গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার বোয়ালি ইউনিয়নের বাথানিয়াচালা (বটতলা) এলাকায় গতকাল রাতের কোন এক সময় সার্বজনীন দূর্গামন্দিরে থাকা সকল মূর্তি ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা।
এ সময় মুর্তিগুলোর শ্মীরচ্ছেদ করে মন্দিরের আশপাশের ধান ক্ষেতে ফেলে রাখে এবং মন্দিরে একটি চিরকোট রেখে গেছেন দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।
গাজীপুরের পুলিশ সুপার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আজ বিকেল সাড়ে ৪টায় ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
মন্দির পরিচালনা কমিটির সদস্য ডা. সুমন্ত্র চন্দ্র সরকার জানান, দুর্বৃত্তরা ওই এলাকার সার্বজনীন দূর্গা মন্দিরে থাকা দূর্গা, লহ্মী, স্বরস্বতী, কার্তিক, গণেশ, অসুর, সিংহ, মহিষসহ বিভিন্ন মূর্তি ভাংচুর করে।
এ সময় দুর্বৃত্তরা মুর্তিগুলোর মাথা, হাত, পা, ভেঙ্গে পালিয়ে যায়। মন্দির থেকে একটি (বুড়ি মা) মূর্তি নিয়ে পার্শ্ববর্তী ধান ক্ষেতে ফেলে দেয়। ভাংচুরের পর হিন্দুসম্প্রদায়কে ভারতে চলে যাওয়ার জন্য দুর্বৃত্তরা মন্দিরের ভিতরে মুর্তির পাশে একটি চিরকোট রেখে যায়। চিরকোটে লিখা রয়েছে (Stop Statue worship, next here worship. We will cast bomp or all of you accept (islam), else go to India. Ordered by : একনিষ্ঠ মুসলিম)।
এব্যাপারে কালিয়াকৈর থানায় একটি মামলা দায়ে করা হয়েছে।
মন্দির পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুর্য মোহন সরকার জানান, গতকাল রাত সাড়ে ৭ টার দিকে আমরা মুর্তিগুলো ভাল রেখে বাসায় গিয়েছি। আজ ভোরে মন্দিরে গিয়ে আমরা মুর্তিগুলো ভাংচুর দেখতে পাই। পরে থানায় এসে মামলা দায়ের করেছি।
উল্লেখ্য, ১০ ফেব্রুয়ারি রাতে একই ইউনিয়নের গাছবাড়ি এলাকায় শ্রী নেপাল চন্দ্র বর্মনের বাড়িতে পারিবারিক লহ্মী নারায়ন মন্দিরে রক্ষিত ২টি প্রতিমা ভাংচুর করেছে দুর্বৃত্তরা এবং একই দিন রাতে পার্শ্ববর্তী শ্রী দীলিপ মাষ্টারের বাড়িতে গিয়ে দুর্বৃত্তরা মন্দিরে প্রবেশ করতে না পেরে মন্দিরের পাশে রোপনকৃত ১টি তুলশী গাছ উঠিয়ে ফেলে। দুই বাড়ীর দরজার সামনে একই ধরনের চিরকোট লিখে রেখে যায় এবং গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে উপজেলার চাপাইর এলাকায় একটি মন্দিরে আগুন ধরিয়ে দেয় দর্বৃত্তরা।
কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মুহাম্মদ ওমর ফারুক জানান, এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা মাত্র। কে বা কারা জড়িত তা জানা যায়নি। এ ঘটনায় মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক সুর্যমহন সরকার একটি মামলা দায়ের করেছেন। তবে চাপাইর এলাকায় মন্দিরে আগুন দেয়ার ব্যাপারে তিনি অবগত নন বলে জানান।
কালিয়াকৈরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. হাবিবুর রহমান জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি।
এব্যপারের জেলা প্রশাসককে অবহিত করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মন্দিরসহ সকল মন্দিরে অতিরিক্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে। আশা করছি যত দ্রুত সম্ভব জড়িতদেরকে চিহ্নিত করে শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।