আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ধারণা, দেশ ছাড়তে পারেননি পলাতক দুই জঙ্গি নেতা বোমারু মিজান ও সালেহীন ওরফে সালাউদ্দিন। তারা দেশের কোনো অঞ্চলে আত্দগোপনে রয়েছেন। বিশেষ করে বগুড়া, রাজশাহী, চাঁপাইনবাবগঞ্জ এবং নওগাঁ জেলায় তাদের সম্ভাব্য অবস্থান মনে করে সেখানে চিরুনি অভিযান চলছে। র্যাব, পুলিশ ও ডিবিসহ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিট এসব অঞ্চলে কাজ করছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পলাতক দুই জঙ্গি নেতা শুধু নয়, অর্ধ শতাধিক দুর্ধর্ষ জঙ্গির তালিকা নিয়ে তারা মাঠে নেমেছেন।
এদের মধ্যে ১০ জন রয়েছেন যারা জঙ্গি ছিনতাইয়ের ঘটনায় সরাসরি জড়িত। এদিকে পাঁচ মাস আগে চট্টগ্রাম কারাগার থেকে যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত জেএমবির শূরা সদস্য বোমারু মিজানকে কাশিমপুর কারাগারে স্থানান্তর করার বিষয়টি তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্ত সংশ্লিষ্টদের ধারণা, ছিনতাইয়ের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত হওয়ার পরই বোমারু মিজানকে কাশিমপুর নেওয়া হয়। চট্টগ্রাম থেকে কাশিমপুর কারাগারে আসার জন্যই চট্টগ্রামে নানা অজুহাতে বোমারু মিজান ঝামেলা সৃষ্টি করেছেন কি-না তা খতিয়ে দেখছেন গোয়েন্দারা। সূত্র জানায়, সাধারণ বন্দীদের কারাগারে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎব্যবস্থা থাকলেও হাই সিকিউরিটি জেলে তা ছিল না।
প্রতি সন্ধ্যায় অন্তত দুবার বিদ্যুৎ থাকে না। প্রতিবার দেড় থেকে দুই ঘণ্টা পর্যন্ত হাই সিকিউরিটি কারাগার অন্ধকারে নিমজ্জিত থাকে। হাই সিকিউরিটির মতো স্পর্শকাতর একটি কারাগারে বিদ্যুৎ না থাকার বিষয়টিও তদন্তের আওতায় নেওয়া হয়েছে। ২২ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা থানার সাইনবোর্ড এলাকায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জেএমবির দুর্ধর্ষ জঙ্গি সালাহউদ্দিন ওরফে সালেহীন ওরফে সোহেল, মিজান ওরফে বোমা মিজান, যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত রাকিব ওরফে হাফিজ মাহমুদ ওরফে রাসেলকে পুলিশের ওপর হামলা করে ছিনিয়ে নেয় জঙ্গিরা। এ ঘটনায় এক পুলিশ কনস্টেবল নিহত হন।
অন্যদিকে, ঘটনার পরদিন ২৩ ফেব্রুয়ারি পুলিশের সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হন জঙ্গি রাকিব। ঢাকা রেঞ্জ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি শফিকুল ইসলাম (ক্রাইম) বলেন, অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শীঘ্রই সফলতা আসবে বলে আমরা আশাবাদী। পুলিশ সূত্র জানায়, রিমান্ডে থাকা ছিনতায়ে জড়িত দুই জঙ্গি জাকারিয়া ও রায়হান ওরফে রাসেলের কাছ থেকে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পেয়েছে পুলিশ। যারা সরাসরি ছিনতাই ও উত্তরাঞ্চলে সংগঠন সংগঠিত করার কাজে জড়িত ছিলেন, তাদের নাম ফাঁস করেছেন তারা।
এদের মধ্যে সবুজ, সাজেদুর, মানিক, মাজিদ, ফারুক, শফিক, মিলন, কফিল উদ্দিন ওরফে রব মুন্সি, আজিবুল ইসলাম ওরফে আজিজুল, শাহানশাহ, হামিদুর রহমান, বজলুর রহমান, বাবর, শরিফ, খাইরুল ইসলাম, নাদিম, ময়েজ উদ্দিন, মহব্বত ওরফে তিতুমীর ওরফে নাহিদ এবং ওয়ালিউল্লাহ ওরফে হামিদ অন্যতম। অতিরিক্ত ডিআইজি শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, অভিযানে আমাদের অগ্রগতি হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ময়মনসিংহ থেকে গাজীপুর টাঙ্গাইলের দিকে এসেছে। সেহেতু আমরা মনে করছি, তারা যদি টাঙ্গাইল থেকে বেরিয়ে যায় তবে উত্তরাঞ্চলের দিকেই যাবে।
আর এ কারণে এদিকটার বিবেচনায় আমরা ওই এলাকাতে অভিযান জোরদার করেছি। তিনি বলেন, সম্ভাব্য সব জায়গাতেই হানা দেওয়া হচ্ছে। এ ছাড়াও কিছু চিহ্নিত জঙ্গি ধরতেও আমরা অভিযান পরিচালনা করছি।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।