রোববার সব ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীদের কাছে পাঠানো এক সার্কুলারে এ নির্দেশনা দেয় আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থাটি।
সার্কুলারে বলা হয়, দেশের দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত জনগোষ্ঠীকে ব্যাংকিং খাতের আওতায় এনে তাদের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নের পদক্ষেপ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। এরই ধারাবাহিকতায় বস্তি, রাস্তাঘাট, ট্রেন স্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, লঞ্চঘাট ও ফুটপাথে বসবাসরত কর্মজীবী শিশু কিশোরদের ব্যাংকিং খাতের আওতায় নিয়ে আসা পরিকল্পনা করা হয়েছে।
“এসব পথশিশু ও ক্ষুদ্র কর্মজীবী শিশুদের ভবিষ্যতে উন্নত কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও তাদেরকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় আনার লক্ষ্যে তাদের নামে ১০ (দশ) টাকার বিনিময়ে ব্যাংক হিসাব খোলার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। ”
যে সব এনজিও পথশিশু ও কর্মজীবী শিশু-কিশোরদের ব্যাংক হিসাব পরিচালনা করতে আগ্রহী তাদের একটি তালিকা বাংলাদেশ ব্যাংক তৈরী করবে বলে সার্কুলারে জানানো হয়।
“এ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবার জন্য আগ্রহী এনজিওগুলোকে কোন তফসিলী ব্যাংকের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রিন ব্যাংকিং অ্যান্ড সিএসআর ডিপার্টমেন্টে আবেদন করার পরামর্শ দেয়া যাচ্ছে। ”
এ তালিকাভুক্তির ক্ষেত্রে এনজিওগুলোর সুনাম, বিশ্বাসযোগ্যতা, অভিজ্ঞতা, অবকাঠামোগত সুবিধা ইত্যাদি বিবেচনা করা হবে বলে সার্কুলারে উল্লেখ করা হয়েছে।
পথশিশু ও কর্মজীবী শিশু-কিশোরদের পক্ষে হিসাব পরিচালনার দায়িত্ব মনোনীত এনজিও’র দুইজন কর্মকর্তার উপর ন্যস্ত হবে। দুইজন কর্মকর্তার মধ্যে একজন হিসাব বিভাগ এবং আরেকজন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তা হবেন।
সংশ্লিষ্ট এনজিও’র পরিচালনা পর্ষদ বা ট্রাস্টি বোর্ডের অনুমোদন সাপেক্ষে কর্মজীবী শিশু-কিশোরদের ব্যাংক হিসাব পরিচালনাকারী কর্মকর্তা মনোনীত হবেন।
পথশিশু ও কর্মজীবী শিশু-কিশোরদের ব্যাংক হিসাব পরিচালনার দায়িত্ব এনজিও'র দুই কর্মকর্তার হলেও এসব হিসাবে জমা ও উত্তোলন সম্পর্কিত লেনদেনের দায়-দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট এনজিওকেই বহন করতে হবে। এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক এবং এনজিও একটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি করবে।
পথশিশু ও কর্মজীবী শিশু-কিশোরদের নামে সঞ্চয়ী ব্যাংক হিসাব খোলা হবে। তাদের পক্ষে হিসাবটি পরিচালনা করবেন এনজিও প্রতিনিধিরা। হিসাব ফরম ও অর্থ জমার বইতে হিসাবধারী শিশু-কিশোরদের অনুস্বাক্ষর থাকতে হবে।
ছবি: তানভীর আহাম্মেদ
পথশিশু ও কর্মজীবী শিশু-কিশোরদের বয়স নির্ধারণের জন্য জন্ম নিবন্ধন সনদ সংগ্রহের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট এনজিও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে। এসব পথশিশু ও কর্মজীবী শিশু-কিশোরদের হিসাবের বিপরীতে 'নমিনি' প্রযোজ্য হবে না।
হিসাবধারীর বয়স আঠারো বছর পূর্ণ হবার সঙ্গে সঙ্গেই হিসাব পরিচালনাকারী এনজিও কর্মকর্তাদের দায়িত্ব শেষ হবে এবং যার নামে ব্যাংক হিসাবটি খোলা হয়েছে তিনি তা পরিচালনা করতে পারবেন।
এসব হিসাব থেকে কোন ধরনের সার্ভিস চার্জ বা ফি কাটা যাবে না বলে প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে। এছাড়া হিসাবের দৈনিক স্থিতির ভিত্তিতে সর্বোচ্চ সঞ্চয়ী আমানতের সুদের হারে বছরে দুইবার (জুন ও ডিসেম্বর মাসে) মুনাফা দেয়ার কথা বলা হয়েছে।
পথশিশু ও কর্মজীবী শিশু-কিশোরদের হিসাবসমূহের জমা ও উত্তোলনের বিবরণী প্রতি তিনমাস পরপর সংশ্লিষ্ট এনজিও’র পরিচালনা পর্ষদ বা ট্রাস্টি বোর্ডে উপস্থাপন করতে হবে এবং তা বাংলাদেশ ব্যাংকের গ্রিন ব্যাংকিং অ্যান্ড সিএসআর ডিপার্টমেন্টে জমা দিতে হবে।
এর আগে কৃষক, মুক্তিযোদ্ধা, পোশাক শ্রমিকদের দশ টাকায় ব্যাংক হিসাব খোলার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।