় কারণে এর যথেষ্ট গুরুত্ব আছে বৈকি। তথাপিও দেখা গেছে বার্ষিক গড়ে প্রায় ৫২০০০০ পর্যটক আনা গোনা করে থাকে। এর মধ্যে গাজা শহরে ৪১০০০ ও খান ইউনিস শহরে ১৮০০০। এখন ফিলিস্তিনি মন্ত্রিসভার এক-চতুর্থাংশই নারী নেতৃত্বে পরিচালিত।

প্রচীনকালে কেনান নামে পরিচিত ফিলিস্তিন ভূ-খন্ডের আয়তন ২৫০০ বর্গ কিলোমিটার।

ফিলিস্তিন একটি উর্বর ও ভারসাম্যপূর্ণ আবহাওয়ার অধিকারী দেশ। এলাকাটি হযরত মূসা (আঃ) ও ঈসা (আঃ)-এর মত মহান নবীদের আর্বিভাবের এবং হযরত ইবরাহীমের (আঃ) চলাচল ও বসবাসের স্থান ছিল। বায়তুল মুকাদ্দাস ফিলিস্তিনের একটি গুরুত্বপূর্ণ এলাকা। শহরটি পূর্বদিক থেকে যায়ন নামক পাহাড় ও পশ্চিম দিক থেকে যয়তুন নামক পাহাড় দিয়ে ঘেরা। যায়ন তথা রৌদ্রোজ্জ্বল পাহাড়ের নাম তৌরাত ও ইঞ্জিলেও বর্ণিত হয়েছে।



ব্রাজিল দক্ষিণ আমেরিকার বৃহৎ দেশ যে কিনা সর্বপ্রথম ১৯৬৭ সালের সীমানা অনুযায়ী ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দিয়েছিল। ব্রাজিলের পর আর্জেন্টিনা, বলিভিয়া, চিলি এভং উরুগুয়ে সরকারও ঘোষণা করেছিল স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট গঠনকে তারা সমর্থন দেবে। ল্যাটিন আমেরিকার এইসব দেশের সরকারগুলোর ঘোষণায় ভীষণ খুশির একটা নন্দিত তরঙ্গ বয়ে গিয়েছিল ফিলিস্তিন ভূখণ্ডে। পক্ষান্তরে খুব স্বাভাবিকভাবেই ইহুদিবাদী ইসরাইলী কর্মকর্তাদের মাঝে দেখা দিয়েছিল মারাত্মক উদ্বেগ ও আশঙ্কা।

ইহুদীবাদী ইসরাইল ১৯৪৮ সাল থেকে ফিলিস্তিনকে দখল করে রেখেছে।

তাদের এ অবৈধ দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে যারাই প্রতিবাদ জানিয়েছে তাদেরকে হত্যা কিংবা কারাগারে বন্দী করা হয়েছে এখনও তা অব্যাহত রয়েছে। বিষ্ময়কর হলেও সত্য যে, ইসরাইলী সেনাদের হামলা থেকে নিষ্পাপ শিশুরাও রেহাই পায় না।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।