নারায়ণগঞ্জে অপহরণের ৩৫ দিন পর স্কুলছাত্র রফিকুল ও নওগাঁয় অপহরণের ২৬ দিন পর কলেজছাত্র সোহেল রানার লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। অপহরণের দায়ে সাতজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নারায়ণগঞ্জ ও সোনারগাঁও প্রতিনিধি জানান, নারায়ণগঞ্জে দীর্ঘ ৩৫ দিন ধরে মুক্তিপণের দাবিতে অপহ্নত স্কুলছাত্র রফিকুল ইসলাম ইমনের (১৪) বস্তাবন্দী গলিত লাশ একটি ডোবা থেকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২৯ জানুয়ারি রাত সাড়ে ৮টায় নিজ বাড়ি থেকে অপহরণ হয় ইমন। এর পর থেকেই মোবাইল ফোনে অপহরণকারীরা ইমনের পরিবারের কাছ থেকে কখনো ২ লাখ আবার কখনো ১০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে আসছিল।
বুধবার গভীর রাতে মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে তিন অপহরণকারীকে গ্রেফতারের পর তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী বন্দরের কামতাল মালিভিটা এলাকার একটি ডোবা থেকে ইমনের বস্তাবন্দী লাশ উদ্ধার করা হয়। পরে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। নিহত স্কুলছাত্র রফিকুল ইসলাম ইমন উপজেলার ধামগড় ইউপির কামতাল মালিভিটা গ্রামের দুবাই প্রবাসী নুরা মিয়ার ছেলে ও মোগড়াপাড়া উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণীর ছাত্র। পুলিশ জানায়, ২৯ জানুয়ারি রাত ৮টায় ইমন বাড়ির বাইরে এলে তার চাচাতো ভাই আল আমিন অটোবাইকে ইমনকে বেড়ানোর কথা বলে অপহরণ করে। কিছুক্ষণ বেড়ানোর পরেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কৌশলে ইমনকে এক মুরগির ফার্মে নিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে।
পরে লাশ বস্তায় ভরে ডোবায় ফেলে দেয়।
জানা যায়, একই উপজেলার মাদ্রাসার নৈশপ্রহরী নূরুল ইসলামের ছেলে জীবন, ছোবান মিয়ার ছেলে সাইদুল ও ইমনের আপন চাচাতো ভাই অটোবাইক চালক আল-আমিন টাকার লোভে দুবাই প্রবাসী নুরা মিয়ার ছেলে ইমনকে তুলে নিয়ে হত্যা করে। বন্দর থানার ওসি আকতার মোর্শেদ জানান, মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে নিহত স্কুলছাত্র ইমনের আপন চাচাতো ভাই আলামিন, শাহজাহান আলী ও সাইদুর রহমান নামে তিন অপহরণকারীকে আটক করা হয়। তাদের দেওয়া তথ্যমতেই ডোবা থেকে ইমনের লাশটি উদ্ধার করা হয়।
নওগাঁ প্রতিনিধি জানান, নওগাঁর মান্দায় নিখোঁজ হওয়ার ২৬ দিন পর সোহেল রানা নামে এক কলেজ ছাত্রের লাশ মাটির নিচে পুঁতে রাখা অবস্থায় উদ্ধার করেছে পুলিশ।
এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার দায়ে তার চার সহপাঠীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মান্দা থানার ওসি আবদুল্লা হেল বাকী জানান, উপজেলার কামারকুড়ি গ্রামের জনাব আলীর ছেলে স্থানীয় আলহেরা কৃষি কলেজের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র সোহেল রানাকে মোবাইল ফোনে কৌশলে গত ৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় ডেকে নিয়ে যায় কে বা কারা। তারপর থেকে তাকে আর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। এ ঘটনায় ১২ ফেব্রুয়ারি তার ভগি্নপতি থানায় একটি জিডি করেন। পরে মোবাইল ফোনে সোহেল রানার পিতার কাছে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
গত ১ মার্চ মান্দা থানায় তার পিতা জনাব আলী একটি মামলা করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই শহিদুল ইসলাম মোবাইল ফোন ট্র্যাকিং করে গত বুধবার রাতে সোহেল রানার চার সহপাঠীকে গ্রেফতার করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো- উপজেলার উত্তর পারইল গ্রামের মোয়াজ্জেম হোসেনের ছেলে ও নওগাঁ আস্তান মোল্লা কলেজের ছাত্র মোক্তাদুর রহমান, তার জমজ ভাই একই কলেজের ছাত্র মোস্তফা কামাল, একই গ্রামের আবুল হোসেন সরদারের ছেলে ও মান্দা মোমিন শাহানা কলেজের ছাত্র সাজেদুর রহমান সাজু এবং শ্রীরামপুর গ্রামের হবিবর রহমানের ছেলে সাতবাড়িয়া বিএম কলেজের ছাত্র সাজেদুর রহমান সাজু। তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় উপজেলার নীলকুঠি এলাকা থেকে মাটির নিচে পুঁতে রাখা সোহেল রানার লাশ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ লাশ উদ্ধারের পর ময়নাতদন্তের জন্য নওগাঁ সদর হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছে।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।