লিখতে ভালো লাগে তাই লিখি। নতুন কিছু ক্রিয়েট করতে সব সময় ভালো লাগে। নতুন নতুন "গল্প" লিখতে বেশী ভালো লাগে। ।
বিষণ্ণ মন! অলস দুপুর, সাড়া শব্দহীন এক শান্ত নগরী।
পাখিদের কিচির মিচির মুক্ত নির্জনতার ভিড়ে চারিদিকে কোলাহল মুক্ত এক নিস্তব্দ পরিবেশে মন্টুর টং এর দোকানে বসে চায়ের পেয়ালা হাতে নিশ্চুপ মনে নির্বাক দুটি চোখে চেয়ে আছে "অরণ্য" চেনা পথটার পানে। অনেকবারই "রিতুর" কোমল হাতটি ধরে এ পথ দিয়ে আসা যাওয়া হয়েছে অরণ্যের। দীর্ঘ ছয় মাস ধরে দুজনের প্রেম চলছে বেশ ভালোই।
গত দু'দিন আগে গ্রামের বাড়িতে গেছে রিতু। গ্রামে বোধহয় নেটওয়ার্কের সমস্যা আছে! এজন্য ফোনটা দুদিন যাবত বন্ধ পাচ্ছে অরণ্য।
মনে সংশয়, হারানোর ভয়! ভঙ্গা পালঙ্কে ঘুমিয়ে আলিশান বাংলোয় রাত কাটানোর স্বপ্ন দেখা আদৌ উচিৎ নয়! চা শেষ হতে হতে একটা সিগারেট জালিয়ে নিলো অরণ্য। জ্বলন্ত সিগারেট ঠোঁটের সাথে চাপিয়ে ভাবনার অতল সমুদ্রে নাও ভাসালো।
ভাবছে,
দিন মুজুর করে খেটে খাওয়া খুবই সাধারন একজন মানুষের ছেলে হয়ে,
সোনায় মোড়ানো দামী গাড়িতে চড়া, রাজকীয় প্রাসাদে বসবাস করা
"স্বপ্ন কন্যার" সাথে প্রেম করা মোটেও মানানসই না আমার।
স্কুল জীবনের খুবই ঘনিষ্ঠ স্যার "রতন লাল" যিনি সব থেকে বেশী ভালোবাসতো অরণ্যকে!
তাঁরই স্কুলের দশম শ্রেণীর ছাত্রী এই রিতু। গত সাত মাস আগে ওর প্রাইভেট টিউটরের দায়িত্বটা অরণ্যের হাতে তুলে দেন রতন স্যার।
সামনে রিতুর এস, এস, সি পরিক্ষা! আর এই মুহূর্তে মেয়েটা এখনো ঘুরে বেড়াচ্ছে।
জ্বলন্ত সিগারেট ঠোঁটে ঝুলছে অরণ্যর। হাতের চা অর্ধেকটা অনেক আগেই ঠাণ্ডা হয়ে গেছে। সিগারেটের ঘোলাটে ধোঁয়ায় অতীতের কিছু প্রতিচ্ছবি ভেসে উঠছে চোখের সামনে। রিতুকে পড়ানোর প্রথম দিন থেকেই মনের মধ্যে সন্দেহের আচ লেগে ছিলো অরণ্যর।
যা আস্তে আস্তে স্পষ্ট হতে থাকলো। মেয়েটা পড়া ফাঁকি দেয়াতে শুধু খ্যান্ত ছিলোনা! আড় চোখে চেয়ে থাকা, অংকের বদলে রাফ খাতায় বড় বড় আঁকারে ভালোবাসার প্রতিবিম্ব আঁকানো! আর তাতে অরণ্যর নাম লেখায় যেন ব্যাস্ত' থাকতো সবসময়। ভাবগতি খারাপ দেখে কয়েকবার কেটে পড়তে চেয়েছিলো অরণ্য।
কিন্ত কাজ হলো কোই? বাঘীনি মেয়েটা তো পিছু ছাড়লোই না কখনো অরণ্যর। তিন/চারবার করে বাসা থেকে একেবারে ধরেই আনলো! বলতে গেলে।
অরণ্য জানেনা এই নিছক ভালোবাসার শেষ কোথায়?? সিগারেট টা প্রায় হাতেই পুড়ে গেলো।
বিল মিটিয়ে অরণ্য উঠে পড়লো। সেই চেনা পথটা ধরেই এগোচ্ছে। সামনে রিতুদের বাসা। আজো মনের ভুলে পড়ানোর উদ্দেশ্য চলে এসেছিলো অরণ্য।
মেয়েটা খুব জেদি! হাতের মোবাইলটা ওর দেওয়া। "টাইম টু টাইম" ফোন না দিলে আবার বাড়ী গিয়ে বসে থাকে। সামনে কড়ুই গাছটা মাথা নুইয়ে বসে আছে। ঠিক যেনো অরণ্যর মতন। অরণ্যর বাবার শরীর টা ভালো না।
মাস শেষে কিছু টাকা পাচ্ছে এটাও বা কম কিসের!? রৌদ্রের তেজটা আজ একটু বেশীই! মেঘেরা দল বেঁধেছে। বাতাসেও কেমন উদাসীন ভাব! অরণ্য পথ চলেছে...
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।